নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টার লাগানোর হোতা বিএনপি সভাপতির ছেলে
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টার লাগানোর হোতা বিএনপি সভাপতির ছেলে
নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানোর ঘটনায় উতপ্ত নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। এই পোস্টারকে অনেকেই বলছে হুঙ্কার আবার অনেকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। ইতিমধ্যে পোস্টারিংয়ের ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চলক্যর তথ্য। যা নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে নেমে এসেছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। গতকাল শহরে ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানোকারীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। যেখানে পোস্টার সাঁটানোকারীকে চিহ্নিত করে বক্তব্যে রাখেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা। সেখানে ছাত্রদল নেতারা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রহমান রিয়াদের নির্দেশনায় তার চাচাতো ভাই দানিয়াল হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছাত্রলীগ নেতা অনিক প্রধানকে চিহ্নিত করেন এবং তাকে সহ তার সাথে থাকা পোস্টারিংয়ে সহযোগীতা করা সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করতে প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সাবেক নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেতা অনিক প্রধানের বাবা জমিস প্রধান এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। তা ছাড়া অনিক প্রধানের চাচা গেসু মহৎজীবী দল নেতা, আরেক চাচা সাইফুল ইসলাম প্রধান এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা, চাচাতো ভাই জিকু প্রধান যুবদল নেতা। কিন্তু বিগত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদের শেল্টারে অনিক ব্যাপক অপকর্ম করেছে মাসদাইর জুড়ে তা ছাড়া তার বাবা জসিম প্রধান বাসায় জুয়ার আসরসহ পুরো প্রধান পরিবার বিভিন্ন অপকর্মের সাথে লিপ্ত ছিলেন। এদিকে প্রধান পরিবারকে মাসদাইরবাসী ডাকাত পরিবার হিসেবে ও আখ্যা দিয়েছেন যার কারণ হলো এই দুস্কৃতিকারী অনিক প্রধানের চাচা ছিলেন দুর্ধর্ষ ডাকাত। যিনি সকলের কাছে আশা ডাকাত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে এই প্রধান পরিবারের দূর সম্পর্কের আত্মীয় এক প্রভাবশালী যুবদল নেতার শেল্টারে পট পরিবর্তনের পর ও ভোল পাল্টিয়ে পুরো প্রধান পরিবার বিএনপি সেঁজে গেছেন। তা ছাড়া বর্তমানে মাসদাইরের এই পল্টিবাজ প্রধান পরিবারের সদস্যরা বিগত দিনের মতোই এখনো
নানাভাবে সুবিধা ভোগ করছেন। শাসনগাঁও বিসিকি, মাদাইরের বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে ওয়েস্টিজ মালামাল, ঝুট নামলে ও লিষ্ট অনুযায়ী ভাগ পায় এই অনিক প্রধানসহ প্রধান পরিবারের প্রায় বেশ কয়েকজন। যারা বিগত দিনে রিয়াদের উপরে ভর করে দাপট দেখাতেন আর বর্তমানে আরেক বিএনপি নেতার উপর ভর করে দাপটে দেদারসে চলছেন এই প্রধান পরিবার। বর্তমানে সকলেই কথা তুলছে কার ইন্দনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থান ও সরকারি দপ্তরের দেয়ালে শামীম ওসমান ও তার ছেলে অয়ন ওসমানের নামে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পোস্টার সাঁটানোর সাহস পেয়েছেন এই অনিক প্রধান। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে তার কাজ থেকে তাকে কোন কোন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল নেতাকর্মী সহযোগীতা করেছেন তা প্রকাশ্যে আনা হোক।
আরো জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের নির্দেশনায় এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইর ৬,৭, ৮ নং ওয়ার্ডবাসীকে জিম্মি করে মাদক, জুয়া, ছিনতাইয়ের স্পট তৈরি করেছিলেন অনিক প্রধান। একই সাথে তার নানা ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জসিম প্রধানের শশুর পুলিশের সোর্স রমিজ উদ্দিন রমু ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ ও অনিকে শেল্টারে মাসদাইরের বিশাল মাদকের স্পট তৈরি করেছেন। তা ছাড়া জসিম প্রধান রিয়াদের শেল্টারে বিচার-শালিস বাণিজ্যে ও বাসয়া জুয়ার আসর বসাতেন। তা ছাড়া বিসিক, মাসদাইরের আশপাশের বিভিন্ন কারখানা,গার্মেন্টস থেকে রিয়াদের কথায় মাসিক মাসোয়ারাসহ ওয়েস্টিজ, ঝুট নামলেই টাকা পেতেন এই প্রধান পরিবার। যা বর্তমানে সেই দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। এ দিকে জানা গেছে, দুস্কৃতিকারী অনিক প্রধান মাসদাইর জুড়ে ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কারণ অনিক সকলেই বলতেন আমরা ওসমান পরিবারের লোক। আর আমার ভাই রিয়াদ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি আরেক ভাই রাফেল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলা বলে ছাত্রলীগ কি করবে। নারায়ণগঞ্জে কিভাবে ছাত্রলীগ পরিচালনা হবে তা আমাদের এই প্রধান বাড়ি থেকেই বিবেচনা হয়।
কদম রসূল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান রিফাত বলেন, ডিসি,এসপি কে বলতে চাই আপনারা দুষ্কৃতিকারীকে শনাক্ত করতে পারেননি। আমরা তা করেছি তিনি ছাত্রলীগ নেতা অনিক প্রধান। এ ছাড়া এদের সাথে যারা জড়িতদের এই অনিককে গ্রেফতার করে তার মাধ্যমে শনাক্ত করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে আপনাদের অফিস ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন ছাত্রদল নেতা রিফাত।
পরবর্তীতে সাংবাদিকরা তার কাছে অনিকের ডিটেলস জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী রিয়াদের চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতা অনিক প্রধানই রাতের অন্ধকারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টারিং করেছে আর এটার নির্দেশদাতা হলেন তার চাচাতো ভাই রিয়াদ।