শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১৩ ১৪৩১

বিতর্ক কর্মকাণ্ডে বিলুপ্তির পথে খোকন

যুগের চিন্তা রিপোর্ট:

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৪  

# বর্তমানে তিনি ইমেজ সংকটে ভুগছেন

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। যিনি রূপগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ী মহল ও শিল্প কলকারখানা মালিকদের কাছে এক আতঙ্কের নাম হিসেবে পরিচিত। গত ০৫ আগষ্ট পটপরির্বতনের পর থেকে এই খোকন তার লোকদের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পকারখানার ঝুট-ওয়েস্টিজ মালামাল দখল এমনকি বহু শিল্প কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে করেছেন চাঁদাবাজি।

 

এছাড়া ও আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে আতাঁত করে নিচ্ছেন মোটা অংকের সুবিধা। এর বাহিরে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ বিক্রি করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ইউএস বাংলার কাছ থেকে রূপগঞ্জে তাদের ব্যবসা-বানিজ্যেসহ সব কিছু দেখার বিনিময়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা ও সুবিধা। বর্তমানে খোকনের আশকারায় তার লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার বিরুদ্ধে এমন বিতর্ক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ছাড়া ও কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের কাছে ও রয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা বিএনপির পদ থেকে যে কোন সময় ছিঁটকে পরতে পারেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীরা বলছে, খোকন কখনোই জেলার মূল দলের যোগ্য ছিলো না। 

 

শুধু দিপু ভূঁইয়ার উপর আস্থা রেখেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খোকনকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেন। কিন্তু পথে পথে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইমেজ সংকটে ভুগছেন খোকন। এর আগে বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে তার একত্মতা মিটিংয়ের ছবি প্রকাশে আসলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিতে পেইডে খোকনকে শোকজ করা হয়। যা নিয়ে জাতীয় কয়েকটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এদিকে যা দেখে দিপু ভূঁইয়া ও গোলাম ফারুক খোকন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হুমরি খেয়ে পরেন যার ঘন্টা ২ পরেই রুহুল কবীর রিজভীর স্বাক্ষরিতে আরেকটি পেইডে আগের পেইডটি গুজব বলে কাটিয়ে দেওয়া হয়।

 

তা ছাড়া রূপগঞ্জের ব্যবসায়ীদের আতঙ্ক ও আওয়ামী লীগের দোসর ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া, সুবিধা নেওয়া, রূপগঞ্জে প্রত্যেকটি ওয়ার্ড, পৌরসভা, ইউনিয়নের পকেট কমিটি নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গতে বাধা। ডজন খানিক অভিযোগ ও ইমেজহীন মানুষ দিয়ে জেলা বিএনপির কমিটি হতে পারে না বলছেন জেলা নেতৃবৃন্দ। এদিকে বর্তমানে ফের আলোচনায় জেলা বিএনপির নয়া কমিটি। যেখানে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বিতর্ক কর্মকাণ্ডে ছিঁটকে পরতে পারেন এই খোকন। এদিকে নয়া কমিটি আসলে ও জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এখনো তার ক্লিন ইমেজ ধরে রাখতে পেরেছেন। তা ছাড়া বর্তমানে তার থেকে বেশি জেলা বিএনপিতে যোগ্য প্রার্থী না থাকায় আগামী কমিটিতে সভাপতির দায়িত্বে তার নামই আলোচনায় যাকে ঘিরে গিয়াসের ইমজে সংকটে ফেলতে জেলা বিএনপিতে দ্বন্দ্ব-গ্রপিং সৃষ্টির পায়তায় মগ্ন হয়ে পরেছেন খোকন।

 


সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনে ব্যাপকভাবে আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছেন এই গোলাম ফারুক খোকন। নব্য এই রাজনৈতিকবিদ যিনি অল্প কিছুদিন যাবৎ রাজনীতিতে এসেই বিএনপির নির্বাহী কমিটি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর ছত্রছায়ায় ছাত্রদলের কোন রাজনীতি বা পদ-পদবীতে না থেকেই প্রথমে একটি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পরবর্তীতে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া পর পরই দিপুর আর্শিবাদে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক বনে গেছেন এই গোলাম ফারুক খোকন। এদিকে বর্তমানে গিয়াসের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একটি চক্র প্রকাশ্যে গিয়াসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যাদের সাথে এই গোলাম ফারুক খোকনের অনেকটাই সুসম্পর্ক যা আজকের রাজধানীর প্রেগামেই প্রকাশ পেয়েছে। অনেকে আবার বলছেন গিয়াসের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের সাথে খোকনের কোন হাত রয়েছে কি না তা নিয়ে ও চলছে সমালোচনা। তা ছাড়া বর্তমানে শুধু রূপগঞ্জ দখলেই রাখতে ব্যস্ত খোকন। আর সেখানে কেউ হাত দিলে তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠবেন তিনি এমনটাই বলতে শোনা গেছে তার দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে।  

 


এ দিকে জানা গেছে, কিছুদিন পূর্বে তারাবো পৌরসভা জুড়ে লুটপাটের পাশাপাশি দুই চালককে মারধর করে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্রকল্পের ট্রাকভর্তি বালু লুটের ঘটনায় অভিযুক্ত লুটপাটকারী যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ায় হাফিজুর রহমান পিন্টু জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনের চ্যালা হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে বিগত দিনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে থাকা গোলাম দস্তগীর গাজীর সাম্রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ করছেন এই বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক খোকন। বর্তমানে চ্যালা চামুন্ডারা যৌথবাহিনীর অভিযানে আটক বা গ্রেফতারে আসলে ও শেল্টার দাতা হিসেবে গোলাম ফারুক খোকন বারবারই বেঁচে যাচ্ছে। এদিকে পিন্টুর গ্রেফতারের খবরে অনেকটাই স্তব্ধ হয়ে পরেছিলেন রূপগঞ্জ।

 

কিন্তু গ্রেফতারের কয়েকদিনের মধ্যে জামিন পেয়ে বেড়িয়ে আসায় তার নেতাকর্মীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। ইতিমধ্যে গোলাম ফারুক খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মুড়াপাড়া ইউনিয়নের আওতাধীন দখলে রাখা গার্মেন্টসগুলোর নাম হলো- সিম ফেবিক্স, এস কে এফ র্ফামাসিটিকে‘স, ওয়াটা ক্যামিকেল‘স, এসি আই, টাইগার কোমল পানিয়/মিনারেল ওয়াটার, মীর সিমেন্ট, মেঘনা গ্রুপ, রূপসী কনক্রিট, সিকদার সল্ট, বি এইচ এল গ্রুপ। একই সাথে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন জুড়ে তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে- গ্রামটেক, ফকির এপারেলস, সানজানা গার্মেন্টস। তা ছাড়া তারাবো পৌরসভা এলাকায় এ সি এস ট্রেক্সটাইল। সবই বর্তমানে খোকন ও তার লোকজনদের দখলে। এদিকে সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান বালু হাবিবের রূপগঞ্জ সকল ড্রেজারের নিয়ন্ত্রণ, নুরুজাম্মান খানের ১৭টি ড্রেজারের ব্যবসা পরিচালনা, রূপগঞ্জ উপজেলার সকল হাইজিং কোম্পানীর সমস্ত মিল ফ্যাক্টরী একক নিয়ন্ত্রণকারী, শীতলক্ষ্যা জেডির সকল লোড-আনলোড ড্রেজারের নিয়ন্ত্রণ সবই বর্তমানে একক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক খোকন। শুধু তাই নয় এমন আরো শত শত প্রতিষ্ঠান বর্তমানে খোকনের নিয়ন্ত্রণে। 

 

তা ছাড়া রূপগঞ্জ দখলে রাখতে তাদের বলয়ের লোকজন দিয়েই মূলদল ও অঙ্গসংগঠনের কমিটি সাজিয়ে রেখেছেন এই খোকন। এদিকে আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর বসুন্ধরা গ্রুপের সাথে আতাঁত করে রূপগঞ্জে একটি বিশাল আধিপত্য বিস্তারের পায়তারা করছেন তিনি। এ ছাড়া দাউদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারীর মাধ্যমে পূর্বাঞ্চল এলাকায় জমি খেকো বনে যাচ্ছেন এই খোকন। বিভিন্ন অভিযোগে বর্তমানে লুটে এগিয়ে থাকলে ও রাজনীতিতে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে খোকন। যার ফলে এখন আর দলীয় কর্মসুচিতে খোকনের স্থান হয় না জেলা বিএনপির ব্যানারের পিছনে। ক্ষমতায় না আসতেই রূপগঞ্জ খোকনের পেটে। রূপগঞ্জে খোকন যেন আরেক গাজীর পরিপূরক হিসেবে আখ্যা পেয়েছে। 

এই বিভাগের আরো খবর