সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

জেলা বিএনপি নিয়ে নীল নকশা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট :

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৪  

 
# জেলাতে গিয়াসউদ্দিনই সেরা দাবী তৃণমূলের  
# গত কয়েকদিনে বোঝা যাচ্ছে গিয়াসবিহীন শূন্য জেলা বিএনপি

 

আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনকে ঘিরে বিএনপির একাংশ বিতর্কিত নেতারা জোট বেধেছে। গত মাস থেকেই গিয়াস উদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জের সাবেক গডফাদার সাংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে তুলনাসহ গিয়াস উদ্দিনকে নিয়ে অপপ্রচার লক্ষ্য করা গেছে। যা নিয়ে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নাখোশ হয়েছেন বলে শোনা গেছে। বতর্মানে জেলা বিএনপির দায়িত্বে থাকায় বিএনপি যাতে কোন প্রকারের দূর্নামে জড়িয়ে না পরে সেদিকে বৃদ্ধপরিকর রয়েছেন এই প্রবীন নেতা গিয়াস উদ্দিন। যে বিএনপি নেতাই নারায়ণগঞ্জে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করতে চাচ্ছে সে নেতাকে প্রমানসহ দল থেকে বহিস্কার ও শোকজ করছেন গিয়াস উদ্দিন। যাখে ঘিরে দখল দারিত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পরা বিভিন্ন অংশে গিয়াস ঠেকাও চক্রান্তে মেতে উঠেছে। 

 

ইতিমধ্যে জেলা বিএনপির পদ থেকে গিয়াসকে সরাতে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ও রাজধানীর একাধিক জায়গায় সেই একাংশের নেতারা বসেছেন, আলোচনা করে ছক কষছেন। টার্গেট আসছে নির্বাচন ও জেলা বিএনপির কমিটি পুনর্গঠন। ছক কষা নেতারা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে এখন থেকেই 'জেলা বিএনপির কর্তৃত্ব হাতে নিতে না পারলে মনোনয়ন বা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার সহজ হবে না। এজন্য সহযোগী সংগঠনের কমিটিগুলোও নতুন করে নিজেদের আয়াত্তে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিকে তারা নয়া কমিটির লক্ষে কোটি কোটি টাকার একটি বাজেট তৈরি করেছেন। এ টাকা খরচ করা হলে কমিটিগুলোর শীর্ষ পদে নিজেদের লোকজন পদায়িত করা হবে জানিয়েছেন। টানা ২ বছর জেলা বিএনপির কমিটির মাধ্যমে একের পর এক চমক লক্ষ করা গেছে গিয়াসের মাধ্যমে। শুধু একটাই কলঙ্ক রয়েছে কমিটি পূর্ণাঙ্গতে ব্যর্থতা যা পুরোই সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের লোভ লালসায়। সেন্ট্রালে কমিটির খসড়া জমা দিলে ও তা কমিটি হয়ে আসেনি। 

 

এদিকে বর্তমানে জেলা বিএনপির কমিটিকে ঘিরে সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন একুট ব্যাকফুটে থাকলে ও অনেকটাই শক্ত অবস্থানে আছেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। বর্তমানে গিয়াসকে মাইনাস করতে রূপগঞ্জ থেকে দুইজন, ফতুল্লা থেকে তিনজন, সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে একজন, আড়াইহাজার থেকে একজন এরা সকলেই একজোট হয়ে সেন্ট্রালে জেলা বিএনপির কমিটি পূর্ণগঠনের লক্ষে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে বর্তমানে জেলা বিএনপিতে স্থান পেতে বহু অযোগ্য নেতাকর্মীরা লবিং করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবশেষে বর্তমানে ওমরাহ হজ¦ পালনে গিয়াস উদ্দিন বর্তমানে সৌদি আরবে রয়েছেন যার ফলে বর্তমানে রাজপথ থেকে অনেকটাই নিস্কীয় হয়ে পরেছেন জেলা বিএনপির রাজনীতি। তার শূন্যতা বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে। তিনি ছাড়া যে জেলা বিএনপি শূন্য তা প্রমান হলো।

 


জানা গেছে, মূলত নির্বাচন টার্গেট করে জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দেওয়া ও গিয়াসউদ্দিনকে রুখে দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আনা হয়। সেই চক্রের বিভিন্ন সভায় উঠে আসে, এ সময়ে গিয়াসউদ্দিন  বেশ শক্ত অবস্থানে আছেন। তারা সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করেছেন। ফলে ৩ বছরের আগে কমিটি ভাঙার সুযোগ কম। তাছাড়া ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের তালিকাও কেন্দ্রে জমা আছে। এদিকে তিনি অন্যতম টার্গেট যার কারণ দুইটি। প্রথমত তার নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে হবে। কারণ শামীম ওসমানের সঙ্গে তিনি জিতেছিলেন। তাকে সরানো না গেলে একটি গ্রুপের পছন্দের প্রার্থীকে দাঁড় করানো যাবে না। সে ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে আগে নির্বাচন করা জমিয়তের নেতা মনির হোসাইন কাশেমীকে টার্গেট করছেন বিএনপির কতিপয় নেতা। 

 

মনির কাশেমীকে দিয়ে গিয়াসউদ্দিনকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। পরবর্তীতে আগ্রহী হলে পদত্যাগী বিএনপি নেতা শাহআলমকেও সামনে আনার চেষ্টা করা হবে। এ ক্ষেত্রে থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ চৌধুরীকেও চাপ দেওয়ার জন্য কাজে লাগানো হবে। তাছাড়া গিয়াসউদ্দিনকে সরানো না গেলে থানা কমিটি কিংবা জেলায় প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব হবে না উঠে আসে আলোচনায়। এজন্য যে কোন মূল্যে কমিটি পুনর্গঠনের কথা বলা হয়। এর আগে গত ৫ আগস্টের পর সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা মাঠঘাট চলে বেড়ান গিয়াস উদ্দিন। নিজ নির্বাচনী এলাকা থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি দূর করতে কঠোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হোন তিনি। সেই লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত তিনি সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে নানা দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়ে থাকনে। এর মাধ্যমে স্ব স্ব এলাকার মানুষের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে নিজের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। 

 

যা নিয়ে দলের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে প্রশংসিত হোন গিয়াস উদ্দিন। সেই সঙ্গে গিয়াসের বার্তা শুনতে শুনতে নেতাকর্মীরা এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ছুটেছিলেন। এর ফলে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগের তুলনায় প্রতিনিয়ত সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হচ্ছেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতার সুযোগে আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা অন্তকোন্দলে জড়ান। পাশাপাশি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। এতে করে বিএনপির ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হতে শুরু করলে গিয়াস শক্ত হাতে দমন করেন। পাশাপাশি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে প্রশাসনকে সব ধরণের সহযোগিতা করেন। 

 

এ দিকে ২০২২ সালে জেলা বিএনপির কমিটিতে আহ্বায়ক পরবর্তীতে সভাপতির স্থান পায় মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। যার ফলে দীর্ঘদিন ১৪ বছর পর জেলায় জাঁকজমকপূর্ন সম্মেলনসহ দেখেছেন প্রত্যেকটি থানা, উপজেলা, পৌরসভায় ইউনিট কমিটি। এছাড়া ও দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে দলীয় নেতাকর্মীদের আড়ালে থেকে সাহস ও যত প্রকারের সুবিধা প্রয়োজন সবই দিতেন এই প্রবীন নেতা। তা ছাড়া গিয়াস উদ্দিন সভাপতি হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের সাবেক প্রভাবশালী শামীম ওসমানের মাথাব্যথা হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায় গিয়াস উদ্দিন। 

 

কারণ ২০০১ সালে তাকে হারিয়েই মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে একের পর এক কর্মসূচি সফলভাবে পালন করেন গিয়াসের নেতৃত্বাধীন জেলা বিএনপি। গিয়াসের নেতৃত্বে জেলা বিএনপি আসার পর থেকেই দলটির রূপ বদলাতে শুরু হয়। কারণ জেলা বিএনপির প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে জনতার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে গিয়াস উদ্দিন জেলা বিএনপির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন অচল হয়ে থাকা কমিটিকে সচল করছেন। বর্তমানেই গিয়াস উদ্দিনই সেরা এমন আলোচনা মুখে মুখে। 

এই বিভাগের আরো খবর