বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

গরুর চোখের প্রতি আমার দূর্বলতা আছে : রাজিব

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): মনের গভীরে ছিলো শিক্ষক হওয়ার সুপ্ত বাসনা। মা চাইতেন ছেলে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি হয়েছেন একজন আপাদমস্তক রাজনৈতিক কর্মী। ভিপি রাজিব নামেই রাজনীতির মাঠে বেশি পরিচিত।

ব্যক্তি জীবনে দুই সন্তানের জনক রাজিবের বিশেষ দূর্বলতা কোরবানির গরুর চোখের প্রতি। আড্ডা পাগল জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজিব কথা বলেছেন যুগের চিন্তা ২৪ এর ঈদ আড্ডায়। পাঠকদের জন্য তার অংশ বিশেষ তুলে ধারা হলো।


যুগের চিন্তা: কেমন আছেন?

রাজিব: যে কোন পরিস্থিতিতে মুসলমান হিসেবে বলতে হয় ভাল আছি। তাই বলছি আলহামদুলিল্লাহ!  কিন্তু কেবল আমিই না সরকারের সঙ্গে যুক্ত গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া আর তেমন কেউই ভাল নেই।

যুগের চিন্তা: বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তিন শব্দে মূল্যায়ণ করতে পারবেন?

রাজিব: বিভিষিকাময়, অপ্রত্যাশিত, যেটা থেকে মুক্তি অনিবার্য।

যুগের চিন্তা: ঈদের পরিকল্পনা কী?

রাজিব: তেমন কোন পরিকল্পনা নেই। এবার দীর্ঘদিন পর নানা বাড়িতে ঈদ করতে যাবো। 

যুগের চিন্তা: ঈদের পরের আন্দোলনের কথা বলুন।

রাজিব: ঈদের পরে যে আন্দোলন হবে এমন কোন বিষয়ইতো আমি জানি না। হুটহাট একটা আন্দোলন ডাক দিবে আর আন্দোলন হয়ে যাবে এমনটাতো নয়।
যুগের চিন্তা: শৈশবের ঈদের কথা মনে পড়ে?

রাজিব: এমনিতে আমার কোরবানির ঈদের চেয়ে রোজার ঈদই বেশি ভাল লাগে। ছোটবেলা থেকে কোরবানি দেয়ার ব্যাপারে আগ্রহও কম ছিলো। গত চার পাঁচ বছর যাবৎ নিজে গরু কিনছি। গরুর স্বাস্থ্যের চেয়ে আমার কাছে গুরত্বপূর্ণ হলো গরুর চোখ। গরুর চোখের প্রতি আমার দূর্বলতা আছে। আমি গরুর চোখে চোখে কথা বলি। কোরবানির গরু কেনার সময় এটা একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে। 

যুগের চিন্তা: কেমন করে আসলেন রাজনীতিতে?

রাজিব: জিয়াউর রহমানের প্রতি ভাললাগা থেকেই ছাত্রদলে আসি। মানুষের জন্য কাজ করার প্রত্যয় নিয়েই রাজনীতিতে আসা। রাজনৈতিক জীবনের শুরু ৯০ এর পর থেকে। সক্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হই বেঙ্গালুর থেকে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৯৭ সাল থেকে। তখনই একবার ছুটিতে আসলে আমাকে গুলি করা হয়। তারপর থেকেই রাজনীতিতে আরো সক্রীয় হয়ে উঠি।

যুগের চিন্তা: রাজনীতিবিদ না হল কি হতেন?

রাজিব: বাবার অনেক স্বপ্ন ছিলো আমাকে নিয়ে। মা স্বপ্ন দেখতেন ডাক্তার হবো। আমি কলেজ ইউনোভার্সিটির শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। এটা আমার সুপ্ত ভাসনা ছিলো আজই প্রথম বললাম এই ইচ্ছার কথা। এমনিতে রাজনীতির প্রতি ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ ছিলো। 

যুগের চিন্তা: রাজনৈতিক সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে বলুন। 

রাজিব: রাজনৈতিকভাবে সফলতা তেমন কিছু নেই। তবে এতটুকু বলতে পারি কর্মী হিসেবে কখনো আপোষের রাজনীতি করিনি। সত্য বলেছি সেটা দলের বিপক্ষে গেলেও। আর একটা বিষয় রাজনৈতিক জীবনে কর্মীদের ভালবাসা পেয়েছি। ব্যর্থতা হলো ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি হওয়ার পর কমিটি গুলো করতে পারিনি। এর জন্য অবশ্য আমি একা দায়ী নই। দলের রাজনৈতিক সিস্টেমটাই দায়ী।

যুগের চিন্তা: পরিবারে কে কে আছেন?

রাজিব: পরিবারে বাবা, মা আছেন। আমার স্ত্রী, এক মেয়ে এক ছেলে নিয়ে আমার সংসার। মেয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়ে, ছেলের বয়স সাড়ে চার বছর।

যুগের চিন্তা: অবসরে কী করতে পছন্দ করনে?

রাজিব: অবসরে আড্ডা দিই। আমি আড্ডা পাগল মানুষ।

যুগের চিন্তা: নিজের ভালোমন্দ দিক নিয়ে বলুন।

রাজিব: বেশি আবেগ প্রবন এবং মানুষকে বিশ্বাস করি। মানুষকে বিশ্বাস করে বারবার ঠকি তারপর আবার বিশ্বাস করি। ভালদিক বলতে সবসময় মানুষকে সহযোগীতা করতে পছন্দ করি এটাই হয়তো ভাল দিক।

যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে কী হারিয়েছেন আর কী পেয়েছেন?

রাজিব: প্রচুর সময় হারিয়েছি। অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারিনি। বাবা মায়ের মনে একটু কষ্ট আছে আমর রাজনীতি নিয়ে। আর যা পেলাম তা হচ্ছে মানুষের অজ¯্র ভালোবাসা। 

যুগের চিন্তা: ভাবীর সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?

রাজিব: আমার বিয়ের জন্য বাবা মা মেয়ে পাচ্ছিলো না। আমি তখন তোলারাম কলেজের ভিপি। একটা বিচার নিয়ে এক ভদ্র লোক আসলেন। তার মেয়ে কে, কেযেন ডিস্টার্ব করে। পরদিন সেই মেয়ে আসলেন সংসদে। আমি বসে আছি এমন সময় সালাম দিলেন। আমি ওয়ালাইকুম সালাম বলে চোখটা তুললাম মাত্রই তার চোখে চোখ পড়লো।

তখনই আমি ভাবলাম আমি আমার জীবন সঙ্গী পেয়ে গেছি। তারপর পারিবারিকভাবে বিয়ে। তার সহায়তা, ত্যাগ, ভালবাসার জন্যই আজও আমি রাজনীতি করতে পারছি। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। যদিও তাকে কখনো বলি না আমি তার প্রতি কতোটা কৃতজ্ঞ।

যুগের চিন্তা: রাজনীতিতে কৃতজ্ঞ এমন কেউ আছেন?

রাজিব: শুধু একজনের প্রতি কৃতজ্ঞ নই। ছাত্রদলের শুরুতে মাজহারুল ইসলাম জোসেফের নেতৃত্ব মানতাম। একটু বড় হওয়ার পর মমিনুল্লাহ ডেবিট ভাইকে নেতা মেনেছি। তারপর তৈমূর ভাই, গিয়াস ভাই তাদের সঙ্গে ভাল সময় কেটেছে। তবে বর্তমানে নজরুল ইসলাম আজাদ ভাইকে ভাল লাগে। 

যুগের চিন্তা: দলের নেতাদের প্রতি যদি কিছু বলতে চান।

রাজিব: প্রত্যেকের একটা স্টেইজ আছে। যে যার স্টেইজে কাজ করতে হবে। সকলে সকলের যায়গায় কাজ করতে না পারলে আন্দোলন হবে না। সাংগঠনিক না কেবল রাজনীতির আদর্শটা মেনে যদি যে যার যায়গায় রাজনীতি করে তবে বিএনপিকে ঘুরে দাড়াতে একমাস সময় লাগবে। রাজনীতিতে সৎ সাহসের প্রয়োজন হয় আমাদের নেতাদের সেটা নেই।

যুগের চিন্তা: সময় দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ঈদের শুভেচ্ছা নিবেন।

রাজিব: আপনাকেও ধন্যবাদ। নারায়ণগঞ্জবাসীসহ সকল নেতাকর্মীকে ঈদের শুভেচ্ছা। 
 

এই বিভাগের আরো খবর