Logo
Logo
×

স্বদেশ

বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করা ছিল গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন

Icon

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:০৩ পিএম

বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করা ছিল গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন

 

একাত্তরে ডিসেম্বর মাসে আমরা মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানীদের পরাজিত করে বিজয় অর্জন করেছিলাম। নতুন প্রজন্মকে মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা তুলে ধরার জন্য এই বিজয়ের মাসে ‘দৈনিক যুগের চিন্তা’য় একাত্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনের কাহিনী তুলে ধরা হচ্ছে। আজ ছাপা হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হকের লেখা সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করার কাহিনী।  

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন ছিল সিদ্দিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া। তবে সেই অপারেশনের সব পরিকল্পনা  এবং বাস্তবায়নের কৌশল ঠিক করলেও আমরা প্রত্যক্ষভাবে বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় উপস্থিত থাকতে পারিনি। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই মূল কাজটি করেছিলেন সিদ্দিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের ম্যানেজার  আবুল হোসেন সাহেবের গাড়ী চালক আবদুল মালেক এবং সেখানকার একজন ফোরম্যান।  ফোরম্যানের নামটি এখন মনে করতে পারছিনা। তখন আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে পাকিস্তান বাহিনী এবং সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া যে, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং যেকোনো জায়গায় তারা আঘাত হানতে সক্ষম। সেই অপারেশনের পর আমাদের সব লক্ষ্য পূরণ হয়েছিল।

 

আমরা ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সিদ্দিরগঞ্জে এলাকায় ফিরে আসার পর আমাদের পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তান বাহিনীর উপর হামলা করা এবং যেকোনো উপায়ে তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়া যাতে তারা এলাকায় অত্যাচার-নির্যাতন করতে সাহস না পায়। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আমরা সিদ্দিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর অপারেশনের পরিকল্পনা করেছিলাম।সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে বিস্ফোরক দিয়ে যন্ত্রপাতি বিকল করে উৎপাদন বন্ধ করার সে অপারেশনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অনেক কৌশল করে সেই অপারেশন করতে হয়েছিল। কারণ আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের কারো পাওয়ার স্টেশনের ভিতরে যাওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। ফলে কিভাবে সেই অপারেশন করব তা নিয়ে আমাদের অনেক ভাবতে হয়েছে। ভাবতে ভাবতে আমরা একটা উপায় বের করে ফেলি।

 

আমরা সিদ্দিরগঞ্জের চার মুক্তিযোদ্ধা- আমি, মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, আব্দুর রব ও আলী হোসেন পাওয়ার স্টেশনে বোমা হামলা করার বিষয়টি নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, পাওয়ার স্টেশনে কাজ করে এমন লোকদেরকে আমাদের সাথে নিতে হবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সিদ্দিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের ম্যানেজার আবুল হোসেন সাহেবের সাথে কথা বলি। তিনি আমাদের পূর্ব পরিচিত ছিলেন। ম্যানেজার সাহেব আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিলেন। তিনিও চাইতেন পাকিস্তানিদের পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীন করা প্রয়োজন। তার সাথে আলোচনা করে আমরা হামলার একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করি।

 

তার গাড়ি চালক আব্দুল মালেক একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি আমাদের পরামর্শ দেন, তাঁর গাড়িতে গাড়িতে করেই বিস্ফোরক পাওয়ার স্টেশনের ভিতরে নেয়া হবে। এনিয়ে ড্রাইভার  মালিকের সাথেও কথা হয়।  মালেক সাথে সাথে রাজি হন। এরপরে আমরা প্রায় প্রতিদিনই নদীর পূর্ব পারে নয়ামাটিতে গিয়ে গোপন বৈঠক করতাম। সেখানে আমরা চারজন এবং ড্রাইভার মালেক ও পাওয়ার ষ্টেশনের একজন ফোরম্যান উপস্থিত থাকতেন। আমরা এভাবে বৈঠক করে কিভাবে সেই অপারেশন করা হবে তার সমস্ত পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।পরিকল্পনা অনুযায়ী মালেক তার গাড়িতে অল্প অল্প করে বিস্ফোরক নিয়ে পাওয়ার স্টেশনের ভিতরে একটা নির্দিষ্ট গোপন স্থানে জমা করতে থাকেন।

 

ম্যানেজার আবুল হোসেন সাহেব প্রায়ই প্রায়ই ঢাকায় ওয়াপদা ভবনে বিদ্যুতের হেড অফিসে যেতেন। যেদিন তিনি হেড অফিসে যেতেন সেই দিনই ফিরে আসার সময় তার গাড়িতে আমরা বিস্ফোরকের প্যাকেট দিয়ে দিতাম।  ড্রাইভার মালেক সেই বিস্ফোরক নিয়ে পাওয়ার স্টেশনের একটি গোপন স্থানে রেখে দিতেন। ম্যানেজার সাহেব আগেই আমাদের জানাতেন আজ তিনি ঢাকায় যাবেন এবং ফেরার পথে যেন তার গাড়িতে বিস্ফোরক দিয়ে দেই। আমরা সিদ্ধিরগঞ্জ পুলের একটু উত্তর দিকে রাস্তার মাঝে গাড়ি থামিয়ে গাড়িতে বিস্ফোরকের প্যাকেট দিয়ে দিতাম। এভাবে আমরা সাত দিন তার গাড়িতে বিস্ফোরক দিয়ে দেই যা ড্রাইভার মালেক গোপন স্থানে জমা করে রাখেন।

 

পাওয়ার স্টেশনে যে টারবাইনে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় সেই টারবাইনে একটি  মোটা পাইপ দিয়ে বাষ্প ঢোকানো হতো এবং এই বাষ্প দিয়েই ইঞ্জিন চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। ম্যানেজার সাহেব আমাদের পরামর্শ দিলেন যে, সেই বাস্প সরবরাহের পাইপটি ধ্বংস করা খুব সহজ। কারণ এটি মূল বিল্ডিং এর ভিতরে নয়। মূল বিল্ডিংয়ে পাকিস্তানি সেনারা পাহারায় থাকে, সেখানে কারো যাওয়া সম্ভব নয়। বাইরে থেকে যদি বাষ্প সরবরাহ বন্ধ করা যায় তাহলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।  সেই অনুযায়ী আমাদের সব পরিকল্পনা এগুতে থাকে।

 

প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিস্ফোরক নির্দিষ্ট স্থানে জমা হওয়ার পর আমরা চূড়ান্ত পরিকল্পনা করি। নদীর পূর্ব পাড়ে নয়ামাটিতে আমরা এই কয়েকজন বসে একটি নির্দিষ্ট দিন চূড়ান্ত করলাম, যেদিন বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। এর আগেই আমরা ড্রাইভার আব্দুল মালেক এবং ফোরম্যানকে কিভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে তা বুঝিয়ে দিই। আমরা ঠিক করি যে, বিস্ফোরকের সঙ্গে পাঁচ ঘন্টার ফিউজ দেয়া হবে, যাতে এই সময়ের মধ্যে মালেক ও ফোরম্যান এবং আমাদের পরিচিত অন্য লোকেরা পাওয়ার স্টেশন থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে।

 

নির্দিষ্ট দিনে ফোরম্যান এবং মালেক সেই বাষ্প সরবরাহের পাইপের কাছে গিয়ে অত্যন্ত গোপনে বিস্ফোরক পাইপের সঙ্গে বেধে দেন। আমাদের নির্দেশ মতো ৫ ঘন্টার ফিউজ-এ আগুন দিয়ে তারা পাওয়ার হাউজের ভিতর থেকে যার যার বাসায় চলে যান। ম্যানেজার আবুল হোসেন সাহেবকে পুরো বিষয়টি আগেই অবহিত করা হয়। তিনিও কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিবেন তারও একটি পরিকল্পনা করে রাখেন। আমাদের পরিকল্পনা মতো শেষ রাতে ফজরের আজানের সময় বিকট শব্দে সেই পাইপে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে সেই বাষ্প সরবরাহের পাইপটি ছিন্নভিন্ন হয়ে সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার হাউজের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পরপরই পুরো এলাকা এবং ঢাকা শহর অন্ধকারে ঢেকে যায়।

