সোমবার   ১৮ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৪ ১৪৩১

দাপট কমেনি মৌমিতার

সায়মুন ইসলাম

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২২  

 

# অনুমোদিত বাসের সংখ্যা জানতে সময় বাড়লো এক সপ্তাহ
# প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি নগরাবাসীর


মৌমিতা বাস সার্ভিস নারায়ণগঞ্জ থেকে চন্দ্রা রুটে চলাচল করা যাত্রিদের জন্য আশির্বাদ হয়ে আসলেও তা এখন নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরবাসীর দীর্ঘদিনের অসহনীয় যে  যানজটের সমস্যা তা সৃষ্টির অন্যতম কারিগর হিসেবে মৌমিতাকে চিহ্নিত করলে তা মোটেও ভুল হবে না। শহরের খানপুরে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল এলাকায় যানযট সৃষ্টির ফলে হাসপাতালের এম্বুলেন্স চলাচলে বিঘ্ন ঘটার অন্যতম কারণ এই মৌমিতা। শহরে যানজট সৃষ্টি  ছাড়াও মৌমিতার বিরুদ্ধে যাত্রি হয়রানি, যত্রতত্র বাস পার্কিং, ভাড়া নিয়ে যাত্রিদের সাথে অসদাচরণ সহ অভিযোগের অন্ত নেই। মৌমিতার চালকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। তাদের খামখেয়ালির জন্য ছোট বড় দূর্ঘটনা বাড়ছে।

 

১৯ জুন রবিবার ও জেলা পরিষদ এলাকায় মৌমিতার নিচে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু বাসের অনুমোদন নিলেও তাদের চলা বাসের পরিমাণ তার  চেয়ে অনেক বেশি। আর অনুমোদনহীন এইসব বাসের কারণে চরম ভোগান্তিতে মানুষ । তাদের দাপট এতটাই যে  শহরের মধ্যোই তারা নিজেদের বাস দিয়ে  অবৈধ স্ট্যান্ড তৈরি করে রাস্তায় কৃত্রিম  যানজট সৃষ্টি করে ভোগান্তিতে ফেলছে নগরবাসীকে। অথচ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক থেকে কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না মৌমিতা কর্তৃপক্ষ।

 

এ বিষয়ে শহরের বাসিন্দা মো. রফিক যুগের চিন্তাকে জানান, প্রতিদিন শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া গোলচত্ত্বরে কয়েকটি স্পটে একাধিক বাস দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে রেখে যাত্রী উঠায় মৌমিতা। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর একটি বাস এসে যখন আরেকটির পিছনে দাড়ায়  তখনই  সামনে দাঁড়ানো বাসটি ঢাকার দিকে যাচ্ছে। তারপর আবারও পরবর্তী  বাসটি দাঁড়িয়ে থাকে। এভাবে সারাক্ষন মৌমিতা বাসের একটি  দাড়িয়েই থাকে এখানে। শুধু যে সান্তনা মার্কেটের সামনে এমনটা নয়। তারা খাজা মার্কেটের সামনেও একইভাবে দাঁড়িয়ে যানযটের সৃষ্টি করে। রাইফেল ক্লাবের সামনেও তারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কৃত্রিম যানজটের সৃষ্টি করে।

 

গত ৫ ই জুন যুগের চিন্তা কর্তৃক আয়োজিত যানযট নিরসনের উপায় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের এর গন্যমান্য ব্যক্তিরা একমত হন যে,শহরে মৌমিতা ও অনাবিল এর অবৈধ স্ট্যান্ড এর কারণেই যানজট হচ্ছে। এটা উচ্ছেদ করতে পারলেই যানজটের সমস্যার সমাধান অনেকটা হয়ে যাবে। বর্তমানে অনাবিল শহরে না থাকলেও মৌমিতা দাপটের সাথেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।

এ নিয়ে পথচারি নওশিন ইসলাম সামিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের যানজটের কারন মৌমিতা এটা প্রকাশ্য। এর পরেও কেনো এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ট্রাফিক পুলিশ বক্স এর  ঠিক পাশেই থাকার পরও কিভাবে এসব হচ্ছে। কারা এর পিছনের কারিগর তা খুঁেজ বের করে এর স্থায়ী সমাধান এখন সময়ের দাবি।

 

এ ব্যাপারে মৌমিতা বাস এর খানপুর স্ট্যান্ড এর সুপারভাইজার আলম জানান, এখানে যেনো আমাদের বাস এর কারণে যানযট সৃষ্টি না হয় সে জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। এখানে আমাদের লোক রাখা আছে তারা যানযট যেনো সৃষ্টি না হয় সে জন্য কাজ করছে। মেট্রো হলের সামনে যানযট নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত এএসআই শাকিল জানান, আমরা এখানে অটোরিক্সা ও ইজিবাইক যেনো শহরে ডুকতে না পারে সেই জন্য কাজ করছি। কিন্তু মৌমিতার পার্কিং নিয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার সুপারিশ করেন তিনি। 

 

এদিকে সভার বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ‘আমরা বাস মালিকদের সাথে আলোচনা করেছি। আমরা তাদের আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে বলেছি এই সময়ের মধ্যে তাদের অনুমোদিত বাস এর তালিকা দেয়ার জন্য। পরবর্তীতে শুধু অনুমোদিত বাস চলবে। অনুমোদনহীন কোনো বাস চলবে না।’এমই/জেসি


 

এই বিভাগের আরো খবর