Logo
Logo
×

নগরের বাইরে

দুই কাউন্সিলরের দ্বিমুখী নীতি

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৪, ১১:১৮ পিএম

দুই কাউন্সিলরের দ্বিমুখী নীতি

 

 

# খোকন মোহসীনকে ইন্ধন দিতেছে : কাউন্সিলর রুহুল
# ব্যবসায়ীদের জন্য এধরণের রাজনীতি ভাল না : কাউন্সিলর খোকন
# ভোটার তালিকায় তারা আমার নামই রাখেনি : মোহসীন ভূইয়া

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন  গোদনাইল এলাকার চৌধুরীবাড়ী বাস ষ্ট্যান্ড ব্যবসায়ীদের সংগঠন চৌধুরী বাড়ি ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন এর নির্বাচন-২০২৪ নিয়ে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি ব্যবসায়ীদের গন্ডি পেরিয়ে সেখানে এখন রাজনীতি ঢুকে পড়ছে বলে অভিযোগ এসেছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় দুই কাউন্সিলর প্রভাব বিস্তার করছে বলেও ব্যবসায়ীদের সূত্র নিশ্চিত করেছে। একটি পক্ষ মনে করছেন কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকায় এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহসীন ভূইয়াকে ঘায়েল করার এই সুযোগ ছাড়ছেন না নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) এর ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা। 

 

অন্যদিকে মোহসীন ভূইয়ার বিপক্ষের লোকজন মনে করছেন এই দ্বন্দ্বকে উস্কে দিচ্ছেন নাসিক ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে এরই মধ্যে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনায় উভয় পক্ষই স্মরণাপন্ন হওয়ার বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেছে। একদিকে সাবেক সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও তাকে ভোটার তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মোহসীন ভূইয়া। অন্যদিকে মোহসীন ভূইয়ার বিরুদ্ধে ভোটার ও ব্যবসায়ীদের না জানিয়ে পকেট কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ করেন কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকনসহ একটি পক্ষ।

 

এই বিষয়ে মোহসীন ভূইয়া জানান, নির্বাচন বানচাল বা প্রতিহত করার বিষয়টি আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যে অভিযোগ। এই বিষয়ে আমাদের একটি রেজুলেশন করা আছে। কমিটির ১৫৬ জন সদস্য মিলে একটি রেজুলেশন তৈরি করা হয়েছে। এটাতো আর আমি করিনি, ওরা করেছে। ওরা যা করতেছে তা তাদের মন গড়া। আমার বিষয়টি সম্পূর্ণ বৈধতা আছে, সব প্রমাণপত্রও আছে। বর্তমান আহবায়ক কাজী নাজমুল ইসলাম বাবুল ভাইও এই রেজুলেশন পড়ে, দেখে-শুনে সে নিজেও সই করেছে।

 

 সেতো এটা অবৈধভাবে দিয়েছে, সেতো এখানে সই করেছে। তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে যে কমিটি আছে তার সাথে আলাপ আলোচনা করে নিতে পারতো। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকেতো ভোটারই করেনি। আমি রানিং সভাপতি অথচ আমাকে এখন ভোটারই করা হয়নি। তারা এখন তাদের মন মতো করে ভোটার তৈরি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজী ফার্মেসী নামের একটি দোকানেই তিন জন ভোটার। আরেকটা প্রতিষ্ঠান থেকে চারজনকে ভোটার বানানো হয়েছে। ভোটার তৈরি করার বিষয়ে এরকম অনেক অনিয়ম তৈরি হয়েছে। যারা কখনও দোকান চালায়নি তাদেরকেও ভোটার বানানো হয়েছে। আমার কাছে বেশ কিছু প্রমাণ আছে, যেখানে তারা অনিয়মভাবে ভোটার বানাইছে।


 
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা বলেন, এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহসীন (মোহসীন ভূইয়া) দীর্ঘ ১৪ বছর আগে নির্বাচিত হয়ে এই পদে বহাল ছিল এবং এতদিনের মধ্যেও সে একটি নির্বাচন দিতে পারেনি। উপরন্তু সে ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছে, তাই ব্যবসায়ীরাও তার উপর ক্ষুব্ধ। ব্যবসায়ীরা আমার বরাবর কয়েকবারই লিখিত দিয়েছে, আমি যেন একটি নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে দেই। 

 

এটা টের পেয়ে মোহসীন আগে যারা কমিটিতে ছিল তাদের সবাইকে বাদ দিয়ে হঠাৎ একটি পকেট কমিটি গঠন করে ঘোষণা দেয়। এরপর সবাই আবার আমার কাছে আসলে ঝামেলাটা বুঝার জন্য আমি আলোচনা করার জন্য মোহসীনসহ সবাইকেই ডাকি। সেখানে ব্যবসায়ী ও এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকলেও মোহসীন আসেনি। সেই আলোচনায় সকলের সম্মতি নিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করি। এর মধ্যে গত শুক্রবার হঠাৎ করেই মোহসীন বেশ কয়েকজন লোক নিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর করে। এরপর শুনলাম হামলার শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজনও ক্ষুব্ধ হয়ে দলবদ্ধভাবে মোহসীন মিয়ার বাড়ির আশেপাশে গিয়ে ঘুরে আসে।


 
ভোটারের তালিকার বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, তিনদিনের সময় দিয়ে একটি খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি করে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা মোহসীনকে ভোটারের আবেদনপত্র দিতে গেলে সে তাদের বেইজ্জতি করে বের করে দেয়। সি নিজে ভোটার না হলে তাকে কি জোর করে ভোটার বানানো যাবে?

 

 মোহসীন যদি এখনও নির্বাচন করতে চায়, তাহলে প্রয়োজনে নির্বাচন আরও এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সে জোর করে সভাপতি হতে চায়। মসজিদ কমিটির যে দানবাক্সের টাকা উঠে তা-ও মোহসীন নিয়ে নেয়। তাছাড়া এখানে মোহসীনের কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নাই। নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র ব্যবাসায়ীরাই নির্বাচন করতে পারবে। তারপরও আমি বলেছি নির্বাচনের মাধ্যমে মোহসীন যদি নির্বাচিত হয় তাহলে আমি তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিব। এখানে ইন্ধন দিতেছে খোকনে (নাসিক ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন)।


 
নির্বাচনের বিষয়ে কিছু জানেন কি না জানতে চাইলে নাসিক ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি অনেক আগে চেষ্টা করেছিলাম যে, যারা আহবায়ক কমিটিতে আছে এবং আগে যারা কমিটিতে ছিল এই দুই কমিটির সামঞ্জস্যে একটি কমিটি করে নির্বাচনটা করে দেওয়ার জন্য। আমি চাইছিলাম এই দুই কমিটি থেকে অর্ধেক অর্ধেক করে সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে সেই কমিটির মাধ্যমে ভোটার তালিকাটা হালনাগাদ করে নির্বাচনটা হোক। 

 

এতে যে-ই নির্বাচিত হয়, হোক। প্রথমে তারা করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু পরে দেখি তারা আর এগোয় না। তাই আমি পিছিয়ে এসেছি। তিনি আরও বলেন দীর্ঘদিন যারা কমিটিতে ছিল তাদেরও হয়তো কিছু ভুল ত্রুটি ছিল। আবার যারা অবহেলিত তাদেরও কষ্ট ছিল। এক গ্রুপ বলে তাদেরকে কেমনে বিশ্বাস করবো, আরেকট গ্রুপ বলে আমরাতো সবার সিদ্ধান্ত নিয়েই করছি। আমার দৃষ্টিতে অস্বচ্ছতা দুই গ্রুপের মধ্যেই পাওয়া গেছে। তবে ব্যবসায়ীদের জন্য এধরণের রাজনীতি ভাল না উল্লেখ করে তিনি বলেন অরিজিনাল ব্যবসায়ীদের জন্য এগুলো ঠিক না।
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন