বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৪ ১৪৩১

এজিএমএ’তে ক্ষোভ ও কষ্ট ঝাড়লেন সেলিম ওসমান

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৯ আগস্ট ২০২১  

চাষাঢ়ায় বিকেএমইএ কমপ্লেক্স নির্মাণে বাধা সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে বিকেএমইএ সভাপতি বলেছেন, ভবনটি নির্মাণের জন্য ১৫কোটি টাকা আপনারা বরাদ্দ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ফেলেছি। আমরা একটা জায়গা আটকে আছি। যেখানে জনপ্রতিনিধি যারা থাকেন তারা ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করলে ভাল থাকতে পারেন।

 

কিন্তু এখানে আমাদের একটা সংস্থা আমাদের জায়গার সামনে একটা পাওয়ার স্টেশন বানিয়ে বসে আছেন। উনি আমাকে বলছিলেন আমাদের লেবাররা থাকবে আমি একটা টিন সেট তুলতে চাই। উনি এখন কখনো এটা সিটি কর্পোরেশনের জায়গা, কখনো রাজউকের জায়গা বলছে। কার জায়গা সেটা আপনার দরকারকি? আপনার এলাকায় এতো বড় উন্নয়নশীল একটা কাজ আপনারা কেন আমাদের বাধা দিয়ে রাখছেন। কেন সামনের জায়গা দখল করে রাখলেন। কেন ছেড়ে যাচ্ছেন না। আপনি বাড়ি বানালেন এক জায়গা আর ট্রান্সফমার বসায় রাখলেন আরেকজনের জায়গায়। জায়গাটা সিটি কর্পোরেশনের না। আরো ২ বছর আগে ভবনটি কমপ্লিট হতো। দেখা যেত সেই ভাড়ার টাকা দিয়েই বিকেএমইএ চলে যেত।

 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল বলেই আমরা এখানে ভবনটি করছি। মেয়রের আছে অনুরোধ করবো আপনি অতিসত্তর এই জায়গাটা খালি করে দেন। আপনি কেন ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করছেন। এতোদিন কিছু বলি নাই। দরকার পড়লে আমরা সবাই যাবো। গিয়ে জানতে চাইবো কেন এই ট্রান্সফমার বসিয়ে আমাদের বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। এই সংগঠনটির মাধ্যমে ৮৭ শতাংশ রেমিটেন্স আসে। আমরা উপায় না দেখলে আইনের আশ্রয় নিবো। নয়তো দেখা যাবে আমরা সিটি কর্পোরেশনে ঘেরাও করবো। আমরা ব্যবসায়ীরাও হরতাল করতে জানি। আমরা ব্যবসায়ীরা রাস্তায় বসে থাকবো। আমি উনাকে অনুরোধ করছি অতিসত্তর বিকেএমইএ কমপ্লেক্সের সামনের জায়গাটা ছেড়ে দেন। জোর করে দখল করে রাখার চেষ্টা করবেন না। ওইটা ব্যক্তিগত মালিকানার জমি না।

 

ব্যবসায়ীদের সাথে একটা সংস্থার এমন প্রতারনা কেন? যদি এটা রাজউকের জায়গা হয় তাহলে আমাদের কাছে আসুক। ব্যক্তি মালিকানা জায়গা হলে তারাও আসুক। কিন্তু এটা সিটি কর্পোরেশনের জায়গা না। জায়গা আমাদের তাও বলবো না কিন্তু জায়গা আপনার না। সুতরাং আপনি জায়গা ছেড়ে দেন। আমরা মালিক শ্রমিক নয়তো রাস্তায় নামবো।

 

শনিবার ২৮ আগস্ট রাত ৮টায় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত সমবায় ব্যাংক ভবনে (বিকেএমইএ’র প্রধান কার্যালয়ের বিপরীত পার্শ্বে) অনুষ্ঠিত নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএর এজিএম(২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১) অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।

 

তিনি আরো বলেন,  একটি সরকার নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী টেক্সটাইল মিল গুলো বন্ধ করে দিলো। আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দিলো। তখন মানুষ বেকার হয়ে নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাস বেড়ে গেল। আমরা তখন বিসিকের উন্নয়ন করে নীট সেক্টর গড়ে তুললাম। আমরা চেষ্টা করছি সেটাকে আরো উন্নত করতে। চিত্তরঞ্জনের জায়গাটির জন্য বিকেএমইএ থেকে আবেদন করেছি সেখানেও বিসিকের মত একটি শিল্প নগরী গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। নীটপল্লীর জন্য শান্তিরচর চেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন কিন্তু এখন সেখানে কিছু ভূমি দস্যু জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এফবিসিসিআই এর সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে তারা আমাদের সহযোগীতা করবেন। নারায়ণগঞ্জে আবারো প্রাচ্যের ডান্ডির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হবে।  

 

গত ১৬ মাস আমাদের র্ভতুকি দিয়ে শ্রমিকদের বাচিয়ে রাখতে হয়েছে। অপরদিকে সূতার মূল্য বৃদ্ধির পরও আমাদের বায়ারদে সন্তোষ্ট রাখতে হচ্ছে। আপনারা গার্মেন্টস ব্যবসার পাশাপাশি অন্য কোন ব্যবসার চিন্তা করেন। একটা সময় নারায়ণগঞ্জ পাটের জন্য বিখ্যাত ছিল। কিন্তু সেই ব্যবসা এখন নাই হয়ে গেছে। জুট অ্যাসোসিয়েশন অফিস ডাক্তার খানায় পরিণত হয়েছে। আপনারা ব্যবসায় অযথা অপচয় করবেন না।

 

 সরকারকে আমাদের সহযোগীতা করতেই হবে। আমরা পন্য তৈরি করেও রপ্তানি করতে পারছি না। করোনা মহামারিতে আমরা কোন শ্রমিককে চাকুরিচ্যুত করিনি। আমরা বিকেএমইএ কে আরো শক্তিশালী করবো। আমরা নবীনদের সুযোগ করে দিবো।

 

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিচালক মঞ্জুরুল হক, আবু আহমেদ সিদ্দিক, মনসুর আহমেদ, ফজলে শামীম এহসান, মোস্তফা জামাল পাশা, আশিকুর রহমান, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, মোস্তফা মনোয়ার ভ‚ঁইয়া, তারেক আফজাল, রাজিব দাস সুজয়, সাহাদাৎ হোসেন ভ‚ঁইয়া, এম আই সিদ্দিক, নাসিমুল তারেক মঈন, রতন কুমার সাহা, নন্দ দুলালা সাহা, কবীর হোসেন, আহমেদ নূর ফয়সাল, ইমরান কাদের ত‚র্য, মজিবুর রহমান, আকতার হোসেন অপূর্ব, মোহাম্মদ শামসুল আজম, গাজী মো. শহীদুল্লাহসহ বিকেএমইএ’র তিন শতাধিক সদস্য কারখানার মালিকগণ।

 

এই বিভাগের আরো খবর