রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

নাগরিক কমিটির কার্যক্রমে স্থবিরতা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২২  

 

# আরো বেশি সরব হওয়ার দাবি সাধারণ মানুষের

# বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ থেমে নেই দাবি নেতাদের
 

নানা কারণে বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনায় থাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা। যখন  এখানে বড় ধরনের অপরাধের ঘটনা একের পর এক ঘটে যায় তখনও নারায়ণগঞ্জ সারাদেশে আলোচনায় থাকে। বিশেষ করে নগরীর ৭ খুন হত্যা, ত্বকী হত্যা, শিশু ধর্ষণ, মাদক, কিশোরগ্যাং সহ নানা ঘটনায় আলোচিত হয়ে থাকে এই ছোট্র শহর।

 

 

তবে যখন অপরাধ বেরে যায় তখন নাগররিক কমিটি, আমরা নারায়ণগঞ্জ বাসী সংগঠন সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন প্রতিবাদ করে থাকে। এদিকে নগরবাসী থেকে অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে এসপি হারুন চলে যাওয়ার পর অপরাধীরা ভোল পাল্টে আবারও অপরাধ জগতে সক্রিয় হয়ে নানা ভাবে অপরাধ করে যাচ্ছে।

 

 

তার মাঝে নারী নির্যাতন, শিশু ধর্ষণ, ছিনতাইকারীদের হাতে হত্যার ঘটনা, তাছাড়া ভুমিদস্যুতা সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া যানজটের মাত্রাও আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ফুটপাতে হকারদের দৌরাত্ম্য ও চাঁদাবাজিও থেমে নেই। এছাড়া মাদকের ছড়াছড়িতো আছেই। কিন্তু অন্যান্য সময় এই সকল অপরাধ সহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে নাগরিক কমিটি নগরবাসীর পক্ষে প্রতিবাদ করে থাকেন।

 

 

কিন্তু সচেতন মহলের মতে বছর খানেক যাবৎ বিভিন্ন অপরাধ ঘটে থাকলেও এখন আর আগের মত প্রতিবাদ হয় না। আর এতে  নগরবাসী নাগরিক কমিটির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেন? আর তা হলো নাগরিক কমিটিতে এখন কেন স্থবিরতা বিরাজ করছে।  আগেরমত বিভিন্ন প্রতিবাদে রাজপথে কিংবা প্রেস ক্লাবের সামনে তাদের দেখা যায় না। তাই নগরবাসী ধরে নিয়েছে তারা এখন ঝিমিয়ে পড়েছে।

 

 

অপরদিকে শনিবার ভোরে শহরের চাষাঢ়ায় ছিনতাইকারীদের হাতে ফেইম এপারেলস এর গার্মেন্টস কর্মী নিহত হন। এখনো পর্যন্ত এই হত্যায় আসামীরা চিহ্নিত হয় নাই। মাস দুয়েক আগে শহরের বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের হাতে কিশোর নিহত হয়। তার মাঝে দেওভোগ মেহেদি হত্যা, সুব্রত হত্যা, ইসদাইর ধ্রুব হত্যার ঘটনা ঘটলেও নাগরিক কমিটির পক্ষ হতে কোন প্রতিবাদ জানানো হয় নাই।

 

 

তাছাড়া বিভিন্ন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হলেও তাদের থেকে তেমন একটা প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় না, জানান নগরবাসী; এতে করে নগরবাসী হতাশা প্রকাশ করেন। তবে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ নগরবাসীর এই মতামতের সাথে একমত নন। তাদের মতে তারা ঠিকই প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন।

 

 

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি নু রউদ্দিন জানান, আমরা সব সময় নাগরিকদের সমস্যা নিয়ে কথা বলে থাকি। তাছাড়া বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে গেলে তখনও প্রতিবাদ করেছি।

 

 

গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত মাসেও আমরা তিতাস গ্যাস অফিস ঘেরাও করেছি। তারও আগে রেলষ্টেশনের জায়গা কল্যাণ সমিতির নামে দখল করার যে পাঁয়তারা করছে তারও প্রতিবাদ করেছি। তবে এখন সারা বিশ্বেই বৈশ্বিক সমস্যাসহ ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দাম বেড়ে গেছে; এই সব কিছুর প্রতিবাদে নাগরিক কমিটি থেমে নেই।

 

 

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর বলেন, আসলে নাগরিক কমিটি সব সময় অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছে এবং করে যাবে। এখনো বিভিন্ন অপরাধের প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। যদিও নগরবাসী বলেন, নাগরিক জোট কিছুটা থমকে আছে। তবে নাগরিক কমিটির কাজ বা বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ থেমে নেই, তারা প্রতিবাদ ঠিকই করে যাচ্ছে।
 

 

এদিকে নানা ইস্যুতে নাগরিক কমিটির থমকে যাওয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি লিখেছেন, নারায়নগঞ্জ শহরের অবস্থা ভয়াবহ! এখানে ট্রাফিক ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ট্রাফিক সদস্যরা দাঁড়িয়ে থাকেন আনমনে।

 

 

কখন সিগন্যাল দেবেন, জ্যাম লাগলে কি করবেন? এ ব্যাপারে তাদের কোন মাথাব্যাথা নাই। অনেকে মনে হয় জানেও না তাদের করণীয় কি! চাষাঢ়ায় ঢাকা থেকে আসা বাস যাওয়ার লেন করা হয়েছে; কিন্তু সেখানে রিক্সা দাঁড়িয়ে থাকে সবসময়। আর ফলের দোকান তো সবচেয়ে ক্ষমতাবান!

 

 

১০ টি দোকান পুরো চত্ত্বরে জ্যাম লাগিয়ে রাখে; অথচ ডিসি সাহেব তার প্রথম সাক্ষাতে প্রেস ক্লাবে বলেছিলেন যে এগুলো সরানো হবে! পোশাকধারী চাঁদাবাজরা প্রতিদিন বুক ফুলিয়ে ব্যাটারী রিক্সা থেকে কমপক্ষে ৪/৫ লাখ টাকা আদায় করছে; যার ভাগ সবাই পায়।

 

 

এসবের ব্যাপারে কেউ টু শব্দও করে না। নাগরিক সমাজের সচেতন জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটা অথর্ব বস্তু যে, এই শহরে আছে সেটাও মাঝে মাঝে ভুলে যাই। মনে হয় প্রতিনিয়ত সবাই মিলে বসবাসের অযোগ্য করছে প্রিয় শহরটাকে! খুব অসহায় লাগে! এন.এইচ/জেসি  

এই বিভাগের আরো খবর