সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

শীতলক্ষ্যা বাঁচলেই না’গঞ্জ বাঁচবে

পরিচয় প্রকাশ গুপ্ত

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২  


 # নদী দূষণকারী সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে

 


ঊজান থেকে ক্রমশ শুকিয়ে আসা এবং শিল্প ও নাগরিক বর্জ্যরে ভারে মুমূর্ষু নারায়ণগঞ্জের প্রাণ সলিল শীতলক্ষ্যা নদীকে বাঁচাতে বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর নদী দূষণকারী চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুত ও গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় নারায়ণগঞ্জের সুধী সমাজ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

গত ২১ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট কাজী তামজীদ আহাম্মদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। গ্যাসও বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্নকৃত শিল্প প্রতিষ্ঠান চারটি হলো, গোদনাইলের ইব্রাহীম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিল, ফতুল্লা হাজীগঞ্জ এলাকার ওয়েষ্ট নীট ওয়্যার লি., (ক্লথ আপ নীটওয়্যার), সিদ্ধিরগঞ্জ সাইলো রোড এলাকার রান্স এ্যাপারেলস্ লিমিটেড এবং জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার শাকিল নীটেক্স লিমিটেড।

 

 

 

 

 

 

 


অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই এবং দূষণ নিয়ন্ত্রনে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার বা ইটিপি স্থাপন ছাড়াই এরা কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। ইতিপূর্বে এসব কারখানাকে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট শাখা হতে জারমানা আদায় ও ইটিপি স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হলেও তার কোন তোয়াক্কা না করে কারখানা কর্তৃপক্ষ অব্যাহতভাবে পরিবেশ দূষণ করছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তাই বিভিন্ন দূষণকারী কারখানার অব্যাহত দূষণ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানকারী এ দলের সঙ্গে ছিল জেলা পুলিশ. ডিপিডিসির বিদ্যুত বিচ্ছিন্নকারী দল, তিতাস গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্নকারী টীম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি।

 

 

 

 

 

 

 

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ দূষণকারী সকল কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।নরসিংদীর পলাশ থেকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জ পর্যন্ত লক্ষ্যার দু’পাশে কয়েক হাজার শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে সার, রাসায়নিক, কাগজ কল, বোর্ড মিল, তেল কল, ডায়িং ফ্যাক্টরী প্রমুখ।

 

 

 

 

 

 

 

 

এসব মিল কারখানা প্রতিদিন হাজার হাজার টন ক্ষতিকর রাসায়নিক বর্জ্য ঢালছে শীতলক্ষ্যায়। এরপর রয়েছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের নাগরিক বর্জ্য। তাও প্রতিদিন কয়েক হাজার টন। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের মেয়র ড. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শীতলক্ষ্যায় নারায়ণগঞ্জের নাগরিক বর্জ্য মাত্র ২০ শতাংশ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


এদিকে, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক ও সাধারন সম্পাদক আঃ রহমান এ অভিযানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন, দূষণকারী সকল মিল কানখানার বিরুদ্ধেই এ অভিযান চালিয়ে যেতে হবে।উল্লেখ্য, ৬৫ মাইল দীর্ঘ ছোট্ট এ নদীর শান্ত স্বভাব, স্বচ্ছ পানি ও দুপারে খাড়ি সুবিধার কারণেই দূর অতীতে এ নদী তীরে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের পত্তন হয়েছিল।

 

 

 

 

 

 

 

 

মসলিন, তামাক ও পাট এ তিনটি পন্য পরবর্তিতে এ বন্দরের নাম দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে দেয়। শীতলক্ষ্যার স্বচ্ছ ও মিষ্টি পানিকে উপজীব্য করেই এখানে গড়ে উঠে বস্ত্র, হোসিয়ারী ও সাবান শিল্প। লক্ষ্যার সুনাব্যতার কারণেই এর দু’তীরে গড়ে উঠে অসংখ্য শিল্প কারখানা। যে কারণে নারায়ণগঞ্জ আজ দেশের অন্যতম শিল্প নগরী। তাই শীতলক্ষ্যা বাঁচলেই নারায়ণগঞ্জ বেঁচে থাকবে।  এন.এইচ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর