মাসদাইরের বিষফোঁড়া প্রধান পরিবার
নারায়ণগঞ্জের সন্ত্রাসী গডফাদার খ্যাত শামীম ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত মাসদাইরের প্রধান পরিবার।
বিগত দিনে শামীম ওসমান ও ছেলে অয়ন ওসমানের নির্দেশনায় এনায়েতনগরের আওতাধীন বিসিক শাসনগাঁও, মাসদাইর বাড়ভৌগ, খানকার মোড়, বেকারীর মোড়, ছোট কবস্থান, বড় কবরস্থানসহ এর আশপাশের এলাকাগুলোর আওতাধীন সকল প্রকারের মাদকের সিন্ডিকেট, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দলদারিত্ব, জুয়ার আসর, ডিস ব্যবসা, ইন্টার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন মালিক সমিতি, বিভিন্ন্ গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীর ঝুট নিয়ন্ত্রণ, বিচার শালিশ সবই পরিচালনায় ছিলেন প্রধান পরিবারের সকল সদস্যরা। আর সকল অপকর্মের নেতৃত্বে দিতেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ প্রধান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল প্রধান। এর বাহিরে তাদের সকল চাচা-ভাতিজাসহ সকল আত্মীয় এর মাধ্যমে আত্মীয়করণে জিম্মি ছিলো মাসদাইরবাসী।
তা ছাড়া এই পরিবারের বিগত দিনের ঐতিহ্যে হিসেবে সকলেই আশা প্রধান ডাকাতের পরিবার হিসেবে চিনে থাকেন। এদিকে এই পরিবারের সকল সদস্যই প্রায় হত্যা মামলাসহ মাদকের ডিলার হিসেবে মামলার আসামী রয়েছেন। সর্বশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৮, ১৯ জুলাই রিয়াদ-রাফেলের নেতৃত্বে মাসদাইর থেকে প্রধান পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমানের নেতৃত্বে চাপাতি, রামদা, অবৈধ অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার উপরে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর সারাদেশে অত্যাচারকারীদের বাড়ি-ঘরে, ব্যবসা বানিজ্যে হামলা পড়লে ও মাসদাইরবাসীকে অত্যাচার করা এই প্রধান পরিবারের সকলের বাড়ি-ঘর এখনো অক্ষত রয়েছে।
শুধু হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও আশরাফুল ইসলাম রাফেল মালেশিয়ায় পালিয়ে গেলে ও তাদের পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যরা মাসদাইর দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আবার অনেকেই ভোল পাল্টে বিএনপির পদ-পদবী নিয়ে বিএনপি সেঁজে যাচ্ছেন। তা ছাড়া বর্তমানে বিসিক, মাসদাইরের বিভিন্ন গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরীর ঝুট সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করছেন। আবার অনেকে মাদকের আড্ডা, জুয়ার আড্ডায় তৈরি করে রেখেছেন। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কয়েক গার্মেন্টসের ওয়েস্টিজ, ঝুট নামলে তাদের নাম ও বেকারীর মোড়ের টাকা ভাগের লিষ্টে পাওয়া যায়। বর্তমানে এই পরিবারের উপরে ক্ষুদ্ধ রয়েছে বিএনপিসহ আওয়ামী-লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। এদিকে গত কয়েকদিন পূর্বে নারায়ণগঞ্জে ঘটে যাওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টারীং এর সাথে ও এই পরিবারের সদস্য অনিক প্রধান পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যাকে ঘিরে বর্তমানে আলোচনায় এই ওসমান দোসরের ঘনিষ্ঠ প্রধান পরিবারের মাথায় কোন বিএনপি নেতার হাত তা বর্তমানে টক অব দ্যা টাউন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকলের সন্দেহের তীর রয়েছে তাদের এক দূর সম্পর্কের এক বিএনপি এবং যুবদল নেতার দিকে।
সূত্র জানিয়েছে, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল প্রধানের নির্দেশনায় দীর্ঘদিন বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন প্রধান পরিবারের সকল সদস্যরা। বিগত দিনে এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাসদাইরের বিভিন্ন এলাকাবাসীকে জিম্মি করে মাদক, জুয়া, ছিনতাইয়ের স্পট তৈরি করেছিলেন উভয়ের চাচাতো ভাই অনিক প্রধান যার বাবা এনায়েতনগর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জসিম প্রধান।
তা ছাড়া তার সাথে ছিলেন অনিক প্রধানের চাচাতো ভাই সুমন প্রধান। এদিকে বর্তমানে ভোলপাল্টিয়ে বিএনপি নেতা বনে যাচ্ছেন সেই প্রধান পরিবারের সদস্যরা। যারা বিগত দিনে ওসমান পরিবারের গুনগান গাইতেন তারাই বর্তমানে বিএনপির ত্যাগী নেতা বনে যাচ্ছেন। রিয়াদের চাচা গেসু বর্তমানে মহৎজীবী দল নেতা, আরেক চাচা সাইফুল ইসলাম প্রধান এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা, চাচাতো ভাই জিকু প্রধান যুবদল নেতা বনে গেছেন। তা ছাড়া সাইফুল ইসলাম প্রধান, জিকু প্রধান ও গেসু প্রধানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন রিয়াদ-রাফেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিসিকের কয়েকটি গার্মেন্টস-ফ্যাক্টরী। এছাড়া রিয়াদের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ প্রধান নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করছেন।
এদিকে বিগত দিনে ছাত্রলীগের রিয়াদের অস্ত্র ক্যারী করতেন রিয়াদের নামে চাঁদাবাজি করতেন তার আরেক ভাতিজা সিয়াম প্রধান বর্তমানে ছাত্রদল নেতা হিসেবে পরিচিতি পেতে চাইছেন তাদের সেই দূর সম্পর্কের চাচাদের মাধ্যমে। এদিকে দুর্ধর্ষ রিয়াদের ভাতিজা আনন্দ প্রধান ও অমিত প্রধান বর্তমানে ছাত্রদলের মিছিল মিটিংয়ে আসা শুরু করেছে। তা ছাড়া সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা রাফেলের বড় ভাই রাসেল প্রধান বর্তমানে বিগত দিনের মতোই দেদারসে জিম্মি করা ইন্টারনেট ব্যবসা অবহৃত রেখেছেন। বর্তমানে একে একে ভোল পাল্টাতে শুরু করেছে দুর্ধর্ষ প্রধান পরিবার। এদিকে তারেক রহমানের নির্দেশনাকে অমান্য করে অন্য দলের সদস্যদের বিএনপিতে ঠাঁই দিচ্ছেন কিছু কতিপয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। যা নিয়ে বর্তমানে মাসদাইর জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে ত্যাগী বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবী তাদের ঠাঁই দেওয়া সেই নেতাকে চিহ্নিত করে দ্রুত বহিস্কার না করলে আগামীতে বিএনপি মাসদাইর তথা ফতুল্লাবাসীর জনগণের মন থেকে উঠে যাবে।