রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মশার ঔষধ কার্যকর নয়

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩  


নারায়ণগঞ্জে মশা নিধনের যে ঔষধ নগরীজুড়ে হ্যান্ডস্প্রে এর মাধ্যমে ছিটানো হচ্ছে তা অকার্যকর বলে দাবি করছেন নগরবাসীরা। মশার নিধনের কর্মীরা প্রায় ২দিন পর পর এসে ঔষধ দিয়ে যাওয়ার পরও মশা কামড়ায় এমনও হাজার অভিযোগ করছেন অনেকেই। অন্যদিকে মাসে প্রায় ১ বার ফগার মেশিন দিয়ে ঔষধ দেওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য যন্ত্রণা কমলেও ঘন্টাখানেক পর পরিবেশ আগের রূপ ধারন করে।

 

 

প্রতিবছর ময়লা-আবর্জনার স্থানে, ড্রেনে-ডোবায় বিভিন্ন জায়গায় মশার ঔষধ ছিটানো হয়। এতে মশার বংশ ধ্বংস হয়ে যায় আর কিছুটা স্বস্তি মেলে নগরবাসীর। প্রতি বছরের মতো এবছরও ডেঙ্গু মশা নিধনের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে পদক্ষেপ গ্রহন করলেও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমছে না।

 

 

দিন দিন আরো রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জানা যায়, শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মশা নিধনের ঔষধে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রতিক্রার নেই। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সহ সারাদেশের আরো ৮টি সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু রোগে রেড জোনে রয়েছে।

 


 এ বিষয়ে মাসদাইর, গলাচিপা, নিতাইগঞ্জ, জল্লারপার, পাইকপারা, দেওভোগ, শহিদনগর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, মশার কামড়ের কারনে রাতের বেলাতে তো অতিষ্ঠ হয়ে যাই-ই দিনের বেলাতেও ছার নাই। শান্তিতে কোথাও দাড়ানো বা বসা যায় না। মশার কামড়ের কারনে হাত-পা ফুলে যায় এবং লাল হয়ে যায়।

 

 

মশার কয়েল জ্বালালেও কোনো লাভ হয় না। সারাদিন ঘরে দরজা-জালানা বন্ধ করে রাখতে হয়। দিনের বেলাতেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হয়। এছাড়া বাচ্চাদের নিয়ে ভয় বেশি কারণ তারা তো আর ঘরে বন্দি হয়ে থাকতে চায় না।

 


সৈয়দপুর এলাকার এক ব্যাক্তি যুগের চিন্তাকে বলেন, মশার কামড়ের কারনে বাসায় বসা যায় না। দুই দিন পর পর মশা নিধক কর্মীরা এসে ঔষধ ছিটিয়ে দিয়ে গেলে কী হবে তাতে মশা একদমই মরে না। তবে ফগার মেশিন দিয়ে ধোয়ার মাধ্যমে ঔষধ দিয়ে গেলে কিছুক্ষণ মশা থাকে না কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যায়। কিন্তু সেই ফগার মেশিনের দেখাও প্রায় ১-২ মাস পর পর পাওয়া যায়।

 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার বলেন, নারায়নগঞ্জের পুরো নগরীতে এই ঔষধটা ব্যবহার করার কারণ হলো মশার লাবার দমানোর জন্য এই ঔষধটা কার্যকর। এছাড়া জমানো নোংরা পানিতে এটা ভালো কাজ করে।

 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এর পরিষ্কার-পরিছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা ফোনকলটি রিসিভ করেননি।  

 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক সমিতির সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, নারায়ণগঞ্জ ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তো না যদি সিটি করপোরেশন থেকে প্রথম থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করতো। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে এর জন্য যে ঔষধটা তারা ব্যবহার করছে সেটা একদম যঘন্য। অন্যদিকে যে পরিমানে ঔষধ প্রতিনিধিরা বা কর্মীরা ছিটাচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয় এবং প্রতিনিধিরাও ঠিক ভাবে কাজ করছে না।

 

 

এ কারনে দিন দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জের ২৩ টি ওয়ার্ডেও মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর বেশি। তার মধ্যে ১৩ ও ১৪ নং ওয়ার্ডে কিছুদিন আগে ডেঙ্গু রোগীর দেখা দিয়েছে।  এর জন্য দায়ী হলো সিটি করপোরেশন। কারন তারা যথার্থ ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই।

 

 

এছাড়া যদিও ধরি ঔষধের মান খারাপই হয় তাহলে তারা কী পারতো না ঢাকা তে ঔষধটা পাঠিয়ে পরিক্ষা করাতে। কিন্তু তারা সেটা করে নাই। কেন সিটি করপোরেশন কী এই গরিব। ৯শ কোটি টাকা দিয়ে সিটি করপোরেশন বানাতে পারে  আর জনগনের ভালোর জন্য উন্নত মানের ঔষধ ব্যবহার করতে পােের না।        

 


এ বিষয়ে আমরা নারায়ণগঞ্জ বাসীর সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন বলেন, মশা নিধনের ঔষধ নিয়ে সিটি করপোরেশন গুলো একধরনের বজ্জাতি করছে। বর্তমানে মশা নিধরনের যে ঔষধ তারা ব্যবহার করছে তা এনেছে চায়না থেকে। যা আনার কথা ছিলো সিঙ্গাপুর থেকে। চায়না ঔষধটা অকার্যকর। ব্যবহারের ফলে মশা মরে না।

 

 

অন্যদিকে ফগার মেশিন দিয়ে হেটে হেটে ঔষধ এর মাধ্যমে ধোয়াঁ ছড়ানো হয় কিন্তু সেই ধোয়া তো ড্রেনের ভিতরে পর্যন্ত পৌছায় না। মশা তো আর দিনের বেলাতে উপরে থাকে না। এ কারনে ফগার বা হ্যান্ড স্প্রে কোনোটাই তেমন কার্যকর নয় বলে আমি মনে করি। তবে নগরী থেকে ডেঙ্গু কমাতে হলে সবাইকে সমন্বয় ভাবে কাজ করতে হবে।   এন.হুসেইন রনী /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর