শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

মেয়র এমপি বা প্রশাসন কেউ সাহিত্য চর্চায় এগিয়ে আসছেন না (ভিডিও)

লতিফ রানা

প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২০  

নারায়ণগঞ্জে সাহিত্য চর্চার সুযোগ করে দিতে করে দিতে প্রশাসন থেকে শুরু করে মেয়র বা জনপ্রতিনিধি কেউ এগিয়ে আসছেন না বলে মন্তব্য করেছেন কবি মুহম্মদ সেলিম এবং লেখক ও সংস্কৃতি কর্মী মাকসুদা ইয়াসমিন।

 

সোমবার (২নভেম্বর) যুগের চিন্তার বিশেষ আয়োজন ফেসবুক লাইভ টকশো ‘সাহিত্য আড্ডা’য় এধরণের মন্তব্য করেন তারা। এসময় তারা নারায়ণগঞ্জে সাহিত্য চর্চার উপযুক্ত স্থান ও পরিবেশ নেই মন্তব্য করেন।

 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়, ইংলিশ সেকশনের (রিয়াদ, সৌদিআরব) সাবেক অধ্যক্ষ্য কবি করীম রেজা। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের অতি পরিচিত এবং জনপ্রিয় কবি সুকুমার রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছা জানান সঞ্চালক।

 

লেখালেখি শুরুর বিষয়ে কবি মুহম্মদ সেলিম বলেন, স্কুল জীবন থেকেই কিছু লেখালেখি শুরু করি। তখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন চলছিল। এ সময় বেশ কয়েকজন কবির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় তারা কবিতা পাঠ করতো তখন আমিও তাদের সাথে আমার নিজের লেখা কবিতা পাঠ করতাম।

 

তিনি বলেন, আমরা চুনকা পাঠাগারে সাহিত্য সভা করতাম খুবই অল্প খরচে করতে পারতাম। এখনতো সাহিত্য সভা করার জন্য সেখানে যাওয়ারও অবস্থা নেই। তার মতে একটি কবি সংগঠনের লোকদের আর্থিক কতটুকুই সামর্থ্য থাকবে। তরুণ লেখকরা কিভাবে এত টাকার যোগান দিবেন।

 

তিনি বলেন, একটি জাতিকে গড়ে তুলতে হলে তার শিল্প সংস্কৃতির বিকাশ অবসম্ভাবী। অথচ নারায়ণগঞ্জে সাহিত্য সভা করার পরিবেশ তৈরী করার জন্য এখানকার কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধি কারো কোন চেষ্টা নেই।

 

তিনি বলেন এখন নারায়ণগঞ্জে কোন নাট্যমঞ্চ নেই। সাহিত্য সভা করার জন্য পাঠাগারে যাবেন সেই পরিবেশও নেই।

 

তিনি তার সময়কার অনেক লেখকের নাম উল্লেখ করে বলেন, আমরা সবাই মিয়ে একটি গ্রুপে ছিলাম। তখন এরশাদ বিরোধী আন্দোলন থাকায় আমরা একসাথে রাজপথে ছিলাম। সেখানে আমাদের এত ছড়া কবিতা প্রতিদিন পাঠ করা পড়তো। আমাদের মধ্যে অদ্ভুদ এক ধরণের শিহরণ ছিল।

 

তিনি বলেন, আমাদের সময়ে খোলা আকাশ, খোলা মাঠ ছিল, এত ভবন ছিল না। এখন সেগুলো শুধু স্মৃতি। সেগুলো এখন আর নাই। শিশুরা এখন ঘর থেকে তেমন একটা বের হচ্ছে না।

 

তার মতে, এখন সাহিত্য চর্চা অনেক বেড়েছে। কিন্তু তা সংগঠনের মাধ্যমে দলগতভাবে হচ্ছে না। এখন ব্যাক্তিগত ভাবে অনেকেই সাহিত্য চর্চা আছে। তিনি বলেন, জ্ঞানটা তৈরী হওয়া সহজ নয় এটা ক্রমান্বয়ে অর্জন করতে হয়।

 

লেখালেখির বিষয়ে প্রথম থেকেই পরিবার থেকে উৎসাহ পেয়েছেন জানিয়ে লেখক ও সংস্কৃতি কর্মী মাকসুদা ইয়াসমিন বলেন, এরপর বিভিন্ন সংগঠনে জড়িত হয়ে আমার উৎসাহটা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বর্তমানে দলগতভাবে সাহিত্য করার জন্য তেমন পরিবেশ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনকার লেখকরা হয়তো একটা সিদ্ধান্ত নিলেন  সাহিত্য সভা করার জন্য। কিন্তু সেটা কোথায় করবেন সেই জায়গাটার খোজ করতে পারছেন না।

 

তরুণদেরকে প্রস্তুতি নিয়ে আলী আহাম্মদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে গিয়ে থমকে দাঁড়াতে হয়। সেখানে ভিতরে প্রবেশ করতেই ভয় পাবে তারা। এই পরিবেশটাকেই তারা বুঝতে পারবে না। আমরাতো নদীর পূর্ব পার থেকে এসে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় সাহিত্য সভা করেছি।

 

তিনি বলেন, দলগতভাবে সাহিত্য চর্চা না করলে ইনফরশেন পাওয়া যায় না। নিজের মেধা নিজেকে তৈরী করার বিষয়টা অন্যের সাথে শেয়ার করে যাচাই করে নেয়া সহজ হয়। আড্ডায় বেশ কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনান এই কবিদ্বয়।