শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১২ ১৪৩১

নগরীর রেল ক্রসিংগুলো ঝুঁকিপূর্ণ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২৪  


নগরীর ব্যস্ততম সড়কের মধ্যে অন্যতম বঙ্গবন্ধু সড়ক। ব্যবসায়িক ও প্রশাসনিক ভবনসহ হাসপাতাল সংযুক্ত রয়েছে সড়কটির সাথে। রিকশা, ভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেট কার, এম্বুলেন্স, ঢাকাগামী বাসসহ হাজার হাজার যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করছে এই সড়কটিতে। ২নং রেল গেইট এলাকায় সড়কটির উপর রয়েছে রেল ক্রসিং। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ট্রেন চলাচলে সময়ে ক্রসিং এ নামানো হয় লোহার ব্যারিকেড। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ক্রসিং এর একপাশে ব্যারিকেড অকেজো হয়ে আছে। এতে করে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকার জনসাধারণ।
 

 


২নং রেল গেইট এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাষাড়া থেকে নিতাইগঞ্জ যাওয়ার পথে রেল ক্রসিং এ ব্যারিকেডটি অকেজো হয়ে আছে। ট্রেন আসা-যাওয়ার সময়ে গেটম্যান নাইলনের দঁড়ি দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করেন। ট্রেন আসার সতর্ক এলার্ম বাজলেও কোন কোন যানের চালক দঁড়ি উপরে উঠিয়ে ট্রেন ক্রসিং পারাপার করেন। এছাড়াও ক্রসিং এর সামনে মিশুক-অটোরিক্সার ভাসমান স্ট্যান্ড বসে। চাষাড়া কিংবা নিতাইগঞ্জ থেকে আসা যাত্রীদের নামানো ও উঠানো হয় এইখানে। সিটি কর্পোরেশন ও র‌্যালওয়ের গেইটম্যানরা মিশুক-অটোরিক্সা চালকদের থেকে চাঁদা আদায় করেন এমন অভিযোগও আছে।
 

 


গেইটম্যানের সাথে কথা হলে জানা যায়, আগস্টের দিকে ব্যারিকেডে ভাঙচুর করা হয়। এসময় ব্যারিকেডের বল-বিয়ারিং ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যারিকেড অপারেট করা কঠিন হয়ে পড়ে। কয়েকবার মেরামতের পরও তা অকেজো হয়ে যায়। ভাড় সামলানোর জন্য ব্যারিকেডটিকে কাঠের তক্তার সাথে ভিড়ানো হয়েছে। ট্রেন আসার সময়ে নাইলনের দঁড়ি দিয়ে চলাচলের পথ বন্ধ করা হয়।
 

 


স্থানীয়দের ও সড়কে যাতায়াতকারীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ২নং রেল গেটের ক্রসিং এ ব্যারিকেড কাজ না করায় সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে। এর পাশাপাশি ক্রসিং এর সামনে মিশুক-অটোরিক্সা ভিড় করে থাকে। যাত্রী নেওয়া ও নামানোর জন্য অনেক সময় ট্রেন আসার পথে গাড়ি উঠিয়ে রাখেন। যেকোন সময়েই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
 

 


সাব্বির নামে এক গাড়ি চালক বলেন, প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে যাওয়া আসার সময়ে ২নং রেল গেইট এলাকার ক্রসিং এ গাড়ি  থামানো হয়। চাষাড়া থেকে আসার পথে এইখানে ব্যারিকেড বন্ধ। ট্রেন আসার সময়ে দঁড়ি দিয়ে একজনকে চলাচলের পথ আটকাতে দেখি। এসময় দঁড়ি সরিয়ে কয়েকটা গাড়ি, মিশুক ক্রসিং পারাপার করে। লোহার ব্যারিকেড থাকলে এমনটি হতো না। টিভি চ্যানেলে ক্রসিং এ দুর্ঘটনার সংবাদ অনেক দেখেছি। ভয় করে, হঠাৎ করে অসাবধাণতায় এইখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
 

 


সিহাব নামে এক পথচারী বলেন, রেল ক্রসিং এ প্রায় সবসময় অটোরিক্সা, মিশুকের ভিড় জমে থাকে। কেউ যাত্রী নামায়, কেউ যাত্রী উঠানোর জন্য অপেক্ষা করে। ট্রেনের ট্র্যাকের উপর মিশুক-অটোরিক্সা ভিড় করে। ট্রেন আসার এলার্ম বাজলে তারা সরে পড়েন না। তারা যাত্রী নেয়ার খেয়ালে থাকেন। ট্রেনের দেখা পেলে তারা নড়ে চড়ে বসেন না। অসাবধাণতার জন্য তাদের পাশাপাশি যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়ে যায়। এছাড়াও এইখানে মিশুক-অটোরিক্সা চালকদের থেকে সিটি কর্পোরেশনের ও ক্রসিং এর গেইটম্যানরা চাঁদা উঠায়। তাই, এরা যাত্রী উঠানো না পর্যন্ত গাড়ি ছাড়ে না।
 

 


নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম খান বলেন, ২নং রেল গেটে ব্যারিকেড দুইবার মেরামতের কাজ হয়েছে। সাত দিন কি পনের দিন পর বল-বিয়ারিং এর সড়ে যাওয়ায় তা অকেজো হয়ে যায়। দ্রুত ব্যারিকেড মেরামতের ব্যবস্থা করছি। গেইটম্যানদের চাঁদা নেওয়ার ব্যাপারে শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি