সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

যানজটের কবলে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়ক

লিমন দেওয়ান

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২  

ঢাকা মুন্সিগঞ্জ সড়কের মধ্যে পঞ্চবটী একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গাটিতে যানজট যেন নিত্যদিনের ঘটনা। বিশেষ করে পঞ্চবটী থেকে দেওয়ানবাড়ি পর্যন্ত সড়কে যানজটের তীব্রতা অনেক বেশি। সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগেই থাকে। সাধারণ মানুষ অনেক কষ্ট করছে। এই যানজট যেন ওই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করা মানুষের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে।

 

এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা গাড়ি চালকেরা সময় মতো তাদের পন্য সঠিক জায়াগায় পৌছাতে পারছে না। যাত্রীরা তাদের গন্তব্যেস্থানে সময় মতো পৌছাতে পারছে না। এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত অনেকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর গাড়ি চলাচল করে থাকে। যেমন, শাহ সিমেন্ট,ক্রাউন সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্টসহ আরো অনেক বালুর ট্রাক, বাস,ব্যাটরী চালিত অটোরিক্সা, বিভিন্ন গামেন্টর্সের কভার্ড ভ্যান ইত্যাদি । এই এক লাইনের সড়ককে দুই লাইন বানিয়ে বড় বড় গাড়ি চলাচল করে। এতে যানজট আরো বেশি লেগে থাকে।


 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পঞ্চবটী থেকে দেওয়ানবাড়ী পর্যন্ত থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায় পঞ্চবটী মোড়ের সিগন্যাল, বিসিক ১ নং ও ২নং গেট দিয়ে পোশাক কারাখানার কভার্ড ভ্যান প্রবেশ ও বাহিরের কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হয়।

 

এই ছাড়া ও ভোলাইল ও দেওভোগ সড়ক থেকে গাড়ি প্রবেশ ও বাহির হওয়ার কারণ ও এই যানজট সৃষ্টির জন্য অনেকটা দায়ি। তা ছাড়া এই সড়কে চলাচলকৃত গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি সেই তুলনায় রাস্তা অনেকটাই সংকীর্ন যা যানজটের জন্য সহায়ক।

 

এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারছে না সাধারণ মানুষ সারা দিন কাজ শেষ করে এই জ্যামের কারণে পায়ে হেঁটে বাসায় যেতে হচ্ছে তাদের। আশে পাশে যে দোকানদার রয়েছে তারা এই যানজটের কারণে বিক্রি করতে পারছে না কোনো মালামাল । এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা মানুষ অনেক অতিষ্ট হয়ে পড়েছে।

 

এ বিষয়ে গার্মেন্টর্স কর্মী বাবুল জানান, আমি পঞ্চবটী এলাকার বাসিন্দা আমি বিসিকে কাজ করি। সে কারণে আমি পঞ্চবটী থেকে বিসিক পর্যন্ত যাতায়াত করতে হয়। এই রাস্তায় প্রতিদিন যে জ্যামের সম্মুখীন আমাদের হতে হয় সেটা অতুলনীয়। আমি পঞ্চবটী থেকে বিসিক পর্যন্ত হেটে যাই।

 

কারণ আমি গাড়ি ছাড়া হেটে দ্রুত যেতে পারি এতো পরিমানে জ্যাম থাকে। আর একটা জ্যাম মানুষ কতদিন সহ্য করতে পারে ১ দিন ২ দিন এক সপ্তাহ এক মাস না এখানে প্রতি বছর প্রত্যেকটা দিন মানুষ এই যানজটের দূভোর্গে ভোগে আর এটার একটা স্থায়ী সমাধান এই অঞ্চলরের মানুষের প্রানের দাবী।

 

আর এই যানজটের কারণ মূলত এতো বড় বড় সিমেন্টের গাড়িগুলো যাচ্ছে আসতেছে আর এই তুলনায় এই রাস্তাগুলো অনেক চিপা। এই রাস্তা আরো চওরা করেত হবে এই বিষয়ে যে উদ্যোগ নিবে বলছে সে উদ্যোগটা তারাতারি বাস্তবায়ন করলে আমরা এই যানজট থেকে মুক্তি পাবো। তা না হলে আমরা এই যানজটের কবলে পরে অনেক অতিষ্ট হয়ে আছি।

 

এই যানজটের কারণে আমাদের কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। আমরা শারিরীকভাবে ক্লান্ত হচ্ছি কাজ করে। তার পরে আবার হেঁটে হেঁটে বাসায় যেতে হচ্ছে এই ক্লান্ত শরীর নিয়ে এই যানজটের কারণে। তাই আমরা অতি তারাতারি এর স্থায়ী সমাধান দাবি করছি।

 

এবিষয়ে এক ট্রাক চালক জানান, আমি প্রতিদিন এই রোড দিয়ে চলাচল করি কিন্তু এই জ্যামের কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়। আমার এক গাড়ী মাল জায়গা মতো দিয়ে আসতে আসতে আরেক গাড়ী মাল লোড করার সময় পাই না। আমরা প্রতিদিন এই রাস্তায় অনেক সময় নষ্ট করি। প্রতিদিন এই রাস্তায় আসলেই আমাদের দুই তিন ঘন্টার জ্যামে আটকে থাকতে হয়।

 

এই রাস্তার কাজ হবে আমরা শুনতাছি কিন্তু কবে এটা বাস্তাবায়ন হবে। এটা আমরা বলতে পারছি না। আমরা ড্রাইভারা চাই এই কাজটা তারাতারি বাস্তবায়ন হোক তাহলে আমরা শান্তিতে এই রোডে গাড়ি চালাতে পারবো। আর এই রোডে অনেক রোডের রাস্তার সাথে মিলিত। সে কারণে  ওই রোড থেকে যখন গাড়ি বের হয় তখন আবার আমাদের থেমে যেতে হয় সে কারণে ও জ্যাম লেগেই থাকে।

 

এ বিষয়ে এনায়েতনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান জানান, এই রোড দিয়ে চলাচলরত রয়েছে অনেক বড় বড় সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর গাড়ি গার্মেন্টের্সগুলোর বড় বড় কাভার্ড ভ্যান। এই গাড়ীগুলো ঢাকা মুন্সিগঞ্জ রোড দিয়ে চলাচল করে। যে গাড়ীগুলো এই রোড দিয়ে চলাচল করে সেগুলোর জন্য এই রোড নয় আরো বড় রোড দরকার। আবার এই রাস্তার আশেপাশে ফুটপাত বসে এমনেতেই রাস্তা চিকন আবার বিভিন্ন মার্কেটের মালিকেরা ফুটপাত বসাইয়া তারা ভাড়া আদায় করে।

 

আমি তাদের অনেকবার সতর্ক করেছি কিন্তু তারা শুনে না। তারা অনেক শক্তিশালী লোক আমার পক্ষে প্রশাসনের সহযোগীতা ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা সম্ভব নয়। প্রশাসন যদি এই বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করত তাহলে  একটু হলে ও যানজট কমে আসত। প্রশাসন কোনো জোরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আবার এই চিপা রাস্তায় অনেক বাস ব্যবসায়ীরা কাউন্টার বাসিয়ে রেখেছে।

 

অবৈধ অটো স্ট্যান্ডের কারণে কয়েক জায়গায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আর আমি যা মনে করছি এখানে যে ফ্লাইওভার হবে সেটা না হওয়া পর্যন্ত এই রোডে যানজট কমবে না। ফ্লাইওভার হওয়ার পরে আমি আসা করি যানজট কমে যাবে। এলডি/জেসি

 

এই বিভাগের আরো খবর