রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

শহরে ট্রাফিক পুলিশের ভাড়াটে বাহিনীর নীরব চাঁদাবাজি  

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩  


নারায়ণগঞ্জ শহর এখন ইজিবাইক, মিশুক ও অটো রিকশার শহর। প্রতিদিন এই শহরে হাজার হাজার অবৈধ ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, মিশুক ও অটো রিকশা চলাচল করে। কিন্তু প্রশাসন এই সকল ইজিবাইকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পাচ্ছে না, এর প্রদান কারণ হচ্ছে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার মাসোহারা। জানা যায়, এই শহরে প্রতিটি ইজিবাইজ চলে কার্ড এর মাধ্যমে।

 

 

কিন্তু এই কার্ড সরকারি কোন নম্বার প্লেটের কার্ড না। এই কার্ড থেকে সরকারও কোন ট্যাক্স পাচ্ছেনা। এই কার্ড হচ্ছে কিছু কথিত নামধারি অনলাইন মিডিয়ার ভিজিটিং কার্ড, চাবির লিং ও বিশেষ কিছু প্রতীক। এই কার্ড দেখলে পুলিশও গাড়ি আটকায় না। এর প্রদান কারন হচ্ছে প্রতি মাসে ট্রাফিকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এই সকল কথিত কার্ডধারীদের কাছ থেকে মাসোহারা পায়।

 

 

এই মাসোহার কারনেই ট্রাফিকের কর্মকর্তারা গাড়িগুলো ছেড়ে দেয়। আর যে সকল ইজিবাইক চালকদের কাছে কার্ড নেই তাদেরকে আটক করে জরিমানা করা হয় ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এমনই চিত্র দেখা যায় গত শনিবার দুপুরে নগরীর ২নং রেল গেইট এলাকায়। ঘড়ির কাটা তখন দুপুর সাড়ে ১২টা। হঠাৎ সড়কের মাঝে এসে তিন জন লোক একটি মিশুক থামিয়ে দেয়।

 

 

তাদের গায়ে নেই কোন ট্রাফিকের পোষাক, তাদের দেখলেই বুঝা যায় তারা পুলিশের কোন কর্মকর্তা না। তারা ট্রাফিক পুলিশের ভাড়াটে বাহিনী। তাদের কাজ সড়কের মাঝ থেকে মানতি ছাড়া গাড়িগুলোকে আটক করা। আর সেই আটকের একটি অংক যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ ও ভাড়াটে বাহিনীর পকেটে।

 

 

শহরের চারটি রেকার দায়িত্বে থাকলেও এগুলোর সাথে কাজ করছে প্রায় ২০-২৫ জন। আর এই ২০-২৫ জনের কাজ হচ্ছে শহর থেকে ইজিবাইক আটক করে চাঁদা তোলা। সরেজমিনে দেখা যায়, ২নং রেল গেইট এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম এর নেতৃত্বে তিনজন ভাড়াটে লোক ইজিবাইজ আটক করছেন।

 

 

যে সকল গাড়িতে মানতির (চাঁদা) কার্ড আছে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আর যাদের কাছে কার্ড নেই তাদেরকে আটক করা হচ্ছে। আটক করা গাড়িগুলো ভাড়াটিয়ে বাহিনী দিয়ে নেওয়া হচ্ছে ডাম্পিং এ, অন্য একজন চালককে নিয়ে আসছে ট্রাফিক শহিদুল এর কাছে।

 

 

শহিদুলের সাথে লেনদেন হলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়, আর লেনদেন না হলে শহিদুল চালককে একটি টোকেন ধরিয়ে দেয়। এবিষয়ে একজন মিশুক চালক জানান, শহরে অনেক গাড়ি চলছে, তারা আমার গাড়িটি আটক করল। অনেক হাতে পায়ে ধরলাম কিন্তু গাড়িটা ছাড়ল না, এখন ১০০০ টাকা দিলে গাড়ি ছাড়বে।

 

 

আকবর নামে এক অটো রিকশা চালক জানান, তিনদিন আগে আমার গাড়িটি আটক করে, আমি সাংবাদিকের কার্ড দেখিয়ে ছাড়া পায়। এই কার্ড এর জন্য আমি প্রতিদিন ৬০ টাকা করে গ্যারেজে দেয়।   এন.হুসেইন রনী /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর