শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

বাদ পড়া ১৮ হাজার কর্মীর মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথ খুলছে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২৪  



মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় কোনোরকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় না দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় এক সংক্ষিপ্ত সফরের সময় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

 

 

কর্মী যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কিংবা মালয়েশিয়া কোথাও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যেই করুক, কাউকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’  প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দুই দফা বৈঠকের পর দুই নেতা রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

 


বিদেশি কর্মীদের জন্য মানসম্মত কাজের পরিবেশ বজায় রাখার নিশ্চয়তা দিয়ে মালয়েশিয়ার নেতা বলেন, বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি আলোচনায় এসেছে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে মালয়েশিয়ার কর্মী নেওয়া দরকার। কিন্তু তাদের যেতে হবে একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। কর্মীদের দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না।

 


আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, বাংলাদেশের যে ১৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, সব শর্ত পূরণ করলে তাঁদের নতুন করে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

 


এই ১৮ হাজার কর্মী প্রায় সকল প্রস্তুতি সেরেও ফ্লাইটের জটিলতায় গত মে মাস থেকে কাজে যোগ দিতে দেশটিতে যেতে পারেননি। দেশটিতে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৮ লাখ কর্মী আছেন।

 


মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করার ওপর জোর দিচ্ছে। ইউনূস বলেন, তাঁরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন।

 


এর বাইরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে নিরাপদে ফেরাতে মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করেছে অন্তর্র্বতী সরকার।

 


প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত রোহিঙ্গা ইস্যুটি সমাধানের জন্য তিনি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি আসিয়ান ফোরামে নিয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন।

 


ইউনূস বাংলাদেশকে আসিয়ান সংলাপে অংশীদার করার বিষয়ে মালয়েশিয়ার সক্রিয় ভূমিকা কামনা করেন।

 


মালয়েশিয়া আগামী বছর আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্ব নেবে। দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের ওপরও জোর দেন।

 


ইউনূস বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও তাঁর সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার প্রেক্ষাপট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে জানান ও তাঁর সহায়তা কামনা করেন। অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিমই প্রথম বিদেশি সরকার প্রধান হিসেবে ঢাকা এলেন।

 


ইউনূস বলেন, তাঁরা আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে বেশি কর্মী পাঠানো, কৃষি, জ্বালানি, যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা ও বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার দিকগুলো এনেছেন।

 


সামগ্রিকভাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পের কথা জানান দুই সরকার প্রধান।

 


ইউনূসের আমন্ত্রণে আনোয়ার ইব্রাহিম আজ দুপুর ২টার দিকে ঢাকা পৌঁছান। তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।      এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর