Logo
Logo
×

নগর জুড়ে

গডফাদার মুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই : এড.টিপু

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

গডফাদার মুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই : এড.টিপু

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু

মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, “আমি প্রথমে এককথায় প্রকাশ করতে যাই যে, আমি সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, দখলদারিমুক্ত, জাতভেদমুক্ত, গ্যাস বিদ্যুৎ চুরিমুক্ত  এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে যেই সন্ত্রাস ও শিক্ষকদের ওপর যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি তা সব মুক্ত একটি নারায়ণগঞ্জ চাই। কারণ আজকে যে উদ্দ্যোগ বা দায়িত্ব নেয়া হয়েছে, তা বললেই হবে না শুধু। আমাদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মাঠে থাকতে হবে এবং যানজট ও হকার মুক্ত করতে মাঠে থাকতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা করি না। আমরা শুধু বৈঠকে কথা না বলে, যেখানে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারি সেখানেই আমরা দাঁড়াবো। গ্যাস চুরি, বিদ্যুৎ চুরি, সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া দেখলে আমরা দাঁড়াবো। এখানে একাত্তর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বহু গডফাদারের জন্ম হয়েছে। একাত্তর থেকে পঁচাত্তর, আঁশি থেকে নব্বই, ছিয়ানব্বই থেকে ২০০১-এ একটি মাত্র রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যখন এসেছে, বারবার গডফাদারের সৃষ্টি করেছে। এখানে শুধু নারায়ণগঞ্জের সাবেক গডফাদার দায়ী না। আওয়ামী লীগের যেই খুনী হাসিনা, উনি ও একজন গডফাদার। উনি ওনার দলে গডফাদার সৃষ্টি করতে ভালোবাসেন। কিন্তু বিএনপির আমলে যখনই গডফাদারের সৃষ্টি হয়েছে, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া তা প্রশ্রয় দেয় নি। ক্রসফায়ারে তাদের শেষ করে দিয়েছেন। আশা করি বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসলে সেই কাজটিই করবে।” গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনের ৭ম তলায় ‘ আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমার নারায়ণগঞ্জ’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা শব্দটা অনেক সম্মানিত ও পবিত্র। কিন্তু এই মুক্তিযোদ্ধা নামে অনেক অনৈতিক কার্যকলাপ হয়। এই গডফাদারদের তো আরো গডফাদার আছে। যখনই আওয়ামী লীগ বা বিএনপি ক্ষমতায় আসুক না কেনো, মুক্তিযোদ্ধা ট্যাগ লাগিয়ে গডফাদারদের আশেপাশে থাকতে চান। উনারা সেই গডফাদারদেরও বড় গডফাদার। সেই গডফাদার মুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই।”



তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি যদি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারি, গ্যাস চুরি, বিদ্যুৎ চুরি, সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দেই বা আমি যদি কোনো গডফাদার সৃষ্টি করি, আপনারা আমার বিরুদ্ধে ও লিখবেন। বিগত ১৬ বছর আপনারা স্বাধীন না থাকলেও বর্তমানে আপনারা স্বাধীন।



তিনি আরো বলেন, “আমরা বিভেদমুক্ত ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জ চাই। গডফাদার থেকে মুক্তি চাই এবং তাদেও প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামি। তা না হলে গোল টেবিল বৈঠখ করে কোন লাভ হবে না। শুধু কালকে জাতীয় ও লোকাল পত্রিকায় ছবি আসবে মানুষ বাহাবা দিবে এটাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে। আসুন তা না হয়ে যে কোন গডফাদারের বিরুদ্ধে আমরা মাঠে নামি আর সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রহিতহ করি।



তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা গ্যাস চুরি করে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করছে। বিদ্যুৎ চুরি করে বিদ্যুৎ এর সমস্যা সৃষ্টি করছে। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি দখল করে যারা ব্যবসা করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। শুধু মিষ্টি মিষ্টি, মধুর কথা বললাম আর বাসায় শুয়ে থাকলাম তা দিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলমুক্ত নারায়ণগঞ্জ গড়ে উঠবে না।



তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ বলতে চাই, আমার দলের কোন নেতা যদি নিজেকে গডফাদার হতে চায় তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে মাঠে নামবো। কিছুদিন পূর্বে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আমি হত্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কিন্তু তারপরে ও সত্য কথা ছাড়িনি, কারণ আমি শুধু আল্লাহকে ভয় পাই কোন গডফাদারকে নয়। আর শুধু সেই ওসমানী গডফাদারদের মুক্ত হলে হবে না। ওই আওয়ামী লীগের আমলে শুধু ওসমানরা সন্ত্রাসী করেছে আর দক্ষিণপাড়ার যারা সিটি কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রণ করেছেন তারা কেন সত্য কথা বলেন নাই। তারা কেন এসপি-ডিসিকে ধমক দেন নাই যে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা নেওয়া যাবে না। অতএব এক পরিবারকে দোষারোপ করলে হবে না। নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসের জন্য দলমত নির্বিশেষে আমরা অনেকে দায়ী। ওসমান পরিবার গডফাদার মুক্ত হয়েছে আরো অনেকটি পরিবার রয়েছে তাদের মুক্ত নারায়ণগঞ্জ চাই।



গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের নানাবিধ সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি প্লামি ফ্যাশনস এর এমডি ফজলুল হক, জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জের আমীর মাওলানা আব্দুল জাব্বার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, মানবাধিকারকর্মী ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এড.মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিকী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এড.আওলাদ হোসেন,   বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন প্রমুখ। গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন