রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

কিশোরগ্যাং লিডার রহমান-আশিকে অতিষ্ঠ মাসদাইরবাসী

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৪  

 

 

ফতুল্লার মাসদাইর কেতাব নগর এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী কিশোরগ্যাং লিডার আব্দুর রহমান ও তার ছেলে আশিক ওরফে টোকাই আশিকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মাসদাইরবাসী। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা, চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, মাদক, ইয়াবাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চক্রটির সদস্যদের পুলিশ বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করে জেলে পাঠালেও বের হয়ে ফের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয়রা জানান।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুখ্যাত শাহ নিজামের পালিত ক্যাডার কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকার ত্রাস চুন্নুর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত এই সন্ত্রাসী আব্দুর রহমান। তিনি বিগত দিন থেকেই চুন্নু বাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে বিভিন্ন হামলা-ভাঙচুর-ছিনতাই-অস্ত্র-হত্যা মামলার হোতা হিসেবে রয়েছেন তিনি। সেই সুবাদে তিনি বিভিন্ন হত্যার আসামী বনে গেছেন। আলোচিত মাসদাইর ইব্রাহিম গামেন্টর্স কর্মী হত্যা মামলা আসামী, কুতুবপুর এলাকায় আজাদ ডাইংয়ের আজাদ হত্যা মামলার আসামী। 

 

বর্তমানে উত্তর মাসদাইর কেতাব নগর এলাকায় লুৎফর রহমান ইঞ্জিনিয়ার রোডের পাশে সরকারি জমি জবর-দখল করে স্থাপনা তৈরি করেছে বসবাস করছেন। অন্যদিকে তিনি তার ছেলেকে বেপরোয়া বানিয়ে বাপ-বেটা মিলে কিশোরগ্যাং পরিচালনা শুরু করেন। তার ছেলে আশিক ওরফে টোকাই আশিক মাসদাইর শ্মশান, শেরে বাংলা রোডে মাদক ব্যাবসাসহ বিগত দিনে রোকেয়া স্কুল ভাঙচুর, মাসদাইর ডিস অফিস ভাঙচুরসহ বহু অপকর্মে জড়িয়ে আছে তারা। তা ছাড়া তিনি তার ছেলেকে দিয়ে মাসদাইর শ্মশান থেকে শুরু করে শেরে বাংলা রোড পর্যন্ত প্রতিটি দোকানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে তুলেছেন চাঁদা। 

 

লুৎফর রহমান ইঞ্জিনিয়ারের ছেলের সাথে বিগত দিন থেকেই চাঁদা দাবী করে না পাওয়ায় গত ১০/১২ বছর যাবৎ ভয়ভীতি দেখিয়ে নিশ্চুপ রেখেছেন। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে এই আব্দুর রহমান ও তার ছেলে আওয়ামী লীগের ভোল পাল্টিয়ে কিশোরগ্যাং বাহিনী নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, রাইফেল ক্লাব ভাঙচুর করে লুটত্বরাজ চালায়। পরবর্তীতে মাসদাইর-ফতুল্লায় বিভিন্ন জায়গায় চুরি-ছিনতাইসহ আরো বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

 

এদিকে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো স্বরূপের ফিরে না আসায় তাদের চাঁদাবাজির মহোৎসব পালিত হয়েছে। কিছুদিন পূর্বে মসজিদের মতোয়াল্লির কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবী করে না পাওয়ায় মসজিদের টিন খুলে নিয়ে যায় আর কাউকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেখলে পা কেটে ফেলার হুমকি ও প্রধান করা হয়। যাকে ঘিরে মসজিদের মুতয়াল্লি ফতুল্লা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন। বর্তমানে ভোল পাল্টিয়ে আরেক নেতার শেল্টারে এই আব্দুর রহমান ও আশিক ওরফে টোকাই আশিক বেপরোয়া হয়ে উঠা শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছে এলাকাবাসী।

 

স্থানীয় নজরুল ইসলাম তৈমূর জানান, আব্দুর রহমান ও তার ছেলে আশিক বিগত দিনে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের নাম বলে এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জমি জবর-দখল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, সাধারণ মানুষকে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাইসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যে তারা করে না। কিছুদিন পূর্বে ও আমার কাছে টাকা চাইলে আমি না দেওয়ায় আমার নিকাশনের পানি বন্ধ করে দিয়েছিলো পরবতীূতে আমি ফতুল্লা থানায় অভিযোগ করে আবারো পানি চালু করি পরে তারা এসে খুলে দিয়ে যায়। তিনি বলেন, এর আগে আমাদের মাসদাইর পুলিশ লাইন এলাকায় আলী নামের আরেকজন সন্ত্রাসী ছিলো তিনি মারা যাওয়ার পর তার ভাই আব্দুর রহমান ও ছেলে কিশোরগ্যাং লিডার আশিক বেপরোয়া হয়ে। 

 

তারা বর্তমানে মাসদাইর কেতাব নগর পুলিশ লাইন এলাকায় রাস্তার পাশেই সরকারি জমি দখল করে বসবাস করছেন। সেখানে একটি চোরাই অটো গ্যারেজ রয়েছে সেখানে তারা বহিরাগতদের নিয়ে আস্থানা বানিয়ে সাধারণের ভয়ভীতি দেখায়। তিনি বলেন, এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের প্রতিবেশী নজরুল তার নিজস্ব জমিতে মসজিদ স্থাপনা করলে সেই এলাকায় অপকর্ম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলে মহল্লাবাসী সন্তুষ্ট হয়। কিন্তু মসজিদের কারণে তারা কোন প্রকারের অপকর্ম করতে না পারায়। তারা এখন মসজিদ মালিক পক্ষের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। তিনি সেই টাকা দিতে অনীহা করায় মসজিদে যাতায়াত করা মুসুল্লিদের বড় বড় রাম-দা, অস্ত্র নিয়ে ভয়ভীতি দেখানো শুরু করে।

 

 আর সকলকে এই মসজিদে নামাজ পরতে আসতে না করে। গতকালকে শুনলাম মসজিদের একটি বাউন্ডারি ভেঙে ফেলেছে তারা। তা ছাড়া মসজিদের টিন খুলে বেঁেচ ফেলার জন্য। আরো বলে এখানে এই বাড়ির মালিক আসলেউ ওকে মেরে ফেলবো। এর ৫/৭ মাস পূর্বে ও আশিক তার কিশোর বাহিনী নিয়ে এসে মাসদাইরে একটি অফিস ভাঙচুর ও লুট করে সেই বিষয়ে ও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিগত দিনে নয়ামাটি এলাকায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী চুন্ন বাহিনীর নামে বেনামে এই সকল অপকর্ম চালাতো। বর্তমানে ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে ও বিএনপির কিছু লোকের সাথে আতাঁত রেখে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই বাহিনীর সদস্যরা।

এই বিভাগের আরো খবর