রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সস্তাপুর পুড়ছে, নিষ্ক্রিয় পরিবেশ অধিদপ্তর

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২৪  


বৃষ্টির দেখা নেই বহুদিন। কিন্তু সস্তাপুর এর অবস্থা  দেখলে মনে হবে এখানে চলছে বর্ষাকাল। পুরো একটি সড়কে বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত রঙ্গিন পানি জমে রয়েছে। যার কারনে ঘনবসতিপূর্ন এই এলাকার মানুষের চলাফেরায় ঘটছে বিঘ্ন। মানুষ বাধ্য হয়ে মারাত্মক বিষাক্ত এ পানির সংস্পর্শে আসছে। যার কারনে  তারা বিভিন্ন সল্প থেকে দির্ঘমেয়াদি বিভিন্ন প্রকারের চর্মরোগের স্বিকার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়।

 

 

সূত্রমতে,  এই ডাইংগুলোর নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, নেই অতি প্রয়োজনীয় ইটিপি। তারা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কাঠ ঝুঁট পুড়িয়ে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যার ফলে এ ডাইংগুলোর কারনে তৈরি হওয়া বিষাক্ত ধ্ােয়ায় এ জনপদ আছন্ন হয়ে থাকে সবসময়। এ এলাকার বাসিন্দারা এ নিয়ে রয়েছেন চরম বিপাকে। তারা ভুগছেন নানারকম স্বাস্থ্য জটিলতায়।

 


অর্থাৎ অবস্থা এমন যে এ এলাকায় যেনো বসবাস করাই দায়। এ ডাইংগুলো এ জনপদকে করেছেন বসবাসের অযোগ্য। অথচ এ নিয়ে দফায় দফায় সংবাদ প্রকাশ হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর যেনো মুখে কুলুপ এটেছেন। তারা নিচ্ছেননা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সবাই।
তথ্য নিয়ে এবং সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় দীর্ঘদিন ধরেই এ এলাকায় চলছে বেশ কয়েকটি অবৈধ ডাইং।

 

 

এর মধ্যো অন্যতম হলো হলি ডাইং, আকবর(প্রধান ডাইং),কাদির ডাইং । এই ডাইংগুলোর কালো ধোয়ায় ছেয়ে রয়েছে গোটা এলাকা। শুধু  তাই  নয় এইসব ডাইংগুলোর কেমিক্যাল মিশ্রিত বিষাক্ত পানি সরাসির রাস্তায় এসে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। দিনের বেলা তারা পানি না ছেড়ে তারা সন্ধ্যার পরপর  ডাইংগুলোর পানি সরাসরি সড়কে ছাড়ছেন।

 


এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং ইটিপি থাকলেও ঢাকা টেক্সটাইলের বিরুদ্ধেও রয়েছে একই অভিযোগ।এ   ডাইং এর বিষাক্ত পানির পরিমান ও নেহাত কম নয়। এ ডাইং এর কারনে ভোগান্তীর শেষ নেই এ জনপদে। এই ডাইংগুলোর মালিকেরা নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে গোটা এলাকাকে বিপদগামী করে তুলেছেন।

 


পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, এ ডাইংগুলো অবৈধভাবে চলছে। কাদির ডাইং বরাবর পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইতিমধ্যো নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। প্রধান ডাইং থেকে ইতিমধ্যো এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্ষতিপুরন আদায় করা হয়েছে। এবং হলি ডাইং বরাবর পরিবেশ অধিদপ্তর নোটিশ প্রদান করেছে। তবে এতকিছুর পরও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এসব ডাইংগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ না হওয়ায় এলাকাজুড়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

 


নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, এ  ডাইংগুলোর কারনে  আমরা দীর্ঘদিন ধরে অনেক সমস্যায় আছি। এদের কালো ধোয়ার কারনে আমাদের বুকে সমস্যা দেখা দিয়েছে । নিশ্বাস নিতে এখন কষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে এই ডাইং এর কারনে পানি পায়ে লাগলে পা পঁেচ যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। তবে কারো অসুবিধার কথা চিন্তা না করে তারা তাদের স্বার্থের জন্য ঝুঁকিতে ফেলছে গোটা এলাকার বাসিন্দাদের।

 

 

যা মোটেও কাম্য নয়। তিনি এ ডাইং বন্ধ করে দিয়ে এ এলাকার মানুষদের এ অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তির দাবি জানান। আরেকজন জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে তাদের অরাজকতা ।

 


এ নিয়ে আকবর  ডাইং এর মালিক এর সাথে কথা বললে তিনি কাঠ পুড়িয়ে পরিচালনার কথা স্বিকার করে বলেন এভাবে তো সবাই চালাচ্ছে। কাদির ডাইং এর মালিক কাদির বলেন এই পানি আমার একার নয় সবার। হলি ডাইং থেকে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে এলাকাবাসী চায় এসব অবৈধ ডাইং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাকে অভিশাপ মুক্ত করা হোক।

 


এখন দেখার বিষয় পরিবেশ অধিদপ্তর এলাকাবাসীর  এ সমস্যা সমাধানে কি উদ্যোগ গ্রহন করে। তারা এসব ক্ষতিকর প্রতিষ্ঠান স্থায়ীভাবে বন্ধ দেখতে চায়। কারন এদের জরিমানা করা হলে তারা পুনরায় এসব কার্যক্রম চালু রাখে।   এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর