বাণিজ্যমেলার ২৮ তম আসরের পর্দা নামছে আজ
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
২৮ তম আসরের পর্দা নামছে আজ। ইপিবি ও বাণিজ্যমন্ত্রণালয় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সময় না বাড়ানোর কারনে ব্যবসায়ীরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। ক্রেতা বিক্রেতার অভিযোগ, সন্তুষ্টি আর মিশ্র প্রতিক্রিয়া শেষে বৃহত্তর কোম্পানিগুলো প্রদর্শনীতে সফল হলেও লোকসান গুনছেন ক্ষূদ্র ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো। এছাড়াও মেলার অভ্যন্তরে খাবার হোটেলে অতিমূল্য,নিন্ম মানের পন্য বিক্রি হলে ভোক্তা অধিকারের তৎপরতা ছিল কম। তবে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিলো তুলনামূলক বেশি। মাসব্যাপি চলমান মেলায় কেবল শুক্র ও শনিবার বিপুল দর্শনার্থীর আগমন হয়। বাকি সময় প্রায় থাকে দর্শনার্থী শুন্য। স্বজন নিয়ে ঘুরতে আসা লোকজন পন্য ক্রয় করার পর ক্লান্তি আর ক্ষূধা নিবারণে খুঁজছেন মানসম্মত খাবার। তবে দাম বেশি রাখা আর নিন্মমান নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
মেলায় খাবার নিয়ে এতো অভিযোগে থাকার পরও ভোক্তা অধিকার যেন নিষ্ক্রিয়। মেলায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর বিকাশ চন্দ্র দাশ ও সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মাত্র। তিনি বলেন, আমরা তৎপর আছি। তবে ডিজি মহোদয়ের নির্দেশ ছাড়া আমরা মিডিয়ার কিছু প্রকাশ করিনা।
অভিযোগ রয়েছে মেলার ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিতে ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা ছিলেন শীথিল। এতে মেলায় প্রবেশ করেছে নিন্মমানের পন্য আর দাম রেখেছে বেশি। যদিও ভোক্তা অধিকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মেলায় ঘুরতে আসা পাঁচাইখা এলাকার গৃহীনি ফারজানা আক্তার হাসনা বলেন, মেলায় যেসব পন্য আছে, এসব আমাদের গাউছিয়া মার্কেটেই পাওয়া যায়। ফলে মেলায় নতুনত্ব নেই বললেই চলে।
এদিকে মেলার সময় বাড়ানোর দাবী প্রত্যাক্ষাণ করেছেন মেলার আয়োজক ইপিবি সচীবসহ সংশ্লিষ্টরা ।তারা জানায় ২০ ফেব্রুয়ারিতেই পর্দা নামবে মেলার। তবে ব্যবসায়ীরা লোকসান এড়াতে সময় বাড়ানোর দাবীতে অনড়। তারা অবস্থান ধর্মঘটসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দৌড়ঝাঁপ করছেন। মেলায় প্রবেশদ্বার ঠিকাদারের নিযুক্ত কর্মকর্তা মাসুম চৌধুরী অপু বলেন, আমরা ৩ দিন সময় চেয়েছিলাম। কারন মেলার শুরুতে শীত আর জাতীয় নির্বাচনের কারনে দেরী করে শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা প্রথম দিকে স্টল দিতে পারেনি। ফলে সবাই লোকসান গুনবে। এসব বিবেচনায় দৌড়ঝাঁপ করেও কোন আশ্বাস পাইনি। তবে সুযোগ পেলে ১ দিন হলেও আমরা মেলা চালিয়ে যাবো।
মেলার আয়োজন আর অভ্যন্তরীন পণ্য নিয়ে দর্শনার্থীদের মাঝেও দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের কেউ দিচ্ছেন অভিযোগ আবার কেউ কেউ করেছেন সন্তোষ প্রকাশ।
মেলার ঘুরতে আসা কাঞ্চন চরপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন বলেন, মেলা হওয়া দরকার সব শ্রেণি পেশার লোকজনের অংশগ্রহণ মূলক। বিদেশী দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকা দরকার। কিন্তু দুদিন মেলা আসলাম।একদিনও বিদেশী দর্শনার্থী চোখে পড়েনি।
আবার কেউ কেউ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮ তম আসরের পূর্বাচলের ৩য় আসরটি ক্রমেই জমজমাট বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাদের দাবী এ বছর শেখ হাসিনা সরণি প্রস্তুত থাকায় রাজধানীর বাসিন্দাদের উপস্থিতি ছিলো বেশি।
তবে আগামী বছর ঢাকা বাইপাস ৮ লেনে উন্নীত হলে মেলায় বাইরের জেলার দর্শনার্থীর সংখ্যাও বাড়বে। মেলার পরিচালক ও ইপিবি সচীব বিবেক সরকার বলেন, মেলার অভ্যন্তরীন পরিবেশ সুন্দর ছিলো। তবে ক্রেতা বিক্রেতার আশা নিরাশা এটা সবখানেই থাকো। এবার আমরা বিদেশী পন্যের প্যাভিলিয়ন কম পেয়েছি। তা হয়তো দেরীতে শুরু হওয়ায়।
বিদেশী পন্যের বিক্রি যেমন হয়েছে, দেশী পন্যের বিক্রিও বেড়েছে। আর মেলার সময় বাড়ার কোন নির্দেশনা পাইনি। ২০ ফেব্রুয়ারী তারিখ বেলা ৩ টায় সমাপনী অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি রয়েছে।
মেলার সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেলার বিক্রিত পন্যের উপর আরোপিত ভ্যাট থাকায় খরচ বেড়েছে। তাছাড়া স্টলগুলো প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে থাকে না। ফলে হাত বদল করে স্টল নিতে গিয়ে দাম রেখেছে বেশি। এন. হুসেইন রনী / জেসি