রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

নতুন জটিলতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন প্রকল্প

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৭ জুলাই ২০২৩  


২০১৫ সালে প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এরপর চলে গেছে অর্ধযুগ। চলে গেছে সময়, সাথে বেড়েছে ব্যয়ও। অথচ, এখনও কাজ শেষ হয়নি। এমন অবস্থায় প্রকল্পটির এক ঠিকাদার বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে চুক্তি বাতিল করতে চাইছে। নতুন এই জটিলতায় আবারও মুখ থুবড়ে পড়েছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় রেললাইন প্রকল্পটি। এতে অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে এই পথে চলাচলরত যাত্রীদের ভাগ্য। 

 

 

রেললাইন স্থাপনসহ সিভিল কাজের ঠিকাদার পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়না (পিসিসিসি) গত ১৫ মার্চ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে একটি ‘চুক্তি সমাপ্তির নোটিশ’ পাঠিয়েছে। সেখানে উল্লেখ করেছে, তারা সময় মতো অর্থ পাচ্ছে না এবং প্রকল্পের জায়গাটি তাদের কাছে সময়মতো হস্তান্তর করা হয়নি। বুধবার রাজধানীর রেল ভবনে রেলপথ সচিব হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, কমিটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সমাধানে পৌঁছাতে বলেছে। 

 

 

১৮৮৫ সালের ৪ জানুয়ারি স্থাপিত হয়েছিল ১৪.৯৮ কিলোমিটার ‘নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা’ রেলপথ। দেশের সবচেয়ে পুরন এই পথটি রেলের স্বর্ণযুগ ছিল। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতায় ঐতিহ্যের এ রেলপথ এখন রূপকথায় পরিণত হয়েছে। বিদ্যমান ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মিটারগেজ রেললাইন যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সক্ষম নয়। সে কারণেই নতুন ডুয়েল গেজ লাইন নির্মাণ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। 

 

 

বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ দ্বিতীয় রেললাইন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও ২ ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারেনি রেলওয়ে। সর্বশেষ সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চতুর্থবারের মতো প্রকল্পের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার আবেদন করে।

 

 

এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ডিপিপি সংশোধন না করে সময় বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে প্রকল্পটি শেষ করতে সাড়ে ৩ বছর সময় এবং অতিরিক্ত ২৭৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে। পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তাবটি এখন পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে প্রকল্পের নথি থেকে। 

 

 

প্রকল্প নথি অনুযায়ী, পুনর্বিবেচনা প্রস্তাব অনুমোদন না হওয়ায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারদের অর্থ দিতে পারেনি। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা এবং এর নতুন সময়সীমা হবে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। বাংলাদেশ রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ঠিকাদারের বকেয়া মাত্র ১৫ কোটি টাকা এবং তাদের কাছে ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিলোমিটার জমি হস্তান্তর করা হয়েছে। ২৩ মার্চ প্রকল্প অফিস তাদের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছে। 

 

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান জানান, বিষয়টি তারা প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে জানিয়েছি। আমরা ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি এবং সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছি।  এন.হুসেইন রনী /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর