বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহম্মেদ বলেছেন, কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই এটা বলতে হলে আগে জানতে হবে নারায়ণগঞ্জের মানুষ কেমন আছে। গত ৫ আগষ্টের পূর্বে নারায়ণগঞ্জের মানুষের অবস্থা ছিলো কখণ জানি নিশ^াস বন্ধ হয়ে মারা যায় তেমন ছিলো। পরবর্তীতে ৫ আগষ্টের পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গণঅভুন্থানে শুধু নারায়ণগঞ্জের নয় সারা দেশের মানুষ নিশ^াস ফেলার সুযোগ পেয়েছে। দেশটাকে অন্ধকার থেকে কিছুটা আলোতে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এখানো আলো পুরোপুরি ছড়িয়ে পরেনি।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে এখনো কোন উন্নতি ফিরে আসেনি। সেই আগের মতোই যানজট, ফুটপাত, চাঁদাবাজি, আইনের শাসন, সন্ত্রাসী এখনো সব কিছু নির্মূল হয়ে যায়নি। আমরা যদি এই সব কিছু থেকে মুক্ত হয়ে সুন্দর নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই, তাহলে আগে আমাদের ভালো হতে হবে। আমরা নিজেরা ভালো না হয়ে ভালো নারায়ণগঞ্জ চাইবো এটা অবাস্তব। আমরা নিজেরা আগে যেমন ঘুষ দিতে অভ্যস্ত হয়ে ছিলাম, এখনো ঘুষ দিয়েই চলি। নারায়ণগঞ্জে যে ভ্যাট অফিস রয়েছে সেটা ঘুষের একটি বড় দালান। ব্যবসা যারা করেন তাদের প্রটাকশনে যে ভ্যাট ধার্য করা হয়েছে সে পরিমান ভ্যাট দিলে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যাবে না।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনের ৭ম তলায় ‘ আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমার নারায়ণগঞ্জ’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

তিনি আরো বলেন, বলে তারা আগে সেখানে গিয়ে ঘুষ দেন পরে ভ্যাট দেন। তা ছাড়া আমি কিছু জায়গায় দেখলাম যে তারা চেক বিতরণ করছেন ঘুষের বিনিময়ে। আর সেখানে চেক বিতরণে বলছেন আপনারা কোন ঘুষ দিয়েছেন যে পায় সে বলে না। আমি পরে একজনকে জিজ্ঞেস করলাম ঘুষ ছাড়া তো এই চেক আপনার পর্যন্ত পৌঁছাতো না পরে চুপ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী যাই বলেন না কেন আমরা নিজেরা ভালো না হলে কোন কিছু থেকে নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর করা যাবে না। শুধু মুখ দিয়ে সারাজীবন বলতেই পারবো কিন্তু বাস্তবায়ন করা হবে না।  আর বর্তমানে আমাদের নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের কি অবস্থা আপনারা সবাই জানেন। আমাদের এখানে কয়েকজন পীর রয়েছে একজন হলো ডিসি সাহেব, একজন এসপি সাহেব, সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক। উনারা হলো সারাদিনের মানুষের কথা শুনে এক কাপ চা ও একটি বিস্কুট দেয় পরে চলে আসে মানুষ পরে তারা তাদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরে। তাদেরও ভালো হতে হবে। তারা যদি ভালো হয়। তার পাশাপাশি আমরা ও ভালো হই তাহলে দেশ ও নারায়ণগঞ্জটা ভালো ও সুন্দর করা যাবে।

গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের নানাবিধ সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি প্লামি ফ্যাশনস এর এমডি ফজলুল হক, জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জের আমীর মাওলানা আব্দুল জাব্বার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, মানবাধিকারকর্মী ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এড.মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিকী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এড.আওলাদ হোসেন,   বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন প্রমুখ। গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।