Logo
Logo
×

নগর জুড়ে

ওসমানদের লুটপাটের হিসাব নিয়ে উত্তপ্ত না.গঞ্জ ক্লাবের এজিএম

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

ওসমানদের লুটপাটের হিসাব নিয়ে উত্তপ্ত না.গঞ্জ ক্লাবের এজিএম

ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাব

 বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ ১৫ ক্ষমতায় থাকা কালিন সময়ে ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে একচেটিয়া ভাবে ওসমান পরিবারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। শুধু তাই নয় ওসমানদের লুটপাটের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ ক্লাব। কিন্ত ৫ আগষ্টের পর গত ২১ ডিসম্বের উৎসবমুখুর নির্বাচনের মাধ্যমে ওসমানদের কালো থাবা মুক্ত হয় ক্লাবটি।


সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন পর ওসমান মুক্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) অনুষ্ঠিত হয়।  সেখানে গত ৩ মাসের সকল হিসাব উঠে আসলে সাধারন সদস্যরা বিগত দিনের হিসাবসহ দেখাতে চাইলে তা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয় ৫ আগস্টের পর দায়িত্ব নেয়া পর্ষদ। যা নিয়ে সেখানে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পর্যায়ে বাকি সদস্যরা এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে উঠলে ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সহ-সভাপতিবৃন্দ আশ^াস দেন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত চলছে শীঘ্রই সেই হিসাব উপস্থাপন করা হবে। কিন্তু দ্রুত হিসাব চাইছেন সদস্যরা যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। এ ছাড়া ও সেখানে নব্য নির্বাচিত সভাপতি, সহ-সভাপতি, পরিচালকরা সদস্যদের সাথে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সার্বিক পরিস্থিত নিয়ে আলোচনা হয়। দ্রুত ব্লিডিং এর কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি জানান নির্বাচিত সভাপতি ও সহ-সভাপতিবৃন্দ। এ সময় সভাপতি গত ৩ মাসের হিসাব উপস্থাপন করলে সেখানে ৫৩ লাখ টাকা প্রফিট দেখা যায়। এ ছাড়া বিগত দিনে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের দূর্নীতি পিছনে থাকা শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটু, সহ-সভাপতি রামু সাহা, সহ-সভাপতি এস.এম রানার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জোড় তদবির জানায় সদস্যরা, সেখানে ও পর্ষদের সকলেই ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি জ্ঞাপন করেন।



এদিকে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্টের পর ওসমানরা পালিয়ে গেলে ও এদের লেজ এখনো রয়ে গেছে। যারা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সেক্টরে বহাল থেকে ওসমানদের সুবধিাসহ নানাভাবে ওসমানদের বাঁচিয়ে যাচ্ছেন। বিগত দিনে শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহম্মেদ টিটু ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি, তারই সহযোগী রামু সাহা, ও এস.এম রানা ছিলেন ক্লাবের সহ-সভাপতি। যাকে ঘিরে এরা একত্রিত হয়ে পুরোই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে গতে কয়েক বছরে লুটপাটের আখড়ায় পরিণিত করেছেন। হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। যা ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে আসলে ও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ দেখা যাচ্ছে না।  



তা ছাড়া আরো জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে গত কয়েক বছরে ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করেন ওসমান দোসররা। আর এই দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ এর প্রধান মাস্টার মাইন্ড হচ্ছেন শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু। যিনি নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে পর পর  একাধিক বার সভাপতি পদে ছিলেন। আর এই সভাপতির পদে থেকেই ক্লাবের ৭২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তানভীর আহমেদ টিটু। গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানের বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন শামীম ওসমানের শালা ৭২ কোটি টাকা চুরি করে নিয়েগেছে এবং একই দিনে ২৭ কোটি টাকার চেক তুলে নিয়ে গেছে। এমন সংবাদ প্রকাশ্যের পরই নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের একাধিক সদস্য বলছে তানভীর আহমেদ টিটু ক্লাবের অর্থ একা আত্মসাৎ করেনি। তার সাথে ক্লাবের অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি করেছেন ক্লাবের সাবেক সিনিয়ন সহ-সভাপতি বিপ্লব সাহা রামু ও সাবেক সহ-সভাপতি এস.এম রানা। তারা দুই জনেই এই দুর্নীতির সকল তথ্য জানেন। এস.এম রানা ও রামু সাহাকে গ্রেফতার করলেই তানভীর আহমেদ টিটুর সকল তথ্য পাওয়া যাবে।



এদিকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের কয়েকজন সদস্য জানান, গত বার এজিএম’এ নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ১৬ লক্ষ টাকা করে ১৫০জন নতুন সদস্য নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আগের সদস্যরা এবিষয়ে আরো টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আপত্তি জানালে নতুন সদস্যদের কাছ থেকে আরও ২,৫০,০০০ (আড়াই লক্ষ) টাকা করে নেওয়া হয়। তার মধ্যে নতুন সদস্য ২৮ জন আড়াই লক্ষ টাকা বিপ্লব সাহা রামু’র কাছে দেন। সেই রামু ২৮ জনের ৭০,০০০০০ (সত্তর লক্ষ) টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যান। বর্তমানে ক্লাবের নতুন সদস্যের সেই সত্তর লক্ষ টাকা রামুর কাছে আছে বলেন জানান। কিন্তু বর্তমানের এই এজিএম এ যাবতিয় হিসাব উঠে না আসলে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করে সদস্যরা। সকলেই নানা নীতিবাচক মন্তব্য শুরু করেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি এম. সোলাইমান যুগের চিন্তাকে বলেন, দীর্ঘ বছর পর এবার অনেকটাই সুন্দর এজিএম (বার্ষিক সভা) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকল সদস্যবৃন্দ নিজেরে মনেরভাব আমাদের সঙ্গে প্রকাশ করেন। আমরা ও মন দিয়ে তাদের সকল দাবী ও কথা শুনে আগামীতে একটি সুন্দর ক্লাব গড়ার প্রতিশ্রুতি জ্ঞাপন করি। তিনি বলেন, আমরা কিন্ত ব্যাপক তাণ্ডবের পরে ও খুবই কষ্টে এবার গত ৩ মাসে ৫৩ লাখ টাকা প্রফিট করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে আমাদের বিল্ডিংসহ ক্লাবের নানা সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে শীগ্রই আমরা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে নারায়ণগঞ্জের মডেল হিসেবে সকল সদস্যবৃন্দ ও নারায়ণগঞ্জবাসীকে উপহার দিতে পারবো বলে আশা রাখছি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন