মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪   কার্তিক ৭ ১৪৩১

মান্নানের শেল্টারে জাপা থেকে সরাসরি বিএনপিতে বাবা-ছেলে

এম মাহমুদ :

প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২৪  

সোনারগাঁয়ে অধিকাংশ নেতারাই রাজনীতিকে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হিসেবে ব্যবহার করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। এরমধ্যে বিশেষ করে পিরোজপুর ইউপির রাজনৈতিক নেতাদের অর্থনৈতিক অবস্থান মহুর্তেই বদলে যায়। কেননা পিরোজপুর ইউপি শিল্প বিস্তৃত ও মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা হওয়ায় নেতাদের দলীয় প্রভাবে কোটি কোটি টাকার চাঁদা ও বালু মহল নিয়ন্ত্রণ করে রাতারাতি বিপুল সংখ্যক অর্থের চেরাগ পেয়ে বসেন পিরোজপুরের নেতারা। যেমন: সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানেরও উত্থান ঘটে তার পৈত্রিক ভিটা পিরোজপুর ইউপি থেকে। কেননা পিরোজপুরে তাঁকে জনসাধারণ একটা সময় বদলী মান্নান হিসেবে অখ্যায়িত করলেও রাতারাতি কোটিপতি ও বিশাল অট্রালিকার মালিক বনে যান ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার কারণে তাঁকে মান্নান সাব হিসেবে অখ্যায়িত করেন পিরোজপুর ইউপির এলাকাবাসী। 

 

ঠিক একই কায়দায় পিরোজপুরের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে বিডিআর যে কিনা এক সময়ে বিডিআরের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও এই পিরোজপুরে সে রাজনীতিকে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপির দলীয় ট্যাগ ব্যবহার করে পিরোজপুরের চেয়ারম্যান হয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান। তবে বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হলে বিএনপির ট্যাগ রেখে জাতীয় পার্টির তৎকালীন সাংসদ খোকার হাত ধরে রফিকুল ইসলাম ও পুত্র শাহাদাতকে নিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। কিন্তু তারাই এখন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মান্নানের হাত ধরে এখন বিএনপির ট্যাগ ব্যবহার করে আবারও আঙুল ফুলে কলা গাছ হচ্ছেন।

 


সূত্র বলছে, বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরবর্তীকে ধাপের নির্বাচনে সোনারগাঁয়ে জাতীয় পার্টির সাংসদ হিসেবে লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁয়ে শাসনতন্ত্র পরিচালনা করলে এই সাবেক সংসদ খোকার হাত ধরেই জাতীয় পার্টিতে যোগদেন বর্তমান সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিডিআর ও তার পুত্র জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসেন। অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের চাঁকা সচল রাখতে জাতীয় পার্টি যোগ দিয়েই বাবা-ছেলে আবারও পিরোজপুরে শাসনতন্ত্র চালিয়ে যেতে থাকে। সেই সাথে রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাতকেও সাবেক সাংসদ খোকার আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করতে থাকে যার ফলাফল হিসেবে রফিকুল ইসলামকে সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সি.সহ-সভাপতিও করেছিলেন সাবেক সাংসদ খোকা। 

 

কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই বিএনপি জোড়ালো আন্দোলন সংগ্রাম ও সুসময়ের একটি হাওয়া প্রবাহমান হতে থাকলে হঠাৎ করে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকেন রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাত। রফিকুল ইসলাম বিএনপিতে আবারও ঠাঁই পেতে আজহারুল ইসলাম মান্নান উপজেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ায় তার হাত ধরেই বিএনপিতে আবারও পরিচয় গ্রহণ করেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। অপরদিকে পুত্র শাহাদাতও জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচির মশিউর রহমান রনির সাথে যুবদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন। যার কারণে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের ব্যানারে এখন সক্রিয়ভাবে রাজনীতি করছেন। 

 

কিন্তু গত ৫আগস্টের পর পিরোজপুর ইউপিতে আবারও রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাত প্রভাব বিস্তার করছেন আজহারুল ইসলাম মান্নানের ছত্রছায়ায়। যার কারণে ইতিমধ্যেই পিরোজপুর ইউপির লাফার্জ-০১,০২ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করছেন। মূলত, মান্নানও তাদের নিজের বলয়কে ভারি করতে পিরোজপুর তার পৈতিক ভিটায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতেই রফিকুল ইসলাম ও তার পুত্র শাহাদাতকে জাতীয় পার্টি থেকে সরাসরি বিএনপিতে ঠাঁই দিয়েছেন।

 

এই বিভাগের আরো খবর