মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ডনচেম্বার ও জোড়া পানির ট্যাংকি সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : সকাল ৭টা। ডন চেম্বার সড়কে কুয়াশার রেশ তখনো কাটেনি। ছোট দুই শিশুকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন একজন মা। কাঠ মার্কেট বরাবর রিক্সা আসার পর একটি গর্ত দেখে সাইড নিতে গিয়ে মুহূর্তেই বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি রিক্সার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। রিক্সা থেকে দুই বাচ্চাসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন ওই ভদ্র মহিলা। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে টেনে তোলেন। বাচ্চারা ব্যাথা পেয়েছে। তাদের মায়ের কোমড়ে চোট লেগেছে, হাত-পা ছিলে গেছে। 

 

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালের এই রিক্সা দুর্ঘটনার কথা দিনভর মহল্লায় আলোচিত হয়। বিকেলে স্থানীয় কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুর কাছে ডন চেম্বার ও খানপুর জোড়া ট্যাংকি সড়ক দু’টির বেহাল দশার কথা জোর দিয়ে বলেন এলাকাবাসী। এ সময় কাউন্সিলর শকু এলাকাবাসীকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, ডন চেম্বার ও জোড়া ট্যাংকি সড়ক দুটির সংস্কার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে। কেননা মেয়র মহোদয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর এই সড়ক দুটির সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দিয়েছেন। কেন দেরি হচ্ছে খোঁজ নিলেই জানা যাবে। মেয়র মহোদয়কে বিষয়টি আবারো অবহিত করা হবে। কেননা, সড়ক দু’টির অবস্থা ভয়াবহ। অসংখ্য গর্ত। রিক্সায় চড়তে গেলে ঘন ঘন ঠেকনা লাগে। লোকজন অতিষ্ঠ। তবে আশা করছি সংস্কার কাজ শীঘ্রই শুরু করতে পারবো। মেয়র মহোদয় বিষয়টি ভাল ভাবেই অবগত আছেন।

 

সরজমিনে দেখাগেছে, নগরীর ১২ নং ওয়ার্ডের ডন চেম্বার ও খানপুর জোড়া পানির ট্যাংকি সড়কটি খানাখন্দকে ভরে গেছে। ব্যস্ততম এই সড়ক দু’টির অবস্থা এতই নাজুক হেঁটে যাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়েছে। খানাখন্দকের কারণে সড়কটিতে ঘটছে দুর্ঘটনা। ছোট-বড় গর্ত ও খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় এই সড়কটির আজ বেহাল দশা। বৃষ্টির মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে শহরের এই ব্যস্ততম সড়কটি। বেহাল দশার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শ্রমিক, ব্যবসায়ী, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী সহ অনেকে।

 

দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে ডন চেম্বার ও খানপুর জোড়া পানির ট্যাংকি সড়কটি। দেখে বোঝার উপায় নেই কবে নাগাদ এই সড়কটির ঢালাই করা হয়েছিল। কারণ সড়কটির বিটুমিন উঠে গিয়ে নিচ থেকে ইট বেরিয়ে পড়েছে। এ কারণে ছোট-বড় গর্তসহ খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলে।

 

ডনচেম্বার ও খানপুর জোড়া পানি ট্যাংকির আশেপাশে রয়েছে স্কুল, ক্লিনিক, মাদ্রাসাসহ অজস্র দোকানপাট, কাঠের দোকান ও কারখানা। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে। প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীরা  খুব কষ্ট করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে থাকে। অনেক সময় খানাÑখন্দকে পড়ে রিক্সা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা।

 

আমান মিয়া নামে ওই এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, এই দু’টি সড়কের অবস্থা এতই নাজুক যে চলাচল করা খুবই মুশকিল। সংস্কার কাজের অভাবে পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে খানাÑখন্দকে ভরে গেছে সড়কটি। তাই এই সড়কটির সংস্কার কাজ করে দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই দ্রুত এই সড়ক দুটি মেরামত করা প্রয়োজন। এই সড়কটি মেরামত করে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

 

কাঠের দোকান ব্যবসায়ী মাহবুব জানান, তার বাড়ি ডনচেম্বার এলাকায় সড়কটিতে খানাখন্দকে ভরা। এই সড়কে দিয়ে রিক্সা নিয়ে চলাচল করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এই সড়ক খুবই খারাপ। গত পরশু রিক্সার চাকা গর্তে পড়ে আমার পায়ে আঘাত লাগে। ওই সময় একজন রিক্সার চালকও আহত হয়। তাই খুবই সাবধানে এই রোড দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

 

এই ব্যাপারে ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সড়ক দু’টি সংস্কার এর জন্য এলাকাবাসী সিটি কর্পোরেশন বরাবর লিখিত অভিযোগ করে ছিলেন। এরপর মেয়র মহোদয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর এই সড়ক দুটির সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। কেন দেরি হচ্ছে মেয়র মহোদয়কে বিষয়টি আবারো অবহিত করা হবে। কেননা, সড়ক দু’টির অবস্থা খুবই ভয়াবহ।

 

অপরদিকে, সংরক্ষিত আসনের নরী কাউন্সিলর মিনোয়ারা বেগম বলেন, এই সড়ক দু’টির অবস্থা খুবই নাজুক। আমি নিজে দেখিছি ব্যস্ততম এই সড়ক দু’টির অবস্থা এতই নাজুক হেঁটে যাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়েছে। খানা-খন্দকের কারনে সড়কটিতে  ঘটছে দুর্ঘটনা। ছোট-বড় গর্ত ও খানা-খন্দক সৃষ্টি হওয়ায় এই সড়কটির আজ বেহাল দশা। মাসিক সভায় মেয়র মহোদয় এর কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করবো যাতে এই দু’টি সড়ক দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করে দেন। 

 

ব্যস্ততম এই সড়কটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে শ্রমিক, ব্যবসায়িকসহ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা। দ্রুত এই দুটি সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুর্ভোগ লাগবে এগিয়ে আসবে এটাই  সবার প্রত্যাশা।

এই বিভাগের আরো খবর