বৃহস্পতিবার   ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ৪ ১৪৩১

সুব্রত সাহার হাতে আলাদিনের চেরাগ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

 

 

# লিটন সাহার শেল্টারে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা সুব্রত সাহা, বিপুল মন্ডল, তুষার চৌধুরী

 

টানবাজার নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা। ব্যবসা-বাণিজ্যে এ টানবাজারের রয়েছে শত বছরের ইতিহাস। বিগত দিনগুলোতে দিনব্যাপী ব্যবসায়ী ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় গমগম থাকতে দেখা যেত এই এলাকার প্রতিটি অলিগলি। 

 

কিন্তু বেশ কয়েক বছর যাবৎ কিছু কথিতদের আনা গোনায় ঐতিহ্যবাহী এই টানাবাজারের সুতা ব্যবসায় নেমে এসেছে ধস। বর্তমানে টানবাজারের সুতা ব্যবসার সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে বন্ডের সুতা খোলা বাজারে আসা। যা বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানায় ব্যবহারের জন্য আনা এলসির সুতা খোলা বাজারে বেচাকেনা হওয়ায় টানাবাজারে দেশী সুতা ব্যবসায়ীরা মার খাচ্ছেন। এমনকি অনেকেই সেই এলসির কালোবাজারীদের হাতে নির্যাতিত হয়ে নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের ব্যবসা ফেলে নরসিংদীর মাধবদীমুখী হয়েছেন ব্যবসায়ী। 

 

ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, এলসির এই কালোবাজারীর মাধ্যমে ধ্বংস টানবাজারের সূতা ব্যবসার শত বছরের ঐতিহ্য। টানবাজারের এই ব্যবসা জিমিয়ে পড়ার পিছনে অন্যতম নায়ক হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা। তার শেল্টারে টানবাজারে এলসির কালোবাজারী পরিচালনা করতেন তারই বন্ধু সুব্রত রায় (এস এস থ্রেড এক্সেসসরিক্স), বিপুল মন্ডল (শোভা এন্টারপ্রাইজ), তুষার চৌধুরী (ওয়াস্টগ্রেড)। এই কতিপয় আসাধু ব্যবসায়ী ব্যাক টু ব্যাক এলসির জন্য আনা সুতা চোরাইপথে টানবাজারে বিক্রি করছেন।

 

 টানবাজার জুড়ে রয়েছে তাদের একাধিক অবৈধ গোডাউন যেখানে থাকতো বিদেশ থেকে আমদানি করা সূতা যা বিভিন্ন কৌশলে মিলের লোগো সংবলিত বস্তা, ব্যাগ বা প্যাকেট করে অবৈধভাবে এনে তারা সেখানে রাখেন। আর কতিপয় আসাধু ব্যবসায়ী ব্যাক টু ব্যাক এলসির জন্য আনা সুতা চোরাইপথে টানবাজারে এনে মাসে শত শত কোটি টাকার সুতা বিক্রি করতেন। তা ছাড়া তাদের এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনায় পারসেন্টেস পেতেন আওয়ামী লীগের সমালোচিত সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও তার ভাই সাবেক এমপি সেলিম ওসমান, 

 

উভয়ের ভাতিজা আজমেরী ওসমান ও  নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল। এদিকে বহু বছর যাবৎই টানবাজারে অবৈধ এলসির ব্যবসা পরিচালনা হলে সে সময় সেখানে বিপুল মন্ডল (শোভা এন্টারপ্রাইজ), তুষার চৌধুরী (ওয়াস্টগ্রেড) এদের মাধ্যমে পরিচালনা হলে ও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই লিটন সাহার কথায় তার বন্ধু সুব্রত রায় (এস এস থ্রেড এক্সেসসরিক্স) তাকে জয়েন করা হয়। পরবর্তীতে টানবাজারে এলসির পার্সোনাল অফিস অন্য সাইডে থাকলে ও বর্তমানে প্রভাবে পদ্মা সিটি প্লাজার নিচ তলায় অফিস স্থাপন করেন।

 

 মেখান থেকেই তাদের অপকর্মের কার্যক্রম পরিলাচনা হয়। তা ছাড়া বর্তমানে লিটন সাহার বন্ধু পরিচয়ে বন্ডের গডফাদার হিসেবে পরিচিত হয়েছেন সুব্রত সাহা সেই এলসির ব্যবসা পুরোই পরিচালনা করেন টানবাজার আশা হলে সামনে সামনে তার (এস এস থ্রেড এক্সেসসরিক্স) সেই অফিস থেকে। তা ছাড়া ও টানবাজারে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র প্রতিদিন অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার বন্ড সুতা বিক্রি করলে ও তাদের সকলের মূল হোতা হিসেবে রয়েছেন সুব্রত সাহা, বিপুল মন্ডল, তুষার চৌধুরী।

 

তা ছাড়া আরো জানা গেছে, বন্ড সুতার সেই সিন্ডিকেটে লিটন সাহার ২৫ কোটি টাকার বেশি লগ্নি করা আছে। বন্ড সুতার এই ৪৬ ব্যবসায়ী থেকে তিনি মাসিক বিশাল অঙ্কের টাকা আদায় করতো লিটন সাহা। বন্ড সুতার এই ব্যবসায়ীদের কাছে লগ্নি করা অর্থ ইনকাম ট্যাক্স ফাইলেও দেখায়নি লিটন সাহা জানিয়েছে সূত্র। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে লিটন সাহার টাকা আনতে সহযোগী করেছেন তারই বন্ধু সেই সুব্রত সাহা ও জেসি এন্টারপ্রাইজের আইয়ুব আলী, পুলক চৌধুরী এরই মাঝে আরো রয়েছে সেই বিপুল সাহা ও তুষার আহম্মেদ ।

 

 তা ছাড়া ও গত ঈদুল ফিতরকে টার্গেটে রেখে লিটন সাহার কথায় বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের কথা বলে সেই সুব্রত সাহা প্রায় কয়েক কোটি টাকা তুলেছেন। সেই টাকা কোন কাজে লাগানো হয়েছে সেটা এখানো অজানা। তা ছাড়া গত কয়েক বছর যাবৎ সুব্রত সাহা, বিপুল মন্ডল, তুষার চৌধুরী টানবাজার আমিন মার্কেটে মদ ও জুয়ার আসর বসায়। এদিকে গত ৫ আগষ্ট  আওয়ামী লীগের সভাপতি নেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে তার সাথে পালিয়ে যায় ওসমান ও প্রেত্মাতারা। 

 

বর্তমানে ইয়ার্ন মার্চেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন ও টানবাজারের ব্যবসাকে তছনছ করে পালিয়েছেন সেই চাঁদাবাজ লিটন সাহাও। কিন্তু তার পরে ও তার সেই লঘ্নি হওয়া টাকা কালেকশন করে থাকেন সেই এলসির সিন্ডিকেটের হোতারা। বর্তমানে তারা লিটন সাহার কথা মতোই দিব্যি পরিচালনা করে যাচ্ছেন সেই এলসির কালোবাজারী। যাকে ঘিরে তাদের সকল অপকর্ম তুলে ধরতে যৌথ বাহিনীর দিকে তাকিয়ে আছে নিপীড়িত ব্যবসায়ীবৃন্দ।  

 

এই বিভাগের আরো খবর