বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই নগরীর রেস্টুরেন্টগুলোতে

নুরুন নাহার নিরু

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৪  

 

রাজধানীর বহুতল ভবনের ভয়াবহ অগ্নি দূর্ঘটনার পর আলোচনায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জের রেস্টুরেন্ট গুলো। নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন ভবনে একের পর এক অগনিত গড়ে উঠেছে রেস্টুরেন্ট। সিটি করপোরেশনের তালিকা অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জে ছোট-বড় ১শত ৫টি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ গুলোতে নেই পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপনের ফায়ার এক্সটিংগুইসার।

 

তবে রেস্টুরেন্ট গুলো কর্তৃপক্ষের দাবি নিরাপত্তার ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি নেই। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট গুলোর ভবনে আবাসিক বসবাসও রয়েছে। আবাসিক ভবনের রেস্টুরেন্ট (বাণিজ্যিক) গড়ে উঠলে সেটি হয়ে উঠে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান। যে কারণে বাণিজ্যিক ভবনের থেকে আবাসিক ভবনের নকশা ভিন্ন হয়ে থাকে বলে যুগের চিন্তাকে জানান রাজউকের পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খাঁন।

 

গতকাল নগরীর বেশকয়েকটি রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ভবনের উপরে উঠার সিড়ি গুলো তেমন চওড়া নয়। প্রয়োজনে জরুরি ভাবে বের হওয়ার বিকল্প সিড়িগুলোও বেশ চাপা আবার প্রায় অনেক গুলো রেস্টুরেন্টের বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও নেই।

 

অন্যদিকে রান্না ঘরের গ্যাস সিলেন্ডার সব মিলিয়ে যেন এক মৃত্যুকূপ। পাশাপাশি অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট গুলোতে পর্যাপ্ত ফায়ার এক্সটিংগুইসারও নেই। যেখানে প্রয়োজন ৫ টি সেখানে তারা রাখছে মাত্র ৩টি। তার উপর অগ্নি নির্বাপনের এই যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পারে কি না এমন প্রশ্ন করলে তারা তাচ্ছিল্যভরে উত্তর দিচ্ছে যে পারি।

 

সুলতান ডাইন, কাচ্চি ভাই, সিরাজ চুই গোস্ত, ক্রাউনসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ঘাটতির কথা শিকার করে যুগের চিন্তাকে বলেন, রাজধানীর এই ঘটনার পর আমরা সচেতনতার সাথে কাজ করছি। যেনো কোনো দূর্ঘটনার শিকার না হতে হয়। নিরাপত্তা আরো জোরালো করার জন্য যে কয়টা অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ছিলো আরো কয়েকটি অর্ডার দিয়েছি। এছাড়া অগ্নি নির্বাপনের এই যন্ত্রটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটাও কয়েকদিনের মধ্যে সব স্টাফদের প্রশিক্ষণ দিবো।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, কোন ভবন কিভাবে হবে এগুলো দেখবে রাজউক। তবে দেশে ভবন নির্মানের যথোপযুক্ত আইন রয়েছে। অনেকেই দেখা যায় এসব বিধিমালা না মেনে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করে।

 

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-পরিচালক ফখর উদ্দিন আহমেদ যুগের চিন্তাকে বলেন, কোন রেস্টুরেন্ট ঝুঁকিপূর্ণ সেটা তো জানি না। কিন্তু চাষাড়া তে যদি কোনো অগ্নি দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে সেখানে আমাদের গাড়ি ঢোকার মতো যথেষ্ট জায়গা আছে। এছাড়া আমি আজকেই আমাদের এখান থেকে লোক পাঠিয়েছি এসব রেস্টুরেন্ট গুলোতে অগ্নি নির্বাপনের যন্ত্রটি যথেষ্ট আছে কিনা পরিদর্শনের জন্য।   

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার (জোন-৮) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খাঁন যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা সাধারণত আবাসিক যে ভবনগুলো আছে সেগুলো মনোনিবেশ করি বেশি। ঝুঁকিপূর্ন ভবনগুলো নিয়ে আমাদের কিছু করার থাকে না। কিন্তু তারপরও কয়েকদিনে যেসব দুর্ঘটনা  গুলো ঘটলো সেই থেকে আমাদের  এই ঘটনাগুলো যাতে না ঘটে সেই জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করতে যাচ্ছি। বিশেষ করে হোটেল, রেস্তোরা যেগুলো আছে সেদিকে দুর্ঘটনা এড়াতে এবং যে ঝুঁকিপুর্ন ভবনগুলো আছে সেগুলো চিহ্নিত করে তালিকা করে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এস.এ/জেসি   


 

এই বিভাগের আরো খবর