মহানগর বিএনপির সদস্য অজ্ঞান ডাক্তার (অ্যানেস্থেসিয়া) মজিবুর হোসেন
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য অজ্ঞান ডাক্তার (অ্যানেস্থেসিয়া) মজিবুর হোসেন মাফিয়া স্টাইলে নগরীর ডনচেম্বার এলাকার মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ক্লিনিকে তাফালিং দেখিয়ে ওপারেশন থিয়েটার রুমের তালা ভাঙতে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৭ ডিসেম্বর নগরীর চাষাঢ়া ডনচেম্বার এলাকায় মেডিস্টার হসপিটালে দলবল নিয়ে তিনি এই ঘটনা ঘটান বলে জানান হসপিটালের মালিক কর্র্তৃপক্ষের লোক আক্কাস আলী। ডাক্তার মজিবুর হোসেন অজ্ঞান ডাক্তার হিসেবে পরিচিত।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, চাষাঢ়া মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠানটি গত ৩ বছর যাবৎ ২ জন পার্টনারশিপের মালিকানায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। তার মাঝে মালিক পক্ষের ১ জন হলেন মো. আক্কাস আলী, অপর জন হলেন ডা. লায়লা পারভীন মাধবী। তারা দুজনেই সমপরিমান অর্থ বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটির মালিক হন।
মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ল্যাব ক্লিনিকের সিইও নাসরিন সুলতানা নদী জানান, আমি দুই মালিকের কর্মচারী হিসেবে এখানে চাকরী করি। কিন্তু দীর্ঘ দিন যাবৎ ডা. মাধবীর শেল্টারে আমরা যখন না থাকি তখন তার ছেলে অমিত হাসান ওপারেশন থিয়েটার রুমে প্রবেশ করে মাদক সেবন করে বলে প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মচারী আমাকে জানান। কিন্তু তাদের সতর্ক করার পরেও তারা এতে কোন কর্ণপাত করেন নাই। এছাড়া বিল্ডিংয়ের মালিকের সাথে হসপিটালের মালিক পক্ষের চুক্তির মেয়াদ শেষ। আর এজন্য মালিক পক্ষের আক্কাস আলী তার অপর মালিক পক্ষ ডা. লায়লা পারভীন মাধবীকে হিসেব নিকেষ নিয়ে বসার জন্য আহ্বান জানান । সেই সাথে তাদের পাওনা দেনা নিয়ে হিসেব নিকেষ করার জন্য মাধবীকে বসার জন্য বলেন। এমনকি তাকে লিখিত ভাবে চিঠি দেয়ার পরেও মালিক পক্ষের ডা. মাধবী এখনো পর্যন্ত বসেননি। কবে নাগাদ বসবেন তাও জানান না। এদিকে দুই মালিক পক্ষের ঝামেলা শেষ না হতেই ভবন মালিকের সাথে চুক্তি নবায়ন করার জন্য তিনি নোটিশ দিয়েছেন। ডা. মাধবী হিসেব নিয়ে না বসায় মালিক পক্ষের আক্কাস সাহেব বাধ্য হয়ে মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ল্যাব ক্লিনিকের ওপারেশন থিয়েটার রুমের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। ২৬ ডিসেম্বর রাতে মালিক পক্ষের আক্কাস সাহেবের স্ত্রী এসে ওপারেশন থিয়েটার রুম বন্ধ করে দেন।
অপরদিকে হসপিটালের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল ২৭ ডিসেম্বর এশার পরে ডা.মজিবুর হোসেন শতাধিক লোক নিয়ে মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ক্লিনিকে যান। সেখানে গিয়ে হসপিটালে ৬ষ্ঠ তলার অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রুমের তালা ভেঙ্গে ফেলার জন্য হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। সেই সাথে হসপিটালে হৈ চৈ শুরু করে দেন। আর এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগিরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। এছাড়া তার তাফালিং কর্মকাণ্ড দেখে অন্যান্য রোগি থেকে শুরু করে হসপিটালের থাকা মানুষ বিরক্ত হন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রশ্ন তুলেন যেখানে মালিক পক্ষের জামেলা চলতাছে সেখানে ডা. মজিবুর বাহিরের ডাক্তার হয়ে এখানে মাফিয়া স্টাইলে তাফালিং করবেন তা তো হতে পারে না। এজন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী তুলেন সচেতন মহল।
মেডিস্টার হসপিটাল এন্ড রেনেসা ল্যাব ক্লিনিকের মালিক পক্ষ মো. আক্কাস আলী বলেন, এখানে আমাদের মালিকপক্ষের ঝামেলা হচ্ছে। আমি জানতে পেরেছি ওপারেশন থিয়েটার রুমের কনসালটেন্ট কক্ষে বসে ডা. মাধবীর ছেলে এসে মাদক সেবন করে হসপিটালে উশৃঙখল করে। আর এজন্য ওটি রুম বন্ধ করে তারা দেয়ার জন্য বলেছি। এছাড়া ডা.লায়লা পারভীন মাধবীকে প্রতিষ্ঠানের হিসেব নিকেশ নিয়ে একাধিকবার বলার পরেও তিনি তা নিয়ে বসতে অনীহা করছেন। তাছাড়া তিনি ক্যাশ থেকে যখন যা ইচ্ছা টাকা নিয়ে যাচ্ছে। অথচ হিসেব নিয়ে টালবাহানা শুরু করছে। আর যখনি তাকে বসার জন্য চাপ দেয়া হয় তখনি তিনি নানা টালবাহানা করেন। আমাদের মালিক পক্ষের মাঝে এসে বাহিরের কোন ডাক্তার তাফালিং দেখাতে পারে না।
এবিষয়ে ডা. মজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করে প্রথমে জানান একটা মিটিংয়ে আছেন। পরবর্তিতে আবার ফোন করা হলে তিনি জানান, এই হসপিটাল নিয়ে মালিক পক্ষের মাঝে অনেক দিন যাবৎ ঝামেল চলছে। আমরা আগামীকাল বসে তা সমাধান করার চেষ্টা করবো। এসময় তাকে প্রশ্ন করা হয় দুই মালিক পক্ষের ঝামেলার মাঝে আপনি গিয়ে তালা ভাঙতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান। তখন ফোনকল কেটে দেন।