হোসিয়ারি সমিতির নির্বাচনে আর সিন্ডিকেট চাননা ব্যবসায়ীরা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
সেলিম ওসমান ও নাজমুল আলম সজল
হোসিয়ারি ব্যবসায়ীদের আস্থার সংগঠন বাংলাদেশ হোসিয়ারি এসোসিয়শনের ২০২৫-২০২৭ সালের নির্বাচনকে ঘিরে নীল নকশার ছক আকঁছেন একটি পক্ষ এমন অভিযোগ করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এদিকে শোনা যাচ্ছে, বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের দোসর সেলিম ওসমান তার সহযোগী নাজমুল হাসান সজল ও কবির হোসেনের মাধ্যমে জিম্মি ছিলো হোসিয়ারী সমিতি। কিন্তু পটপরিবর্তনের পর রাহুমুক্ত হলে ও আবারো বিভিন্ন কৌশলে কলকাঠি নাড়ছেন সেই ওসমান দোসররা। অভিযোগ উঠেছে, অনেকে আগের মতোই হোসিয়ারী ব্যবসায় জড়িত না থেকে ও নানা কায়দায় ও আতাঁতে সমিতিতে সদস্য পদে স্থান পেয়ে বর্তমানে সাধারণ গ্রæপে নির্বাচন করতে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। তা ছাড়া নয়ামাটি এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে চাইছেন ভোট কিন্তু আস্থা যোগাতে পারছেন না ব্যবসায়ীদের। যা নিয়ে চলছে সমালোচনা।
বর্তমানে হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচনে শক্ত প্রার্থী বলা হচ্ছে হোসিয়ারী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক যুবদল বদিউজ্জামান বদুর প্যানেল। গত ৫ আগষ্টের পর নয়ামাটি হোসিয়ারি পল্লি, উকিলপাড়া এলাকায় সকল হোসিয়ারী তিনি তার বলয় নিয়েই পাহাড়া দিয়েছিলেন। এছাড়া সাবেক সভাপতির দায়িত্বে থাকায় ব্যবসায়ীরা তার যোগ্যতা অনুযায়ী বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় সভাপতি হতে বদুকে চাপ প্রয়োগ করলে ও তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা বাছাই হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এমনকি নির্বাচনের কমিশন ঘোষণা করে উৎসবমুখর নির্বাচনের ব্যবস্থা তৈরি করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে বদিউজ্জামান বদু মনোনয়ন সংগ্রাহ করেছেন। তার প্যানেলে রয়েছেন, আব্দুর সবুর খান সেন্টু, মনির খান, দুলাল মল্লিক, আতাউর রহমান, মো,মিজানুর রহমান, আলহাজ্ব মনির হোসেন, মো.শাহীন, আব্দুল হাই, বৈদ্যনাথ পোদ্দার, মো.মাসুদুর রহমান, পারভেজ মল্লিক, এসোসিয়েট-সাঈদ আহমেদ স্বপন, নাসির শেখ, মো.বিল্লাল হোসেন,অনিল বাবু, হিরু শেখ, নাসিম আহমেদ। এরা সকলেই বিগত দিনে হোসিয়ারী সমিতিতে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। বর্তমানে ও ব্যবসায়ীদের আস্থায় রয়েছেন এরা।
সূত্র বলছে, বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশ হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েশনের একছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিলো বিনা ভোটে নির্বাচিত ওসমান পরিবারের অনুসারীদের হাতে। ভোট ছাড়াই সেখানে নেতা ও প্যানেল নির্বাচন করা হতো। বছরের পর বছর বিনা ভোটেই হয়ে যেত কমিটি। সভাপতি পদে বার বার ছিলেন নাজমুল আলম সজল। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছিল। গত ৫ আগষ্ট শেষ হাসিনা পালিয়ে গেলে বদিউর জাম্মান বদুর মধ্যস্ততায় হোসিয়ারীতে ওসমান অনুসারীদের অধ্যায়ের শেষ হয়। এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর বার্ষিক সাধারণ সভায় সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাঈদ আহম্মেদ স্বপন আগামী ফেব্রæয়ারীতে ব্যবসায়ী সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেন। এ সময় প্রাথীরা ব্যবসায়ীদের মতামতের ভিক্তিতে নির্বাচন করা প্রশয় দেন। পরবর্তীতে ১৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী বোর্ড প্রথমে আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোটার হওয়া নিশ্চিত করেন। এরপর গত ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ পায়। এছাড়া আগামী ৩ ফেব্রয়ারী বাংলাদেশ হোসিয়ারী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করার হবে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হবে এবং ১৮ জানুয়ারি প্রার্থীদের ক্রমিক নম্বরসহ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ইতিমধ্যে বদিউজাম্মান বদু বারবারই ঘোষণা দিয়ে আসছেন, হোসিয়ারী মালিক ব্যবসায়ীদের কাছে কেউ চাঁদাবাজী সন্ত্রাসী করলে রেহাই পাবে না। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমার প্যানেলে ভোট দিলে আমরা জয়যুক্ত হবো। আমার প্যানেল বিজয়ী হলে ভোটারদের আমি বিনা খরচে পিকনিকে নিয়ে যাবো। হোসিয়ারি ব্যবসায়ীরা যত রাতই হবে যখনই বিপদে পরবেন আমাকে ডাকলে আমি আপনাদের পাশে ছিলাম পাশে থাকবো। সকল সদস্যর ফ্যামিলির জন্য কমিউনিটি সেন্টার ফ্রি করবো। ছিনতাই চাঁদাবাজি যেন না হয় ফজরের নামাজ পড়ে ছিনতাইকারীদের খুঁজেছি। হোসিয়ারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোন চাঁদা নিতে পারবে না। আমি যা কিছু করবো হোসিয়ারী মালিক ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করবো। তার এমন বক্তব্যে বদুতেই আস্থা খুঁজছেন হোসিয়ারী ব্যবসায়ীরা।