রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

গ্রামীণ রেস্তোঁরার ৩য় তলায় জমজমাট জুয়ার আসর

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২ মার্চ ২০২৪  

 

# প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী

 

নগরীর কালীরবাজার ২৭,এ,সি রোড গ্রামীন রেস্তোঁরার ৩য় তলায় সান ফ্লাওয়ার ক্লাবের নামে ফ্লাট ভাড়া নিয়ে প্রভাবশালীদের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। যা নিয়ে বর্তমানে এলাকার সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন। জানা গেছে, গত ৫ মাস যাবৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগার সামনে দিয়েই শহরে এই ভবনে নিয়মিত বিকাল ৫ টা থেকে রাত ১২ টা বা তার ও উর্ধ্বে ও নিয়মিত প্ররচালিত হচ্ছে এই জুয়ার আসর।

 

এই জুয়ার আসরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই ব্যবসায়ী রুমি চৌধুরী-বসবাস করেন মার্ক টাওয়ারের ৮ম তলায়, ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া-বসবাস করেন উত্তর চাষাড়া কাজী ভবনের ২য় তলায়, বন্দরের আওয়ামী লীগ নেতা কাজিম উদ্দিনের সহযোগী বন্দর আলম চাঁন স্কুলের সভাপতি ও চাষাড়া জামান টাওয়ারের মালিক মঞ্জু মেম্বার, ২নং গেইট স্নোবার রেন্টুরেন্টের সাবেক মালিক বাচ্চু মিয়া ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের ভাতিজা আশরাফ-বসবাস করেন আমলাপাড়া এলাকায়।

 

এদের নেতৃত্বে কালিবাজারের গ্রামীন রেস্তোঁরার ৩য় তলায় জুয়ার বোর্ড পরিচালিত হয়। আর এখানে উপস্থিত থেকে জুয়ায় মগ্ন হয়ে থাকে, পাঠানতলী এলাকার ফুটবলার বাবুল, বরবত এন্টার প্রাইজের মালিক আসলাম মিয়া, কৃষকলীগ নেতা ইয়াসিন উভয় পাঠানতলীর বাসিন্দা, নগর খানপুর এলাকার সজল দাস, সিদ্ধিরগঞ্জ চৌধুরীবাড়ি এলাকার চায়ের দোকানদার সেলিম, পাইকপাড়ার বোটকা মামুন, পাইকপাড়া এলাকার বক্কর মিয়া, ভোলাইল গেদ্দারবাজার এলাকার আফসার, মাসদাইর গাবতলী এলাকার আব্দুল জব্বার, জালকুড়ি এলাকার ঝুট ব্যবসায়ী জাকির, আমলাপাড়া এলাকার কুটু মিয়া, দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকার দেলু ওরফে কানকাটা দেলু, কাশীপুরের কামাল ওরফে গুজা কামাল, আনোয়ার, আজাদ, আওয়ালসহ আরো অনেকেই।

 

এ নিয়মিত লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়ার আসর বসায় এই ভবনে। এই জুয়া থেকে টাকা তুলে নিয়মিত ২ হাজার টাকা সাইড করে রাখা হয় ফ্লাট ভাড়া বাবদ। এ ছাড়াও বোর্ড প্রতি ৫০০ টাকা করে তুলে একত্রিত করে নিয়মিত মোটা অংকের কিছূ টাকা মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পাশেই যমুনা ব্যাংকে রাখা হয়। এই টাকা থাকে রুমি, মঞ্জু ও বাবুলের নেতৃত্বে। ইতিমধ্যে ২ মাসে প্রায় ২ লাখ টাকা ব্যাংকে জমিয়েছে তারা বোর্ডের টাকা। আবার মদ খেয়ে ও এলাকায় সৃষ্টি করে নানা বিশৃঙ্খলা। যা নিয়ে অতিষ্ট এলাকাবাসী।

 

এ ছাড়া আরো জানা গেছে, এর পূর্বে ডিআইটি গুলশান হলের দ্বিতীয় তলায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে কালচার ক্লাব নামে আরেকটি জুয়ার আস্থানা তৈরি করেছিলেন এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। কিন্তু গুলশান হলের নানা পরিবর্তনে সেখান থেকে তারা উচ্ছেদ হয়ে বর্তমানে বাসা বেধেছে কালীরবাজার গ্রামীন রেস্তাঁরা ভবনের ৩য় তলায়। বর্তমানে প্রভাবশালী কিছু নেতার ছত্রছায়ায় এই কর্মকান্ড দিন দিন বেড়েই চলেছে।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, এখানে জুয়ার নেতৃত্ব ধারী একজন রয়েছে যার নাম আশরাফ উনি আমলাপাড়ায় নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। সর্বদা উনি উনার চাচা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের নাম বিক্রি করে এলাকায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছেসহ এলাকাবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। যাকে ঘিরে কেউ তার উপরে কথা বলতে সাহস পায় না।

 

তা ছাড়া আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের-১ আসনের সাংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী গাজীর সাথে ও তার ভালো সখ্যতা রয়েছে। যাকে ঘিরে নিয়মিত তারা জুয়া খেলে এলাকায় বিশৃঙ্খলা করলে ও কেউ কিছু বলতে বিন্দুমাত্র সাহস পায় না। অপর দিকে রয়েছে নগর খানপুর এলাকার সজল দাস উনি সরকারী ভাবে মদের লাইসেন্স পাওয়া ব্যক্তিত্ব যাকে ঘিরে উনি সব সময় এলাকায় বড়ােই দেখায় আমরা সরকারি লোক কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না। আর লাইসেন্স দেখিয়ে মদ কিনে এনে উনি এখানে বা এলাকায় মদের ব্যবসা ও চালায়।

 

অপর দিকে আরেকজন রয়েছে কৃষকলীগ নেতা ইয়াসিন। উনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে যেখানে সেখানে পুলিশের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে কাবু করে রাখেন তিনি। আরেকজন বাচ্চু মিয়া উত্তর চাষাড়া কাজী ভবনের ২য় তলায় বসবাস করেন। আর তার আশে পাশেই রয়েছে নানা ডিবি ও পুলিশের বসবাসকৃত স্থান। যাকে ঘিরে উনি তাদের সাথে ভালো সখ্যতা ও করে ফেলেছিলেন। উনি নিয়মিত এখানে জুয়া বসানোর আরেকজন শেল্টার দাতা। কিছুদিন পূর্বে ভূসিদূসতা নিয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু নিউজ পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশ হতে দেখা গেছে।

 

এ ছাড়া এলাকাবাসী সূত্রে আরো জানা যায়, গত ১০ মার্চ রাতে মদ খেয়ে ফ্লাটে চিল্লাফাল্লা করেন সজল দাস, রুমি, বাবুল ও কুটু যাকে ঘিরে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পরেছিলেন। পরবর্তীতে কালীরবাজারের আরেকজন বাড়ির মালিক শাহজাহান তাদের ফ্লাটে গিয়ে তাদের সাসিয়ে দিয়ে আসেন আর বলেন জুয়া খেলে যাই খেলেন ভালো মতো খেলবেন কোন চিল্লাফাল্লা করলে বাড়ির মালিকের সাথে সকলে একত্রিত হয়ে বিষয়টি অবগত করবো।

 

এদিকে নিয়মিত এই ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্বরা নানাভাবে এলাকাবাসীকে জিম্মি করে জুয়ার জমজমাট ব্যবসা পরিচালনা হলে ও পুলিশের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে জনমনে। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর