রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

আ.লীগের সেক্রেটারি পলাতক, ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সভাপতি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৪  


আওয়ামী লীগ শূন্য হয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলায়। গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে এ জেলার সব নেতারা চলে গেছেন আত্মগোপনে। কর্মীরাও চলে গেছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। জেলার পাঁচ এমপির মধ্যে একজন গ্রেফতার ও বাকি চারজন রয়েছে পলাতক। নগরীর ২নম্বর রেল গেইট এলাকায় অবস্থিত জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যালয়টি একসময় লোকে লোকারণ্য থাকতো, কিন্তু সেটি এখন নিস্তব্ধ ও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

 

 

এছাড়াও গত ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রয়েছে পলাতক। কোথাও তাদের কোন সন্ধান মিলছে না। তাদের সাথেও পলাতক রয়েছেন বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটির নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে আবার কিছু নেতা দল পাল্টিয়ে অন্য দলের নেতাদের সাথে মিশে শহরের  বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছে।  

 

 

গত বছর জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ শহর ছিলো আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের লোকে লোকারণ্য। সেই বছরটিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ১৭টি ওয়ার্ডের কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সেই সময় মহানগর আওয়ামীলীগের আওতাধীন প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের মাঝে ছিলো পদ-পদবীর লড়াই। সেই সম্মেলনে মহানগরের ১৭টি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

 

 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা সেই সময় ছাত্র-জনতার উপর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আওয়ামীলীগ সরকার পদত্যাগের পর পরই অনেকে পালিয়ে গেছে। অনেকে আবার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামী হয়েও দেশের বাহিরে বা দেশের মধ্যেও পলাতক রয়েছে। তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের বিভিন্ন নেতাকর্মীও রয়েছেন ছাত্র-জনতার হত্যা মামলার আসামী।

 

 

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা বেশি রয়েছেন এই মামলার আসামী। তার মধ্যে ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ  সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনিরও রয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার হত্যা মামলার আসামী। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোন হত্যা মামলার আসামী নেই ১৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি এস.এম পারভেজ।

 

 

গত ১৬ বছর এই ওয়ার্ডের সভাপতি পদে রয়েছেন এস.এম পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মনিরুজ্জামান মনির। এস.এম পারভেজ ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহার কাছের লোক। তাদের দু’জনের বাসা একই মহল্লায় ও কাছা-কাছি থাকায় সভাপতি পদটি সব সময় খোকন সাহা এস.এম পারভেজকেই দিতেন।

 

 

এছাড়াও সেই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এর কাছের লোক। তার বাসা ও অফিস আনোয়ার হোসেন এর বাসার সামনে থাকায় তাকেও সাধারণ সম্পাদকের পদটিতে বিগত বছর গুলোতে রেখেন আনোয়ার হোসেন। কিন্তু বতর্মানে সেই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক পলাতক থাকলেও প্রকাশ্যে চলাফেরা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম পারভেজ।

 

 

চাষাঢ়া খাজা সুপার মাকের্টের নিচে ফটো কপির দোকানে প্রতিদিনই নিজের ব্যবসায় ব্যস্ত সময় পার করেছ আওয়ামীলীগের এই নেতা। এবিষয়ে বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, ১৪নং ওয়ার্ডে গলাচিপা  এলাকা থেকে দুই নম্বর গেইট পর্যন্ত ছাত্র-জনতা আন্দোলনে পারভেজ এর নেতৃত্বে তার কর্মীরা হামলা চালায়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরেই পারভেজ ১৪নং ওয়ার্ডের অন্য দলের কয়েকজন নেতাদের ম্যানেজ করে এখন চলাফেরা করছেন।

 

 

সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হলে সভাপতির বিরুদ্ধে হলো না কেনো? কারণ পারভেজ সব কিছু আতাত করে চলে। এতদিন খোকন সাহার নাম বিক্রি করে চলতো এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম বিক্রি করে চলে।          এন. হুসেইন রনী  /জেসি