বিএনপির স্থায়ী কার্যালয় পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কার্পণ্যতা
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির পুরাতন কার্যালয়
বিগত আট বছর ধরেই রাজনৈতিক সচেতন এলাকা নারায়ণগঞ্জ বিএনপির স্থায়ী কার্যালয় নেই। আওয়ামীলীগ শাসন আমলে ডিআইটিতে অবস্থিত বিএনপির স্থায়ী কার্যালয়টি সিটি করপোরেশন কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলে নতুন ভাবে ভবন নির্মাণ করা হলে সেখানে পরবর্তীতে সিটি করপোরেশন থেকে বিএনপিকে তাদের কার্যালয় বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। তবে গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন জেলা,মহানগর,উপজেলা,থানায় বিএনপি অস্থায়ী কার্যালয় থেকে স্থায়ী কার্যালয়ে রূপান্তিত করলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি এই মোক্ষম সময়ের মধ্যে বিগত ৬মাসেও দলের স্থায়ী কার্যালয় নিয়ে কোন প্রকার চিন্তা চেতনা মন্তব্য মনোভাব প্রকাশ করেনি। উল্টো অস্থায়ী কার্যালয়ের উপর নির্ভর করেই সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার পরিকল্পনা জেলা ও মহানগর বিএনপির।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন বিএনপি সরকার গঠন করে দেশ পরিচালন করলেও সে সময়েও স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণে তৎকালীন বিএনপি নেতারা ছিল ডেম কেয়ার। তবে ২০০৯ সালে এড. তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃত্বে আসার পর তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা থেকে দোকান হিসেবে ইজারা নিয়ে ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় বিএনপির একটি স্থায়ী কার্যালয় করেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এই কার্যালয়েই নারায়ণগঞ্জ বিএনপির কার্যক্রম পরিচালিত হলেও ২০১৭ সালের ১০মার্চ ডিআইটি এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যালয়টি ভেঙে দেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। সেসময় কার্যালয় না ভাঙতে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। সে মামলায় নাসিক জয়ী হলেও পরবর্তীতে স্বস্থানে বিএনপির কার্যালয় ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিলেও ভবনটির দোকানগুলো ইতোমধ্যে বরাদ্দ হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত হন।
পরবর্তীতে বিএনপির দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের যাতাকলে দলীয় স্থায়ী কার্যালয়ের উপর নির্ভর না করে অস্থায়ী কার্যালয়ের উপর নির্ভর করে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন। তবে গত ৫ই আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির বিভিন্ন গ্রুপ উপগ্রুপ বিএনপির ব্যানারে কার্যালয় দাবি করলেও প্রতিটি কার্যালয়ই এখনও অস্থায়ী। এমনকি জেলা ও মহানগরের কোন নেতাই স্থায়ী কার্যালয় প্রতিস্থাপনে কোন প্রকার আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের অভিমত, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন গ্রুপ উপগ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিজেদের ইচ্ছেমত করার লক্ষ্যে একীভূত হয়ে দলীয় কার্যালয় প্রতিষ্ঠায় পরিকল্পনা করছে না উল্টো নিজেদের ইচ্ছেমত গ্রুপ উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালন করছেন। তবে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির বেশকয়েকজন নেতাদের সাথে যোগযোগ করলে বলেন, বর্তমানে আমরা দলীয় নেতৃত্বে নেই। যার কারণে দায়িত্ব নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না। তবে আমাদের উচিত নারায়ণগঞ্জের মত একটি রাজনৈতিক সচেতন প্রশিদ্ধ এলাকায় বিএনপির মত একটি সংগঠনের দলীয় স্থায়ী কার্যালয় থাকা উচিত।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, আমাদের বর্তমানে নতুন ভাবে জাতীয়তাবাদী দল নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে স্থায়ী কার্যালয় করার আপাতত পরিকল্পনা নেই। জাতীয় নির্বাচনের পর আমরা স্থায়ী কার্যালয়ন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করব। কারণ বর্তমানে যে পরিমাণে হাইব্রীড নেতাদের উপদ্রব বেড়েছে পার্টি অফিসকে ঘিরে ব্যাপক চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হতে পারেন।