শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১৩ ১৪৩১

মানবসেবার আড়ালে শাহরিয়ার  বাহিনীর ভুমিদস্যুতা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৪  

মানবতার মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর সব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন নিতাইগঞ্জ ডালপট্টি এলাকার উজির ভুইয়ার ছেলে শাহরিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের কথা চাউর করে ভালো সেন্টার নামে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান খুলে তার আড়ালে ভুমিদস্যুতা করাই তার প্রধান কাজ, দাবি স্থানীয়দের। এ লক্ষ্যে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি শামীম ওসমানকে নিয়ে উদ্বোধন করায় ঐ প্রতিষ্ঠানের।

 

 

 


এই সংগঠনের উপদেষ্টা শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শাহরিয়ার বাহিনীকে। শাহরিয়ারের বাবার পালিত সন্তান পরিচয় দানকারী মোখলেছুর রহমান ভুট্টোসহ অন্যান সন্ত্রাসীদের নিয়ে ভুমিদস্যু বাহিনী গড়ে তোলে। পরবর্তীতে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় নারায়ণগঞ্জের অন্যতম ভুমিদস্যু ও সন্ত্রাসী আব্দুল করিম বাবু ওরফে ডিস বাবুকে সাথে নিয়ে নিতাইগঞ্জ এলাকায় একের পর এক দখলে নিতে থাকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জায়গা-জমি। এমনকি তার চাচা কাইয়ুম ভুইয়ার জমিও দখলের চেষ্টা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

 

 

 


পৈত্রিক ওয়ারিশসুত্রে প্রাপ্ত কাইয়ুম ভুইয়ার জমি দখলে নিতে আওয়ামীলীগ আমলে সন্ত্রাসী ডিস বাবুকে ভাড়া করে শাহরিয়ার রহমান ও মোখলেছুর রহমান ভুট্টো। তৎকালীণ সময়ে বাবুকে দিয়ে কাইয়ুম ভুইয়ার সন্তানদের কাছ থেকে এই জমি জোরপূর্বক লিখে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। এ লক্ষ্যে কাইয়ুম ভুইয়ার সন্তানদেরকে হুমকি-ধামকিসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। কিন্তু কাইয়ুম ভুইয়া জীবিত থাকা অবস্থায় তার বন্ধু নির্মল সাহার ছেলে মানিক সাহা ও বিমল চন্দ্র দাসের কাছে এই জমিটি বায়না করার কারণে কাইয়ুম ভুইয়ার স্ত্রী ও সন্তানরা ডিস বাবু ও শাহরিয়ার রহমানের নামে পাওয়ার অব অ্যাটর্নী দিতে বা জমি বিক্রয় করতে রাজী হয়নি।

 

 

 


এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে শাহরিয়ার রহমান। তখন সে বাবুকে আরও চাপ দিয়ে বলে যেকোনো ভাবে এই জমি আমার নামে লিখে দিতে হবে। এর প্রেক্ষিতে বায়না নেয়া বিমল চন্দ্র দাসকে ধরে নিয়ে টর্চাল সেলে আটক করে ডিস বাবু। তখন নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে শাহরিয়ারের নামে এই জমি লিখে দিতে বলে। এতে অস্বীকৃতি জানালে বিমল চন্দ্র দাসের হাতের কব্জি কেটে ফেলে ডিস বাবু। একইসাথে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলে, এবার তোকে জানে মেরে ফেলবো, কেউ তোকে বাঁচাতে আসবে না। আমি যা বলি, তাই কর, হাত কাটার অভিযোগে মানিক সাহা ও তার বাবা নির্মল সাহার নামে মিথ্যা মামলা কর। তখন সে চিকিৎসার কথা বলে ঐ জায়গা থেকে পালিয়ে আসে। কিন্তু বাবুর ভয়ে তখন তার বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পায়নি বিমল চন্দ্র দাস।

 

 

 


স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শাহরিয়ার রহমান ও তার বাবা আহমেদুর রহমান ওরফে উজির ভুইয়া অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির লোক। পূর্ব থেকেই নিতাইগঞ্জ এলাকার চিহ্নিত ভুমিদস্যু হিসেবে পরিচিত তারা। ভুমিদস্যুতাকে জায়েজ করতেই ভালো সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে কয়েকজন শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করে তারা। শুধু শ্রমিকই নয়, মূলত শ্রমিকদের আড়ালে জিমখানা র‌্যালি বাগান এলাকার চিহ্নিত অপরাধী, মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবীদের মাঝেও খাবার বিতরণ করে তারা। তাদের ভুমিদস্যুতায় সহযোগীতার করার লক্ষ্যেই মূলত র‌্যালী বাগানের মাদক বিক্রেতাদের শেল্টার দেয় শাহরিয়ার ও মোখলেছুর রহমান ভুট্টো বাহিনী। এই সেন্টার এর কার্যক্রম সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে খোঁজ-খবর নেয়ার দাবিও জানান তারা।

 

 


তারা আরও জানায়, শুধু ভুমিদস্যুই নয়, জিমখানা র‌্যালীবাগানের মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়া, অসহায়দের নামে অর্থ সংগ্রহ করে সেই অর্থ আত্মসাৎ করাসহ ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে শাহরিয়ার রহমান ও মোখলেছুর রহমান ভুট্টোর বিরুদ্ধে।

 

 


ভুমিদস্যু শাহরিয়ার রহমান ও মোখলেছুর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভুমিদস্যুতার বিস্তারিত জানতে ও ধারাবাহিক প্রতিবেদন পড়তে চোখ রাখুন দৈনিক যুগের চিন্তায়।
 

এই বিভাগের আরো খবর