শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কমছেই না সবজি-মাংস-ডিমের দাম, বাড়ছে ক্রেতাদের ক্ষোভ  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৪  


বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দামে অসহায় হয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, পেপে, ধুন্দুল, বেগুন, ঝিঙাসহ নানান সবজির দাম উর্ধ্বমুখী। হাঁস-মুরগির মাংস, মাছ ও ডিমের দামও কমছে না। যার ফলে সাধারণ ক্রেতাদের মনে ক্ষোভ বাড়ছে।

 

 

গতকাল রবিবার (১৪ জুলাই) নগরীর দ্বিগু বাবুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ পাল্লা প্রতি ৫৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়। চায়না পিয়াজ প্রতি পাল্লা ৫২০ টাকায়, কেজিতে ৯৮ থেকে ১০৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে বেগুনের দাম ১০০ টাকা ছিল, যা বর্তমানে কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

 

 

করলার দাস ১২০ টাকায় সপ্তাহ ধরে স্থির রয়েছে। ডায়মন্ড আলু পাল্লা প্রতি ২৭০ টাকা, লাল আলু ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মরিচ মানভেদে ১৮০ থেকে কেজিতে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর খুব একটা দেখা না মিললেও অল্প কয়টি দোকানে ১৮০ টাকা করে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
 

 


ক্রেতারা বলছেন, কাচা বাজার থেকে নিয়ে মাছ-মাংস প্রায় সকল পণ্যেই বিক্রেতারা বাড়তি দাম হাকছেন। এতে করে মধ্যবিত্ত থেকে নিয়ে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর মানুষরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটছে। সেই সাথে বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় পণ্যের সরবরাহ কম। এতে করে পণ্যের দাম কিছুটা বেশি।
 

 


বিক্রেতা বেলায়েত হোসেন জানান, ফরিদপুর, রাজশাহী থেকে পিয়াজ আসছে। পাল্লা প্রতি দেশী পেঁয়াজ ৫৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়তির দিকে। ইন্ডিয়া থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে বাজারে দাম কমবে।
 

 


সবজি বিক্রেতা মো. শাহিন জানান, টমেটোর আমদানি এখন অনেকটাই কম। ক্রেতারা তেমন নিচ্ছে না বলে কেনা দামেই ছেড়ে দিচ্ছি। আজ ১৮০ কেজিতে ইন্ডিয়ার টমেটো বিক্রি করেছি। বন্যার কারণে অনেক জায়গা থেকে সবজি আসছে না। যার কারণে সবজির দাম কমছে না।
 

 


বাজার ঘুরে দেখা যায়, উস্তা কেজিতে ৮০ টাকা, শশা ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, বাধা কপি ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা, গাজর ১০০-২০০ টাকা, কাকরোল ১০০ টাকা, ঢেরশ ৮০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, লেবু হালিতে ৪০-৫০ টাকা, ডাটা শাক ৩০ টাকায়, পুই শাক ৫০ টাকা, কচুরমুখী পিছ প্রতি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশি আদা ২৭০-২৮০ টাকা,  চায়না আদা ৩০০-৩২০ টাকা, সবুজ ক্যাপ্সিকাম ২৬০ টাকা, লাল ও হলুদ ক্যাপ্সিকাম ৩৬০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
 

 


বাজারে ব্রয়ালার মুরগি কেজিতে ১৮০ টাকা, কক মুরগি ২৮০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ২৮০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ৩৫০ টাকা, সাদা লেয়ার মুরগি ৪০০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মুরগি ৩২০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ৩৫০ টাকা, দেশী মুরগি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

 

মুরগির সাদা ডিম হালিতে ৪৬ টাকা, লাল ডিম ৪৮ টাকা, হাসের ডিম ৬৫-৭০ টাকা ও কোয়েলের ডিম ১৪ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। খাসির মাথা ৩০০-৩৫০ টাকা, খাসির কলিজা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়।
 

 


বাজার করতে আসা চাকুরীজীবী বিল্লাল হোসেন বলেন, বাজারে আগুন লেগে আছে। সবজি, মাছ, মাংস, ডিম কোন কিছু বাদ নেই। বাড়তি দামের কারণে মাছ মাংসের থেকে সরে এসে শুধু সবজি নেই। কিন্তু সেই সবজিরও দাম বেশি। টমেটো, আলু, পেঁয়াজে দাম কমছেই না। সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের কাছে অনুরোধ রইলো, বাজারে পণ্যের দাম কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।
 

 


গৃহীনি বদরুন্নেছা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম এখন বেশি। অবস্থা এখন এমন যে, আলু ভর্তা ডাল ভাত খেতেও এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর