সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

হোন্ডাবাহিনী নিয়ে মেয়রের পর ক্ষুব্ধ এমপি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২৩  

 

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর পরে এবার শহরের হোন্ডাবাহিনী নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ খুলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। সেলিম ওসমানের ভাষায়, বর্তমানে কিছু উশৃঙ্খল ছেলে পেলের জন্ম হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরে। আবার আরেকটি ভাইজান গ্রুপ হয়েছে। এই ভাইজান গ্রুপের ছেলে পেলেরা লম্বা লম্বা চুল রেখে শহরে হোন্ডা দিয়ে মহড়া দেয়। এই হোন্ডাবাহিনীর সদস্যরা কে কবে কোথায় থেকে  মোটর সাইকেল কিনল, আর তা নিয়ে কিভাবে রাস্তায় মহড়া দেয়। মোটর সাইকেল বাহিনী চলবে না। লম্বা লম্বা চুল রেখে আমার ফ্যাক্টরিতে মোটর সাইকেল দিয়ে গিয়ে মালিকদের ধমকা ধমকি করে তারা কারা।

 

ডিসি-এসপি সাহেব আপনারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। অন্যথায় আমরা লাল পতাকা নিয়ে রাস্তায় মিছিল করবো। মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত এক সভায় এমপি সেলিম ওসমান এই কথা বলেন। সাংসদের এই বক্তব্য শহরে টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে। সেই সাথে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সচেতন মহলে প্রশ্ন উঠেছে শহরের হোন্ডাবাহিনী কারা। তারা কার শেল্টারে চলেন। তাদের আয়ের উৎস বের করার আহবান রেখেছেন এই সাংসদ। কিন্তু প্রশাসন তার এই বক্তব্য কতটুকু আমলে নিবেন। তাছাড়া জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে যে ১৫ দিনে আল্টিমেটাম দিয়েছে তারা কী এই সময়ের মাঝে তাদের খুঁজে বের করতে পারবেন। তবে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকল সচেতন মহল চান এই হোন্ডা বাহিনীর অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে।

 

অপরদিকে নগরবাসীর মতে, দিন অথবা রাত হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় ২০/২৫টি হোন্ডা শহরে মহড়া দিচ্ছে। তবে দিনের চেয়ে রাতে এদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়। রাত যত গভীর হয় হোন্ডা বাহিনীর তৎপরতা ততই বেড়ে যায়। কয়েকটি গ্যাং শহরে এই মহড়া দিয়ে আসছে। আর সব কয়টি গ্যাংয়ের গুরু একজনই। কিন্তু তাদের নেতৃত্বে একাধিক ব্যক্তি রয়েছে। অনেকে বলছেন, এরা শহরের চিহিৃত সন্ত্রাসী। প্রতিটি বাহিনীর সাথেই অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। পুলিশও রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এই হোন্ডা বাহিনী নিয়ে গত বছর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীও।

 

নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে হোন্ডা বাহিনীর আবির্ভাব হয়েছে। বিশ-পঁচিশজন হোন্ডা নিয়ে শহরে ঘুরে বেড়ায়। আমি প্রশাসনের কাছে জানতে চাই এ হোন্ডা বাহিনী কারা ? যারা রাতের আঁধারে একসাথে ছুটে বেড়ায়? নারায়ণগঞ্জ শহরকে কি আবার খুনের শহরে পরিণত করতে চায় ? এই শহরে কি আমাদের ভয়ে ভীতু হয়ে থাকতে হবে? নিশ্চয়ই না। জানা গেছে, রাত হলেই হোন্ডা বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যায়। শহীদ জিয়া হলের গেটের সামনে, কলেজ রোড, খানপুর, ২নং রেলগেইট, চাষাড়া বালুর মাঠসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মহড়া দেয় হোন্ডা বাহিনী। প্রতিটি বাহিনীর কাছে একাধিক অবৈধ অস্ত্র রয়েছে যা বিভিন্ন সময় প্রদর্শনও করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চাষাড়ার উপর দিয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ পাড়ি জমায়। এর মধ্যেই গত কয়েকবছর রাত হলেই চাষাড়া হোন্ডাবাহিনীর নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। রাত ১২টার পর ২০/২৫ হোন্ডা শহরে মহড়া দেয়। এদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহসও হয় না। নগরবাসী জানান, এরা দীর্ঘদিন ধরে শহরে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই হামলা-মামলা চালানো হয়। তাই সব কিছু মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রশানকে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান সর্বস্তরের লোকজন। তবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবী বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর