শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

আবদুস সালাম

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪  


নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল এন্ড করেজের ৭০জন শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে  প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু  করেছেন জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ নুরুন্নবী এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস ফারুকী তদন্ত করার জন্য নারায়নগঞ্জ হাই স্কুলে উপস্থিত শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন।

 

 

তদন্ত কমিটির কাছে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন মাহমুদুল হাসান চৌধুরী বিগত কমিটির সভাপতি চন্দন শীলের সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। সরকারী বেতনের বাইরে সে স্কুল তহবিল থেকে নিয়ম বহিঃভুত ভাবে বাড়ী ভাড়া এবং চার্জ এলাউন্স বাবদ প্রতিমাসে ৮৮হাজার টাকা অবৈধভাবে নিয়ে যায়।

 

 

এছাড়া কমিটির কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষা সফরের নামে বহিরাগত লোকদের সাথে নিয়ে সাড়ে আট লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে স্কুল তহবিল থেকে উত্তোলন করেন। মেয়াদ উত্তীর্নের আগেই মুল কমিটি বাতিল করে এডহক কমিটির মাধ্যমে  প্রত্যেকের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা করে নিয়ে ২২জন অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করেন। এর মধ্যে প্রদান শিক্ষকের ছেলে রয়েছে।

 

 

স্কুলের শিক্ষকরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করেন কোন প্রকার কারন ছাড়াই কর্মরত অবস্থায় ৭জন শিক্ষককে মৌখিক নির্দেশে চাকুরীচ্যুতি করেন। সেখানে তার ইচ্ছেমতো শিক্ষক নিয়োগ করেন।এই চাকুরীচ্যুতির নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনজন শিক্ষক আদালতের মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে আদালতের নির্দেশে একজন শিক্ষক চাকুরী ফেরত পেয়ে স্কুলে যোগদান করার পর অজ্ঞাত কারনে তার বেতন এক বছর যাবত প্রদান করা হচ্ছেনা।

 

 

একজন শিক্ষক অভিযোগ করেন  ২০২৩সালে বোর্ড নির্দেশ অমান্য করে এসএসসি পরীক্ষাথীদের কাছ থেকে কোচিং ক্লাশ বাবদ এগারো লাখ টাকা উত্তোলন করার পর শিক্ষকদের মধ্যে চার লাখ টাকা প্রদান করে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়া তার দুই সহযোগী মাহবুবুর রহমান এবং সাথী সাহা মিলে সাত লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কোচিং ক্লাশে অংশ গ্রহনকারী শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলে তাদের চাকুরীচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন।

 

 

এছাড়াও বই এবং ভর্তি বানিজ্য করে সে কমপক্ষে ১৫লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শিক্ষকরা জানান,বিগত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টিয়ে মাহমুদুল হাসান ভুইয়া রাতারাতি বিএনপির নেতা বনে যায়। গত ২১ শে সেপ্টেম্বর স্কুলে কর্মরত সকল শিক্ষক এবং ছাত্ররা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নুরুন্নবীর উপস্থিতিতে সে পদত্যাগ করে স্কুল ত্যাগ করেন।

 

 

এর আগে তার সহযোগী মাহবুবুর রহমান এবং সাথী সাহা  নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করে স্কুল থেকে পালিয়ে যায়।এদিকে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক এবং গভনিং বডির সভাপতি মাহমুদুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে শিক্ষকেদের আশ^স্ত করেন।

 

 

তদন্ত কমিটির সদস্য ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস ফারুকী জানান জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে তারা মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার আর্থিক অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি জানান শিক্ষকদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। অনেক অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট প্রদান করবে।     এন. হুসেইন রনী  /জেসি