আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন আহমেদ বলেছেন,  আমরা দেখেছি গাজীপুরও ৫টি থানা নিয়েই তৈরি গাজীপুর জেলাটি তৈরি হয়েছে। সেটা প্রথম শ্রেণি নয়, একটি বিশেষ শ্রেণির মর্যাদায় তারা সরকারী অনুদান পেয়ে থাকে। অথচ আমরা পাঁচটি থানা (উপজেলা) নিয়েও একটি দ্বিতীয় শ্রেণির শহর হিসেবে পড়ে আছি। আমাদের এই দূরাবস্থা কেন। আমাদের মেয়র ছিল, পাঁচটি সাংসদ ছিল, জেলা প্রশাসক আছেন, পুলিশ সুপার আছেন, অর্থাৎ সকল আভিভাবকই আছেন। কিন্তু আমরা যে টেবিলে ছিলাম সেই টেবিলেই পড়ে আছি। আমাদের এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কেন আমরা বি শ্রেণিতে যাবো, দ্বিতীয় শ্রেণির জেলাতে পড়ে থাকবো। গাজীপুর যদি বিশেষ শ্রেণির জেলাতে পরিণত হতে পারে আমরা কেন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে থাকবো। আমাদের সেটা ভেবে দেখতে হবে। এই যানজট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা দীর্ঘ ১২ বছর যাবত বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সিটি কর্পোরেশনসহ জেলা প্রশাসক বরাবর ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর দাবি পেশ করেছি। মীরজুমলা সড়ক দিয়ে সদরঘাটের মুড়ির টিন বাস এবং টেক্সিগুলো চলাচল করতো। সেই সড়কটি এখন তরকারির বাজার। এই বাজারটি তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের মাধ্যমে উৎখাত করা হলো। তারপর একজন নেত্রী তার আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে এই বাজারটি পরিচালিত হওয়ায় এই সড়ক পথটি ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। এই রাস্তা দিয়ে অনেক যানবাহন চলাচল করতে পারবে।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনের ৭ম তলায় ‘ আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ চাই?’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমার নারায়ণগঞ্জ’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

এই ফুটপাত এবং রাস্তা হকার মুক্ত করতে হবে। আমাদের চলাচল এবং গাড়ি চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হবে। মানুষ ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারে না আবার রাস্তায়ও হাটতে পারে না। এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কেমন নারায়ণগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ চাই ফুটপাত মুক্ত নিরাপদ সড়ক এমন নারায়ণগঞ্জ চাই। দূষণমুক্ত পরিবেশ, দূষণমুক্ত শীতলক্ষ্যা এবং বুড়িগঙ্গা আমরা চাই। এরজন্য যা করণীয় আমাদের করতে হবে। আমাদের শহরকে যানজটমুক্ত করতে হলে এই সড়কে আমাদের হবে না। আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের রেল স্টেশনটি যদি চাষাঢ়ায় স্থানান্তর করা যায় তাহলে রেল সড়কের জায়গাটিতে একটি বিকল্প সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে যাটজট অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। তাহলে চাষাঢ়া, গলাচিপা, নন্দীপাড়া, ১ নং রেলগেট ও ২ নং রেলগেট এর গেটগুলো উঠে যাবে। ফলে যানজট কমে যাবে। এছাড়াও চাষাঢ়া থেকে পাগলা পর্যন্ত উড়াল রেল সড়ক তৈরি করা যেতে পারে। তাহলে এর বাড়তি জায়গা দিয়ে বিকল্প রাস্তাও হতে পারে। তাহলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাপ অনেকটাই কমে যাবে। এছাড়াও হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দূর্গ সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হোক।

‘আমার নারায়ণগঞ্জ’ সংগঠনটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হয়েছেন মডেল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিটিজেন ব্যাংক পিএলসি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাসুদুজ্জামানের সভাপতিতেত্ব গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের নানাবিধ সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড.সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবু জাফর আহমেদ বাবুল, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি প্লামি ফ্যাশনস এর এমডি ফজলুল হক, জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জের আমীর মাওলানা আব্দুল জাব্বার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, মানবাধিকারকর্মী ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এড.মাহবুবুর রহমান মাসুম, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিকী, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরউদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এড.আওলাদ হোসেন,   বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন প্রমুখ। গোলটেবিল বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।