Logo
Logo
×

স্বাক্ষাৎকার

ঈদের স্মৃতি মনে করে কেঁদেছেন রোজেল : রোজেল

Icon

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০১৮, ০১:৫৭ পিএম

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে না পাওয়ার তীক্ষ্ম বেদনা। ঈদ মানে প্রেম ভালবাসা আর ত্যাগের অপূর্ব এক মিশ্রন। হাজারো ব্যস্ততা ভুলে প্রিয়জনদের বুকে টেনে নেওয়া। সেই শৈশবের রঙিন ঈদ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা ধুসর হয়ে উঠলেও ঈদকে ঘিরে আমাদের থাকে বাড়তি মনযোগ।

 

যান্ত্রিক এই শহরে নানান ব্যস্ততা, দ্বিধা-দ্বন্দ আর ক্ষুদ্র স্বার্থের বেড়াজালে আমরা যখন আবদ্ধ তখনই ত্যাগ,সমতা আর আনন্দের বানী নিয়ে আবারো এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আয়োজনে কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল। ঈদের পাশাপাশি আড্ডায় এসেছে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গ। হাসি কান্নার নানান স্মৃতিতে ভরপুর সেই আড্ডা যুগের চিন্তা ২৪ এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। গণতন্ত্রহীন দেশে জীবনের নিরাপত্তা ছাড়া ভাল থাকা যায় না মন্তব্য করে রোজেল বলেন,একা একা ভাল থাকা যায় না। অনেকেই মামলা হামলার কারনে ভাল নেই। আমিও ভাল ইেন। তবুও বলছি আলহামদুল্লিাহ! বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে বলেন, আমি ফুটবল পরিবারের সন্তান।

 

পরিবারের অনেকের মতোই আমি শৈশব থেকেই ফুটবল পাগল মানুষ। আর বিশ্বকাপ বললেতো কথাই নেই। এই যুদ্ধ বিগ্রহের পৃথিবীতে ফুটবল সাড়া বিশ্বে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। এটা উপভোগ করার মতো। আমাদের পরিবারের প্রায় সকলেই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। তবে বড় ছেলেটাকে নিয়ে সন্দেহ আছে!(হাসি) আমার মনে হয় সে গোপনে গোপনে অন্য কোন দলের সাপোর্ট করে। এখনো বুঝতে পারছি না, খেলা শুরু হলে বুঝা যাবে। ঈদ নিয়ে তার দৃষ্ঠিভঙ্গি জানতে চাওয়া হলে বলেন, ঈদের উপর আর কোন আনন্দ নেই। ঈদ আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। ঈদের মানসিকতা সারাবছর বজায় থাকলে এতো সংঘাত হানাহানি থাকতো না। শৈশব থেকে নারায়ণগঞ্জের নিজ বাড়িতেই ঈদ উদযাপন করেন জানিয়ে বলেন, ঈদে নেতা কর্মী আর এলাকাবাসীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা হয়। প্রতিবছর ঈদের দিন নেত্রীর(খালেদা জিয়া) সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যেতাম।

 

এবার আর সেটা হবে না। ঈদে পরিবারকে আলাদা করে সময় না দিতে পারায় পরিবারের উপর এক প্রকার অত্যাচার করা হয়। তবে এবার পরিবার নিয়ে একটা ছোট পরিকল্পনা আছে। ঈদের পর ছোট মেয়েসহ পরিবার নিয়ে মাইজভান্ডার শরীফ যাবো। ঈদের দুপুরে মায়ের হাতের খিচুড়ি ও রাতে পোলাউ মাংস সবচেয়ে পছন্দ রোজেলের। এ নিয়ে বলেন, আগে মা রান্না করতো এখন স্ত্রী রান্না করে। মায়ের হাতের খাবারটাই সবচেয়ে মজার। (আমি নিজেও রান্না করতে পারি এবং কখনো কখনো রান্না করে খাওয়াই) এ পর্যন্ত নানান হামলা মামলা ও প্রশাসনিক হয়রানীর কারনে পাঁচটি ঈদ পরিবারের বাইরে কাটাতে হয়েছে। ছেলের জন্মের পর প্রথম ঈদে পলাতক থাকতে হয়েছে জানিয়ে বলেন, মা আর পরিবার ছাড়া ঈদ কাটানোর মতো বেদনার আর কি হতে পারে? এবারে ঈদের পরিকল্পনার মধ্যে প্রতি বছরের মতো নামাজ শেষে বাবার কবর জিয়ারত করবেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পাশাপাশি ঈদের পরের আন্দোলনে সাধারণ মানুষকে যুক্ত করতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াবেন। চেষ্টা করবেন তাদের সাহস যোগাতে ও সংগঠিত করতে। ঈদের পর কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী অন্দোলনে প্রয়োজনে রক্ত দিতে প্রস্তুত বলেও জানান জেলা বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক।

 

শৈশবের ঈদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন রোজেল। ছয় বছর বয়সে বাবা হারানো এই নেতা বলেন, বাবার মৃত্যুর পর আমরা ভাই বোনেরা মায়ের কাছেই বড় হয়েছি। ছোট বেলা ঈদের আগে আমাদের চুল কাঁটানো, কিংবা চাঁদ দেখার পরপরই সকালে কোন সাবান দিয়ে গোসল করবো। কে কোন সুগন্ধি দেবো। আমাদের বড় বোন এসব ভাগ করে দিতেন। ভাই বোনেরা এসব নিয়ে কথা বলতে বলতে আর পরের দিনের পরিকল্পনা করতে করতেই রাত কেটে যেতো। সেই দিন গুলো খুব মনে পরে। বাবার স্মৃতিচারন করে বলেন, তখন আমি খুব ছোট। প্রতি ঈদে নানা বাড়িতে যেতাম। একবার আমি আর আমার বড় ভাই ঈদের দিন নতুন জামা গায়ে নানা বাড়িতে যাচ্ছি। আমার বাবা তখন আমাদের নতুন জামাগুলো শরীর থেকে খুলে নেন। (কান্না) দুজন গরীব ছেলেকে সেগুলো দিয়ে দেন। সেদিন অনেক কেঁদেছিলাম। আজ বুঝি। এখন অনেককেই আমি অনেক কিছু দিই। কিন্তু বাবাকে দেখানো হলো না। ধন্যবাদ, যুগের চিন্তার পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা। আপনাকেও ধন্যবাদ। যুগের চিন্তার পাঠকদের প্রতিও ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন