মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১

ডাকাতি-ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ মানুষ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪  

 

# ক্ষোভে গণপিটুনিতে হত্যা করতে কর্ণপাত করছে না
# জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে

 

ঈদকে ঘিরে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রাণঘাতী ডাকাত, ছিনতাই চক্র। বিশেষ করে ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা ছিনতাইকারী, ডাকাত চক্র দিন দুপুরে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে লুটে নিচ্ছে মানুষের সর্বস্ব। শুধু অর্থকড়ি লুটে নেয়ার মধ্যেই তাদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ নেই। ছিনতাইয়ে বাধা দিলে তারা মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।

 

তবে এই ছিনতাই, ডাকাত চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ নিজেরাই অপরাধে জরিয়ে পরছে। কেননা গত কয়েক দিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সদস্যকে এলাকাবাসি মিলে সোনারগাঁয়ের সাদিপুরে গণপিটুনীতে ৪ ডাকাতকে মেরে ফেলে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গোগনগর এলাকায় চার ছিনতাইকারী সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে আহত করে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশে সোপর্দ করে।

 

এদিকে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় পর জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও অনেক সময় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করতে পারছেন না। মাঝেমধ্যে যাদেরকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাচ্ছেন তারাও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে ফের একই কাজ করছে।

 

এতে করে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কমছে না। বরং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ছিনতাইকারী চক্র তৈরি হচ্ছে। এদেরকে একটি মহল শেল্টার দিয়ে থাকে তারা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায়। এছাড়া শহরে ভয়ঙ্কর ছিনতাইকারী চক্র হচ্ছে গামছা পার্টি ও প্রাইভেটকার নিয়ে ছিনতাইকারী চক্র। এই দুটি চক্রের হাতে পড়লে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে ফেরেন।

 

গোয়েন্দা সূত্রগুলো জানিয়েছে, ঈদের আগে মানুষের সাথে কমবেশি টাকা থাকে। কেনাকাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের জন্য সঙ্গে করে টাকা বহন করে অনেকে। আর এসব ব্যক্তিদের টার্গেট করে ছিনতাইকারীরা। অনেক সময় ছিনতাইকারীরা ব্যাংকে গিয়ে অবস্থান নেয়। বড় অঙ্কের টাকা তুলে কেউ বের হলে তাদেরকে টার্গেট করে সুযোগ বুঝে ছিনতাই করে। ইফতারের পরে যখন রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে তখন এবং ভোরবেলা বিভিন্ন স্থান থেকে আসা যাত্রী বা বিশেষ প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে গেলে ছিনতাইকারীরা তাদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তাদের কাজে কেউ বাধা দিলে প্রাণে মেরে ফেলে। কিছু সিএনজিচালক, অটো চালক ছিনতাই চক্রে কাজ করে। যাত্রীরা ভাড়ায় তাদের সিএনজিতে উঠলে সুবিধামতো স্থানে নিয়ে টাকা পয়সা, মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। গামছা পার্টির সাথে অজ্ঞান পাটির কবলে পড়ে অনেক যাত্রীকে সব কিছু হারাতে হয়।

 

জানা যায়, ১৮ মার্চ সোনাগাঁ উপজেলার সাদিপুর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চার ডাকাত সদস্য চক্রকে মাইকে ঘোষনা করে গনপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। হত্যাকৃত পরিচয় শনাক্ত করা তিনজন হলেন- জেলার আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ঝালোকান্দি এলাকার নবী মিয়ার ছেলে রহিম মিয়া, একই এলাকার মজিদ হোসেনের ছেলে নবী হোসেন এবং সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়ন সুখেরটেক এলাকার আমান মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন। এছাড়াও আহত আলী মোহাম্মদ আড়াইহাজার ঝালোকান্দি এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।

 

অপরদিকে ২২ মার্চ নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়ন এলাকার চার ছিনতাইকারীকে গনপিটুনি দিয়ে আহত করে পুলিশে সোপর্দ করে। আহত ছিনতাইকারীরা হলেন, শহরের জল্লারপাড় এলাকার রবিন গাজী, শহীদ নগর এলাকার মহিউদ্দিন, গোগনগর এলাকার অনিক হাসান, বন্দর উপজেলার নয়ন মিয়া। তারা প্রত্যেকেই ছিনতাইকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য।

 

প্রশাসন বলছে, তারা নিয়মিত টহলের ব্যবস্থা করেছে। যাতে মানুষ নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর