মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ইজিবাইকের ভাড়া দেড় থেকে দ্বিগুণ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২১  

# টাকা দিয়ে গাড়ি চালাতে হয় তাই ভাড়া বেশী : ইজিবাইক চালক


# ভাড়া দেড়গুণ দিয়েও গাদাগাদি করে যাত্রী নেয় : অভিযোগ যাত্রীদের


# টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নাই, বিষয়টি দেখছি : এএসপি (ট্রাফিক)


 
করোনা প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে ৭ দিনের কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। একই সাথে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। লকডাউনের এই সময় ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি না থাকার পরও পুলিশকে টাকা দিয়ে ‘ম্যানেজ’ করে রাস্তায় নির্বিঘ্নে গাড়ি চালাচ্ছেন তারা।

 

শুধু চালাচ্ছেনই না তারা সরকারের বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন তারা। এতটুকু একটি অটো ইজিবাইকের পেছনে চারজন বসিয়ে সামনে চালকের দুই পাশে দুইজন অর্থাৎ চালকসহ মোট সাতজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছেন তারা। ভাড়াও নিচ্ছেন দেড় থেকে দুইগুণ। এসব গাড়িতে সামাজিক দুরত্বতো দুরের কথা মুখে মাস্ক না থাকলেও তাদের কিছু আসে যায় না। আর এতে একটু সচেতন যাত্রীদের সাথে চালকদের হচ্ছে কথা-কাটাকাটি। গোদনাইল চৌধুরী বাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দেখা যায় সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে অটো ইজিবাইক। এখান থেকে তারা খানপুর ও কালির বাজারের যাত্রীদের ডাকছেন।

 

চাষাড়া এলাকার কথা বললে সেখানে যাওয়ার জন্য পুলিশের অনুমতি নাই বলে চালকরা জানান। খানপুর ও কালীর বাজারের অনুমতি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে পুলিশকে টাকা দিয়ে তারা সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানান তারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইজিবাইক চালক জানান, প্রতি ট্রিপে প্রতি ইজিবাইক থেকে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। লকডাউনে ইজিবাইক চালানোর অনুমতি নাই বলে ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয় বলে বেশী ভাড়া নিচ্ছেন বলে জানান তিনি। করোনা বিস্তার রোধে সামাজিক দুরত্বের কথা বললে এই চালক জানান, সেই হিসেব করলে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে প্যাসেঞ্জার নিয়ে ট্রি দিয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে মহাজনের ভাড়াও পরিশোধ করতে পারবো না, আমাদের সংসার চালাইবো কারা।

 

এই জন্য কম যাত্রী নিয়ে চালানোর কোন সুযোগ নাই, আমাদের পোষাবে না। শহরের খানপুর জোরা ট্যাংকি এলাকায় এক যাত্রিকে দেখা যায় অটো চালকের সাথে কথা-কাটাকাটি করতে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, তার নাম নূরে আলম সিদ্দিকী, তিনি একটি ঔষধের দোকানের সেল্সম্যান হিসেবে কাজ করেন। তিনি বরফকল এলাকা থেকে ইজিবাইকে উঠেছেন এবং জোরা ট্যাংকি এলাকায় নেমেছেন। এখানকার ভাড়া ৫ টাকা কিন্তু চালক তার কাছ থেকে ১০ টাকা রাখছেন।

 

তিনি আরো অভিযোগ করেন, চালককে তিনি কম লোক নিয়ে চালানোর অনুরোধ করলেও তিনি তা শুনেনি। অটো চালক এই যাত্রীকে বলেছেন, ‘জমিদারী দেখাইয়েন না, কম লোক নেওয়া যাবে না, আপনার সমস্যা হলে প্রাইভেট কার কিনে নেন, না হলে হাইট্টা (পায়ে হেটে) চলে যান।’ এখন ভাড়াও রাখছেন দ্বিগুণ। গাড়িতে উঠানোর সময় ভাড়া দ্বিগুণের কথা বলা হয়েছে কি না জিজ্ঞেস করলে সে সময় ভাড়ার বিষয়ে কোন কথা হয়নি বলে জানান তিনি। চৌধুরী বাড়ি থেকে খানপুর জোড়া ট্যাংকির সামনে পর্যন্ত অটো চালককে কোন পুলিশের সামনে পড়তে হয়েছে কিনা কিংবা কোন টাকা দিতে হয়েছে কি না জানতে চাইলে অটো ইজিবাইকের একাধিক যাত্রী জানান, আমাদের রাস্তায় কোন পুলিশের ঝামেলায়ও পড়তে হয়নি, পুলিশকে কোন টাকাও দিতে হয়নি।

 

কিন্তু ইজিবাইকের চালকরা ঠিকই বেশী ভাড়া আদায় করেছে। তারা তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এমন অমানবিকভাবে অতিরিক্ত যাত্রী নিচ্ছে একই সাথে ভাড়াও রাখছে দেড় থেকে দ্বিগুণ। এবিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, চৌধুরী বাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে খানপুর পর্যন্ত এখন আমাদের আলাদা কোন চেকপোস্ট নাই। পুলিশকে টাকা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন আমাদের এখানে এ ধরণের কোন সুযোগ নাই। চালকরা হয়তো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার জন্য এ ধরণের মিথ্যাচার করছে। তারপরও যেহেতু অভিযোগটি পেয়েছি, বিষয়টি আমি এখনই খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
 

এই বিভাগের আরো খবর