শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

প্রেসক্রিপশন নিয়ে কাড়াকাড়িতে ক্ষুদ্ধ রোগী-স্বজনরা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

 

সপ্তাহে দুদিন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির লোকেদের দেখা যায় হাসপাতালে ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের কোম্পানির ঔষধের গুনগত মান ও কার্যকারি সম্পর্কে বলেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রেসক্রিপশনে তাদের কোম্পানির ঔষধের নাম লিখে দিতে বলেন। বিনিময়ে যদিও ঔষধ কোম্পানিগুলোর মালিকরা চিকিৎসকদের ভালো অঙ্কের কমিশন দিয়ে থাকেন। যত লিখবেন তাদের ঔষধের নাম তত কমিশন পাবেন চিকিৎসকরা।

 

প্রেসক্রিপশনে ঔষধের নাম লিথছেন কিনা সেটা যাচাই করতে পুরো হাসপাতালের বাহিরের অংশ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে। চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হতে না হতেই তারা রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি শুরু করে। জোরপূর্বক রোগীর হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে মোবাইলে ছবি তোলে। একজন ছবি তুলতে না তুলতেই আরেকজন টানাটানি শুরু করে দেয়।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বেলা ১১টায় নারায়ণগগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে গেলে রোগী হয়রানির এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। এ সময় হাসপাতাল গেটের দুপাশে ঔষধ কোম্পানির এমআরদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এমন সময় হাসপাতালের ভিতর থেকে রোগী ডাক্তার দেখিয়ে বের হওয়া মাত্রই তারা তার হাত থেকে প্রেসক্রিপশন ছিনিয়ে নিয়ে ছবি তোলা শুরু করে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঔষধ কোম্পানির এক এমআর যুগের চিন্তাকে বলেন, ঔষধ কোম্পানি ডাক্তারদের বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে। তার একটাই কারণ-প্রেসক্রিপশনে তাদের কোম্পানির ওষুধ লেখে কিনা। আর কোম্পানির এমআরদের কাজ হচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এটা দেখা যে, তাদের কোম্পানির ওষুধের নাম যথাযথ লিখছেন কিনা। এ কাজ অন্যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ন্যায়-অন্যায় কোম্পানি জানে। আমাকে এই কাজের জন্যই অফিস নিয়োগ দিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে নাছিমা নামে এক গৃহিনী বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে আসছি শিশু ডাক্তার দেখানোর জন্য। হাসপাতালের গেট থেকে বের হতে না হতেই কয়েকজন লোক ঘিরে ধরে হাত থেকে টেনে কাজগটি (প্রেসক্রিপশন) নিয়ে যায়। এতে আমি অনেক ভয় পেয়ে যাই। এগুলো কি ঠিক তারা আমার থেকে সুন্দর করে চাইতো হাত থেকে কেড়ে নেওয়ার তো কারণ নেই তাই না। এটা তারা অন্যায় করেছে।

 

অপর ব্যক্তি মিথিলা বলেন, একজন মেয়ে বা মহিলাকে এভাবে কয়েকজন লোক মিলে ঘিরে ধরা ঠিক না। এটার বিরুদ্ধে আমার মনে হয় কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 

এ বিষয়ে খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবুল বাশার যুগের চিন্তাকে বলেন, রোগীদের হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে কাড়াকাড়ি করা এটা অন্যায়। তাদেরকে বলা হয়েছে তারা যেন সপ্তাহে দুদিন হাসপাতালে আসে। তাও হাসপাতালের ভিতরে না বাহিরে। এটার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, এটার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং নেওয়া আছে, চেষ্টা করছি। এস.এ/জেসি 
 

এই বিভাগের আরো খবর