রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

প্রকৃতিতে এখন শীতের আগমনী বার্তা

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৮  

(যুগের চিন্তা ২৪) : উত্তরের জেলা দিনাজপুরে প্রতি বছরের মতো বাংলা মাস আশ্বিনের আগে ও কার্তিকের শুরুতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি নিয়ে আসছে শীতের আগমনী বার্তা। ইতিমধ্যে রোদের তাপমাত্রা দিনের বেলায় কমতে শুরু করেছে দিনাজপুরে। তাই বিকাল হওয়ার সাথে সাথেই শীতের আবাস পাওয়া যায়। সন্ধ্যা থেকে ভোর হওয়া পর্যন্ত হালকা শীত অনুভব করা যায় উত্তরের এই জেলায়।

সাধারণত সূর্যের দক্ষিণায়নের কারণে নভেম্বর থেকে শীত অনুভূত হতে শুরু করে। তবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতকাল বলে ধরা হয়। বাংলায় পঞ্জিকা অনুযায়ী পৌষ ও মাঘ এই দুইমাস শীতকাল। তবে এবার শীতের আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে আরও আগে।

কেননা, নভেম্বরের আগে অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়েই রাজধানীতেও শীতের আগমনের বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার কার্তিকের প্রথম দিন কুয়াশায় ভেসে ভোরে আগমন হয়। কুয়াশায় চাদর সরিয়ে শুরু হয় হেমন্তের প্রথম সকাল। কার্তিক-অগ্রহায়ণ দুই মাস মিলে বাংলা ঋতু চক্রের চতুর্থ ষড়ঋতু হেমন্তকাল। হেমন্তের প্রথম দিনটিতে ঢাকায় সূর্যের আলোকচ্ছটার সঙ্গে কুয়াশা পেরে উঠেনি বেশিক্ষণ! তবে শীতকাল যে আসন্ন তার ইঙ্গিত দিয়ে গেল ভোরের এই কুয়াশা। 

আবহাওয়া তথ্যের সাইট অ্যাকুয়াওয়েদারের হিসেবে এই কুয়াশায় রাজধানীতে দৃষ্টিসীমা এক কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। এ সময় তাপমাত্রা ২৩ থেকে ২৪ এ উঠানামা করেছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। সেই সাথে দিনভর রোদের কারণে একটু গরম লাগলেও বিকাল থেকেই শীতল হাওয়া আর সন্ধ্যার পরপরই কুয়াশাও ঝরতে শুরু করেছে।

রাতে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা ঝরছে। সকালে দেখা মিলছে বিভিন্ন লতা, পাতা, গাছে যেনো শিশিরের অলংকার পড়েছে। 

এদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের শীতে একমাত্র অবলম্বন কাঁথা। তাই শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এসব পরিবারের নারী সদস্যরা এখন কাজের ফাঁকে তাদের পুরনো কাঁথা মেরামত করার পাশাপাশি পুরনো নতুন কাঁথা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

আবার অনেকে চেয়ে আছেন শীতবস্ত্র পাওয়ার অপেক্ষায়। যদিও সবার ভাগ্যে তা জোটেনা। আর কৃষকরা অপেক্ষাকৃত উচুঁ জমিতে আবাদ করেছে শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। ইতিমধ্যে কৃষকদের এ শাক-সবজি হাট-বাজার গুলোতে উঠতে শুরু করেছে। বর্তমানে শীতের শাক-সবজির দামও বেশ ভাল। তাই হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখেও। 

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জুল রহমান জানান, বাংলা কার্তিক মাস গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়ায় শীতের অনুভুত হচ্ছে। এখন প্রতিদিন তাপমাত্রা কমতে থাকবে আর শীতের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকবে। সকাল বেলা হালকা কুয়াশা পড়ছে। আর কিছুদিন পর কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে শীতের মাত্রাও বেড়ে যাবে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তারের তথ্যে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহে আবহাওয়ার বড় কোন পরিবর্তন নেই। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা একটু উঠানামা করবে।

ময়মনসিংহ, সিলেট, ও চট্রগ্রাম বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানতঃ শুষ্ক থাকতে পারে। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ২৩ দশমিক৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সকালে বাতাসের আর্দ্রতা ৮৭ ভাগ এবং বিকেলে তা কমে ৬৪ ভাগে আসবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর