শুক্রবার   ১৮ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৩ ১৪৩১

বাতি না থাকায় লিংক রোডে রাতে চলাচল অনিরাপদ

মেহেদী হাসান

প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৪  

# অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় হঠাৎ গাড়ির সামনে পড়ে মানুষ।

 

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এই সড়কটি চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেন থেকে ৬ লেনে উন্নীত করে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বর্তমানে এ সড়কের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। সড়কটি ছয় লেন করায় দৃষ্টিনন্দন সড়কে পরিণত হয়েছে। সড়কটির আধুনিকতার  ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে আশ-পাশের পরিবেশ।

 

এ সড়কের তিনটি স্থানে করা হয়েছে আন্ডারপাস, সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও চাঁনমারী এলাকায় দুটি ইউটার্ন,  ফুটওভারব্রীজ ও সড়কের দুপাশে করা  হয়েছে ড্রেন সহ ফুটপাত। শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড। এ সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড স্থানে মিলিত হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ নগরবাসীসহ অন্যান্য আশপাশের লোকজন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন।

 

এ সড়ক নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে রাজধানী ঢাকায় চলাচলের অন্যতম প্রধান একটি সড়ক। আগে চাষাঢ়া থেকে সাইনর্বোডে গাড়িতে যেতে সময় লাগত ৩০-৪০ মিনিট। বর্তমানে ছয় লেন সড়ক হওয়ায় সময় লাগে ১০-১৫ মিনিট। সড়ককে ঘিরে ইতোমধ্যে সড়কের  দু’পাশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে আধুনিক বহুতল ভবন ও মার্কেট। এ ছাড়াও এ সড়কের আশপাশে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের সরকারি প্রায় সকল অফিস-আদালত। এ সড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা পরিষদ, এলজিইডি কার্যালয়,

 

পাসপোর্ট অফিস, জেলা কারাগার, জেলা নির্বাচন অফিস ও শিল্প পুলিশ-৪’র পুলিশ লাইন্সসহ নানা ধরনের স্থাপনা রয়েছে। ফলে এ সড়কটি অত্যন্ত ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়েছে। আট দশমিক এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীত করায় এ সড়কের যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। কিন্তু সড়কটিতে রাতে বাতির আলো না থাকায় নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।

 

এই সড়কে রাতে আলো না থাকায় অন্ধকারে ঘটছে ছিনতাই সহ নানা রকমের দুর্ঘটনা। কয়েকটি পয়েন্টের মোড় ছাড়া যানবাহনের লাইটের আলো ব্যাতিত সড়কের আলোর ছাঁয়াও পরেনা। এই সড়কের চাষাড়া, শিবুমার্কেট, জালকুড়ি, সাইনর্বোড ছাড়া আলোর সন্ধান পাওয়া যায় না কোথাও। এছাড়াও এই সড়কের রাতের বেলায় আতঙ্কে চলাচল করেন পথচারীরা। অন্ধকারে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় হঠাৎ গাড়ির সামনে পড়ে মানুষ। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা।


নিয়মিত এই সড়ক দিয়ে যাতাযাতকারী মহসিন মিয়া বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে করতে ভয় হয় এবং এই সড়কে চলাচলে আমরা আতঙ্কে থাকি। এই সড়কে রাতে অনেক জায়গায় ছিনতাই হয়। গাড়ির আলো ছাড়া এই সড়কের সামনে কিছু দেখা যায় না। এবিষয়ে জেলা পরিষদের সামনে একজন পথচারী বলেন, আমার বাসা ইসদাইর, আমি ফকিরা গার্মেন্টেসে চাকুরী করি।

 

সকালে কাজে যাবার পথে আমার এই সড়ক পার হতে হয়। কিন্তু রাতে সড়কটির এক পাশ থেকে আরেক পাশ যেতে আমার অনেক ভয় হয়। রাতের বেলা গাড়ি চলাচল একটু বেশি করে। গাড়ির হেড লাইটের আলো চোখে পরলে সামনের কিছু দেখা যায় না। অনেক সময় রিকশা বা অটো রিকশাও  অন্ধকারে চোখে দেখা যায়। অনেক আতঙ্কে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি। এবিষয়ে একজন সিএনজি চালক বলেন, আমরা চাষাঢ়া থেকে সাইনর্বোড ও সাইনর্বোড থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত চলাচল করি। সড়কে বাতি না থাকায় রাতে বেলা এই সড়কে গাড়ি  চালাতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়।

 

এই সড়কের অনেক স্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের সাথে থাকা মালামাল ছিনতাই কারীরা ভয় দেখিয়ে ও আঘাত করে সব কিছু নিয়ে যায়। এবিষয়ে উৎসব পরিবহনের একজন চালক বলেন, সাইনর্বোড থেকে চাষাঢ়া গাড়ি নিয়ে আসতে সময় লাগে দশ মিনিট। কিন্তু রাতে বেলা এই সড়ক দিয়ে অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়। অনেক পথচারী অন্ধকারে সড়ক পারাপার হয়। গাড়ির আলো পরলে অনেকই আবার সড়কের মাঝে থেকে যায়। তাই এই সড়কে উন্নয়নের পাশাপাশি লাইটও লাগানো জরুরি।

এই বিভাগের আরো খবর