মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১

কট্টর সমালোচকরা নির্বাচনকালীন সময়ে ‘হিরো থেকে জিরো’

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০২৩  

 

জাতীয় নির্বাচন আসলেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতার খোলশ উম্মেচিত হয়ে যায়। বছরব্যাপী বিভিন্ন সভা সমাবেশে গলা ফাটিয়ে লাঙ্গল প্রতীকের সাংসদদের নিয়ে কট্টর সমালোচনা এবং নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসন থেকে লাঙ্গলের দূর্গ ভেঙ্গে ফেলে পাঁচটি আসনেই আওয়ামীলীগের সমর্থিত সাংসদ অধিষ্ঠিত করতে মাতোয়ারা থাকেন।

 

কিন্তু বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোর ন্যায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের জাপার কট্টর সমালোচনাকারী নেতারা নেতিয়ে পড়েন। তাছাড়া জাপার অন্যতম দূর্গ খ্যাত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের সমর্থিত নেতাদের মনোনয়ন না দেয়ায় বর্তমান জাপার সাংসদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দূর থাক জাপার সাংসদের বিপরীতে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেননি।

 

উল্লেখ্য, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এখনো জোটগত ভাবে প্রার্থী না দেয়া হলেও প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ডামি প্রার্থী হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে বছরব্যাপী জাপার সাংসদের ব্যাপক সমালোচনা করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতারা চরম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে জাহির করে হিরো সাজলেও নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী হিসেব নিকেশে তারা জিরো থাকেন সর্বদা।

 

সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বছর জুড়েই জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের চলে কট্টর সমালোচনা। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরেই জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে গিয়ে সাংগঠনিক ভাবে দুর্বলতা সৃষ্টি এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে জেলা এবং মহানগরের নেতারা তোপের মুখে রয়েছে। কারণ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন এলাকাতেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সূতিকাগার পাশাপাশি জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের রাজনীতির উৎপত্তিস্থল।

 

কিন্তু দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নেই। জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়ার কারণে বরাবরের মত জাপার সাংসদ নির্বাচিত হচ্ছে। যার কারণে প্রায় সময়ই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা এবং মহানগরে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা বর্তমান এবং সাবেক নেতারা নানা সময়ে রাজনৈতিক বক্তব্যে জাপার বর্তমান সাংসদের নিয়ে কট্টর সমালোচনা করে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার মনোনীত করার জন্য দলীয় প্রধানের নিকট জোর দাবি জানাত।

 

তবে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও সেই দাবির ভাটা পড়ে। কারণ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ছয়জন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও তাদের কারও ভাগ্যে জোটেনি নৌকার মনোনয়ন। কারণ নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নৌকার কোন প্রার্থীই দেয়া হয়নি।

 

কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী দেয়া না হলেও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা প্রত্যাশী ছিলেন তারা হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হাই, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি.এম আরাফাত, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী রেজা উজ্জল ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল (ভিপি বাদল)।

 

কিন্তু এবার তারা মনোনয়ন না পেলেও তাদের জাতীয় পার্টির সাংসদের বিপরীত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত সুযোগ ছিল। কারণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ডামি প্রার্থী হওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বছর ব্যাপী জাপার বিরোধীতা করে মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও ডামি প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে জাপার মনোনীত প্রার্থী সেলিম ওসমানের বিপরীতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামীলীগের কেউ মনোনয়ন পত্র দাখিল করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দূর থাক মনোনয়নপত্র কেউ ক্রয় করেননি।

 

এতে করে তৃণমূলের নেতারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছে। পাশাপাশি তারা সমালোচনা করে বলছেন, জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা সারাবছর জাপার বিরুদ্ধাচরণ করে লাইম লাইটে থেকে হিরো থাকলেও নির্বাচনকালীন সময়ে জাপার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে দূর থাক উল্টো জিরো হয়ে যান। এস.এ/জেসি 

এই বিভাগের আরো খবর