 

পাওয়ার স্টেশনের এই অপারেশনটি আমাদেরকে অত্যন্ত সাফল্য বয়ে এনে দিয়েছিল। কারণ পাওয়ার স্টেশনটি ছিল পাকিস্তান বাহিনীর নিশ্চিদ্র পাহারার মধ্যে সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারার অর্থ মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।  সেই বিস্ফোরণ নিয়ে সবাই খুব আলোচনায় মেতে উঠেছিল। বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকাসহ বিদেশী অনেক রেডিও থেকে  পাওয়ার স্টেশনে বিস্ফোরণের খবর প্রচার করা হয়েছিল। অপারেশনের পরপরই পাকিস্তান বাহিনী পুরো পাওয়ার স্টেশন ঘেরাও করে সেখানে যারা ডিউটিতে ছিল সবাইকে ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে ড্রাইভার আব্দুল মালেক এবং সেই ফোরম্যানও ছিলেন।

 

মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেককে পাকিস্তানীরা অনেক নির্যাতন করে। পরে ম্যানেজার আবুল হোসেন লিখিতভাবে সেনাবাহিনীকে জানায় যে, আবদুল মালেক তখন তার বাসভবনে বিশ্রামে ছিল এবং সেই ফরমান তার নির্দেশিত ডিউটি করছিলেন, তারা এই বিস্ফোরণের সাথে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তার এরকম কড়া লিখিত চিঠি পাওয়ার পর পাকিস্তান আর্মিরা মালেক এবং ফোরম্যানকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এছাড়াও ম্যানেজার আবুল হোসেন সাহেব পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে জানিয়েছিলেন যে, যাদেরকে ধরা হয়েছে তাদের ছাড়া না হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন আবার শুরু করা যাবে না। এর ফলে পাকিস্তান আর্মি সবাইকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

 

আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছিলাম এজন্য যে, পাওয়ার ষ্টেশনে অপারেশনের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের অফিসাররা নিশ্চিত হয়েছিলেন যে এই এলাকায় মুক্তিবাহিনী অত্যন্ত শক্ত অবস্থান রয়েছে এবং তারা যেকোনো সময় যেকোন স্থানে হামলা করার শক্তি রাখে। এটাই ছিল আমাদের বড় সাফল্য। ৭১ সালে আমি তোলারাম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলাম মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আমরা নানা ভাবে চেষ্টা করতে থাকি কিভাবে ভারত গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেয়া যায়। এরই মধ্যে আমি, মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, আবদুর রব আলী, হোসেন প্রমুখ ভারত যাওয়ার পরিকল্পনা করি।

 

সে সময় পাওয়ার স্টেশনে সামরিক বাহিনীর কয়েকজন সাবেক বাঙালি সদস্য দারোয়ানের চাকরি করতেন। কয়েকজন সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।  তার মধ্যে তিনজন ছিলেন আমার খুব পরিচিত, আমরা একসাথে বসে আড্ডা মারতাম, চা খেতাম। আমরা ভারত যাওয়ার পরিকল্পনার পর এই সামরিক বাহিনীর সাবেক সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করি। আমার প্রস্তাবে তারা ভারত যেতে সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়। তারা সংখ্যায় ছিল আট জন। একদিন আমরা স্থানীয় চারজন এবং সেনাবাহিনীর সাবেক ৮ সদস্য মিলে আগরতলার দিকে রওনা হয়ে যাই। হেঁটে এবং নৌকায় নানা পথ দিয়ে আমরা ভারত সীমান্তে গিয়ে পৌঁছি। সেখান থেকে আমরা সরাসরি আগরতলা শহরে চলে যাই। আগরতলা শহরে বটতলা নামক স্থানে আদমজীর শ্রমিক নেতা সাইদুল হকের (সাদু ভাই) সঙ্গে দেখা হয়। তিনি আমাদের আগেই চিনতেন।

