মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

এমআরদের দৌরাত্ম্যে ১’শ শয্যায় রোগী ও স্বজনরা অতিষ্ঠ

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১  

একটার পূর্বে কোন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধি প্রবেশ নিষেধ থাকলেও এর উল্টো দেখা গেছে ১’শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে। চিকিৎসক আসার পূর্বে থেকেই তারা অপেক্ষা করতে থাকেন হাসপাতালে। বিভিন্নভাবে ভাগ হয়ে কেউ রোগীর টিকেট দেখা কেউ আবার ডাক্তারের রুমে ভিজিট করা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেন।

 

আবার কেউ কেউ বহির্বিভাগের বাহিরে রোগীর হাত থেকে টিকেট নিয়ে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এতে রোগী  কিংবা রোগীর স্বজনরা বিরক্ত হলেও তারা এই কাজটি বীরদর্পে করে যাচ্ছেন। বর্হিরবিভাগ থেকে রোগী চিকিৎসা নিয়ে বেরুলেই গিরে ধরেন তারা। ফলে দিনদিন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের (এমআর) দৌরাত্ম্য সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এই হাসপাতালে।

 


হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, দুপুর একটার পূর্বে কোন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু তারা এই শর্তটি অনেকেই মানছেন না। অনেক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে একটা বাজবার অনেক আগেই হাসপাতালের ভিতরে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। এদের সাথে হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটা সখ্যতা রয়েছে। তাই এরা একটার পূর্বেই চিকিৎসকদের রুমে প্রবেশ করে ভিজিট করে থাকেন। এসময় দেখা গেছে চিকিৎসকরা ওই প্রতিনিধির কথাও শুনেন আবার রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন। এতে অনেক রোগী বিরক্ত হলেও যেন কিছু করার নেই।


এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিজেদের কোম্পানির ঔষধ যাতে লিখেন এজন্য মোটা অংকের কমিশন দেন তারা। কোন কোন চিকিৎসক সাপ্তাহিক কোন চিকিৎসক পাক্ষিক আবার কেউ মাসিক হারে এই টাকা নিয়ে থাকেন। আবার প্রতিদিন তাদের উপহার হিসেবে ঔষধসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেওয়া হয়। এজন্য তারা রোগী বেড় হলেই টিকেট নিয়ে দেখেন তার কোম্পানির ঔষধ চিকিৎসক লিখেছেন কিনা। তারা জানান, অনেক সময় টাকা নিয়ে চিকিৎসক লেখেন না তাই কোম্পানি থেকে অডিট করার জন্য লোকও নিয়োগ দিয়েছেন।  

 


 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশীর ভাগ নিম্নমানের ঔষধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের সঙ্গে চুক্তি করে থাকেন। আর এসব ঔষধ কোম্পানি গুলি সরকারি হাসপালের চিকিৎসকদের টার্গেট করেন। কারণ হিসেবে জানাগেছে নিম্নমানের ঔষধ সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাই বেশী লিখেন। চিকিৎসকরাও বোঝেন সরকারি হাসপাতালে বসে এসব নিম্মমানের কোম্পানির ঔষধ লিখলে এর দায় বর্তাবে না তাদের উপর। রোগী ভাল হোক আর না হোক তাদের তাতে কিছু যায় আসে না। কমিশন পেলেই নিম্নমানের কোম্পানি ভাল কোম্পানি হয়ে যায়।

 


ফতুল্লার মো. আলেক মিয়া জানান, ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে সাধারণ চিকিৎসা বন্ধ। তাই তার বাবাকে নিয়ে এসেছেন এই হাসপাতালে। অসুস্থ বাবাকে এই হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাহির থেকে প্রায় হাজার টাকার ঔষধ কিনেছেন তিনি। শুধু তাই নয় ঔষধ কিনে আবার দেখাতে বলেছেন। এছাড়া কিছু পরিক্ষা-নিরীক্ষাও দিয়েছেন চিকিৎসক। বাহির থেকে পরিক্ষা করে আনতে বলেছেন। আলেক এর মতো আরেক জন রোগীর স্বজন জানান, তারাও প্রায় আটশত টাকার ঔষধ কিনেছেন। জরুরী বিভাগে হাসপাতালের সাপ্লাই আছে এমন ইনজেকশন বা ঔষধ তারা লিখেন না এমন অভিযোগই রোগীদের বেশী।


এই ব্যাপারে ১’শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার (আরএমও) ডা. আসাদুজ্জামানকে ফোন করা হলে তিনি এই বিষয়ে কোন কথা না বলে অফিস টাইমে ফোন করতে বলেন।  
 

এই বিভাগের আরো খবর