সাহিত্য ডেস্ক (যুগের চিন্তা ২৪) :
এলোমেলো
(হুমায়ুন কবির)
সময়, হ্যাঁ ইহলোকের এই জীবনের সময়-
সেতো যত যাযাবর কামনা, বাসনা আর লালসার ক্ষণকালের ভিড় মাত্র।
একটা অস্থায়ী ছেলেমানুষি উৎসবের কাল-
ছোট বা বড়, কিন্তু অসীম নয় মোটেই।
কখনো আদুড় গায়ে ছেলেগুলোর ছুটোছুটি-
কানামাছি বা গোল্লাছুট খেলা।
উসকো-খুসকো চুল,
চিরুনি হাতে কোন কিশোরীর উদাস চোখে
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা; কোন তাড়া নেই-
হল্লার কঠিন আওয়াজও মুক হয়ে পড়ে থাকে একপাশে।
একই মাটি, একই বাতাস আর প্রায় একই আয়োজন
তবু দু’রকম জীবনের শিকড়ে বাঁধা পড়া দু’পদের জীবন।
অনেকের- অস্থির সবাই ওরা,
নেই যে সময়, একেবারেই নেই,
নিতে চাও তো তাড়াতাড়ি নিয়ে নাও
ফুরিয়ে যাবে এখুনি।
আর ওরা হল- আছি চিরকাল; কিছুই ফুরায় না;
কিসের তাড়া এতো!
দু’দিনের ফুর্তির যত জঞ্জাল এখানে এনে ভিড় করে
কেন যেন মনে হচ্ছে,
এইবার মেঘলা ভোরের আকাশে আলোর আভা জেগে উঠবে।
ধ্যাত, তবুও ওরা ঘুমিয়ে থাকে-
বালিশে মাথাটা ঠুসে জোর করে ঘুমিয়ে থাকে।
কা কা, পিউ পিউ, পিক পিক- নির্মল ভোরের নীরব বাতাসে
এইবার পাখির ডাকের সাড়াও বেশ মুখর।
তবুও কারো নিঃশব্দ, আবার কারো নাক-ডাকার শব্দও
কানে বড্ড বাজে এই সময়টাতে।
কাঁটা-লতার প্রকাণ্ড ভার কোন এক বাড়িটাকে বিঁধছে সজোরে
কিন্তু কোন উহ আহ নেই-
এক্কেবারে পাহারের মতো গম্ভীর।
এরই মাঝে তাজা প্রাণগুলি আলো-বাতাসের সঙ্গে
হেলেদুলে আর নেচে নেচে বেড়াতে চাইছে।
বিস্ময়, এখানে জীবন্ত কারো কাছে
আবার কারো কাছে-
বিস্ময় এখন তিরোহিত সেই সুদূর কোনখানে।
ক্লান্ত সবাই,
তবুও ক্লান্তির চেহারায় জোর করে ফুটিয়ে তোলা ফুল্লতা
যেন আজীবন অটুট এক অসীম অটলতা!