 

আদমজী মিলে শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে আমরা তাকে সহযোগিতা করেছিলাম। তখন থেকেই আমাদের সাথে তার পরিচয়। সাদু ভাই আমাদের দেখে অত্যন্ত খুশি হলেন। আমরা তাকে বললাম যে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য এসেছি। তিনি আমাদের একটি চিঠি লিখে একটি গাড়িতে করে মেলাঘর  ক্যম্পে পাঠিয়ে দিলেন। আমরা মেলাঘর ক্যাম্পে আশ্রয় পেলাম। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর আমাদের প্রশিক্ষণ শুরু হল। প্রায় এক মাসের প্রশিক্ষণ আমরা নিলাম। বিভিন্ন অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণ দেয়ার পর আমাদেরকে সরাসরি ফায়ারিং শিখানোর জন্য একটি পাহাড়ে নিয়ে যাওয়া হয় কিন্তু সেখানে ফায়ারিং করা সম্ভব হয়নি।

 

পরে আমাদের পাঠানো হয় পালাটানা ট্রেনিং ক্যাম্পে। সেখানে আমরা প্রত্যক্ষ ফায়ারিং প্রশিক্ষণ নেই। আরো কিছু কলাকৌশল আমাদের শিখানো হয়।  এরপরে আমাদের দেশে ফিরে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে অপারেশন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। এর আগে আমাদের সাথে যাওয়া আট সাবেক সেনা সদস্যকে রেগুলার সেনাবাহিনী হিসেবে প্রশিক্ষণের জন্য অন্য ট্রেনিং ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এলাকায় ফিরে আসার আগে আমাদেরকে একটি রাইফেল, একটি এসএলআর, একটি এসএমজি এবং বেশ কয়েকটি গ্রেনেড ও বিস্ফোরক দেয়া হয়। সেই অস্ত্র এবং বিস্ফোরক নিয়ে একদিন বিকেলের দিকে বিএসএফের ট্রাকে সীমান্তে এসে নামানো হয় আমাদের। সীমান্তে যে গাইড ছিল তাদের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরে আমরা বাংলাদেশ ঢুকি।

 

এরপর আমরা সীমান্তের কাছে একটি বাড়িতে সারাদিন অপেক্ষা করে সন্ধ্যার পর একটি নৌকা নিয়ে আনন্দবাজারের দিকে যাত্রা করি। খুব ভোরে এসে আমরা আনন্দবাজারের নামি। সেখানে রাত কাটিয়ে আবার নৌকা নিয়ে আমরা ডেমরার চলে আসি।
আমরা এলাকায় ফিরে সিদ্ধিরগঞ্জের দক্ষিণ আজিবপুরে ফকির চাঁনের বাড়িতে উঠি। সেখানে গর্ত করে পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে আমাদের অস্ত্রগুলো মাটি চাপা দিয়ে রাখি, যাতে কেউ টের না পায় যে,আমাদের সাথে অস্ত্র আছে।

 

এরপর আমরা পরিকল্পনা করে একের পর এক অপারেশন করি। মুক্তিযুদ্ধকালে আমরা পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে অনেক  অপারেশন করেছি। প্রত্যেকটি অপারেশন যদিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কিন্তু আমরা সিদ্দিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ করিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে পারাকেই সবচেয়ে বড় সাফল্য মনে করি। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সেই সাফল্যের কথা মনে হলে আমাদের বুক গর্বে ভরে উঠে।

এস.এ/জেসি
 

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন