মাহে রমজানেও খানপুর-হাজীগঞ্জে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার

লিমন দেওয়ান
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

মাহে রমজানেও খানপুর-হাজীগঞ্জে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
পানির অপর নাম জীবন হলেও পান করা পানি যদি হয় দূষিত তাহলে পানি মানুষের নানান রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। পানি মানুষের জীবনের এমন একটি উপাদান যা ছাড়া মানুষের বেচেঁ থাকা অনেক কঠিন বেপার। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন যায়গায় যে পরিমাণের পানির চাহিদা থাকে, তার পুরোটাই সরবরাহ করে থাকে ওয়াসা। ভূগর্ভস্থ বা নদীর পানি দূষনমুক্তর মাধ্যমে ওয়াসার পানি সরবরাহ করা হয়। তবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানি দূষন মুক্ত করার পরেও সম্পূর্ন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যায় না। কারণ বিভিন্ন জায়গায় মানুষের বাসাবাড়িতে যে পাইপ ল্নাইর মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হয় তা লিকেজ বা পুরোনো হয়ে যাওয়া পাইপের কারণে পানি পুনোরায় দুষিত হয়ে পরে। যার ফলে এই পানি পানে বিভিন্ন পানি বাহিত রোগ হবার সম্ভাবনা থাকে। একে তো বিশুদ্ধ পানির অভাব তার উপর কিছু কিছু জায়গায় রয়েছে পানির তীব্র সংকট।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের ১১ ও ১২নং ওয়ার্ড খানপুর ও হাজীগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় খাবার পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ময়লা পানি বাধ্য হয়ে গিলতে হচ্ছে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষের। ফলে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সংকট চলে আসছে। বাধ্য হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী পানি বাসা বাড়িতে ব্যবহার করার কারনে পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নিয়মিত বিল পরিশোধ করার পরও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না তারা। অপরদিকে দীর্ঘ দিন ধরে সরবরাহ হওয়া ময়লা পানি নিয়ে একের পর এক অভিযোগ রয়েছে তা ছাড়া বর্তমানে পবিত্র রমজান মাসে সেই ময়লা পানি ও পায়না এলাকবাসী পেলে ও দুইদনি তিনদিন পর পর। তা ছাড়া সিটি কর্পোরেশন থেকে খাবার পানি সরবারাহ একেবারে নাই বললেই চলে। যার ফলে প্রতিবেশী যাদের ডিপ-কল রয়েছে সেখান থেকে অনেকে মাসিক টাকা দিয়ে আবার অনেকে চোখের লজ্জা ভেঙে চেয়ে পানি পান করছেন। তা ছাড়া হাজীগঞ্জ মসজিদে ও মডেল গ্রুপের স্থাপিত একটি ডিপ-কল থেকে ও পানি পান করছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ইতিপূর্বে পানি নিয়ে এলাকবাসী বিভিন্ন তোলজোড় করলে ও এর কোন সুরাহ পায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড ও আশে^ পাশে^র বেশ কয়েকটি এলাকায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরশন থেকে সরবরাহ করা পানি ময়লা আবর্জনা এবং কালো কুচকুচে নোংরা। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে রয়েছেন বাসীন্দারা। পানির বিল ও টেক্স নিয়মিত পরিশোধ করেও সেবা বঞ্চিত অত্র এলাকার মানুষ। এর আগে সাবেক মেয়র আইভী ক্ষমতার দাপটে ওয়াসার কাছ থেকে জোর পূর্বক পানি সরবরাহের দায়ীত্ব বুঝে নেন। এরপর থেকেই চরম পানি সংকটে পড়েন এখানকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। এই রমজান মাসেও পানির জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যক্তিগত ভাবে পানি বসানোদের বাড়িতে ধরনা দেন তারা। কলস, বালতি ও বোতল নিয়ে লম্বা লাইন দিয়ে দাড়িয়ে পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয় শিশু, নারী ও বয়স্ক পুরুষদের। শুধু তাই নয় পানি সংকট সহ যত্রতত্র ময়লার ভাগার ও মশা-মাছির উপদ্রবের শিকার নাসিকবাসী। দ্রুত পানি সংকট সহ সকল সমস্যার সমাধান চান স্থানয়ী বাসিন্দারা। নাগরিক সকল দুর্ভোগ সমাধান সহ আন্তরিক হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের র্কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের।
স্থানীয় নারী পুরুষেরা জানান, রোজার মাসেও পানি পাচ্ছি না। দুর থেকে ব্যক্তিগত উদ্যেগে কল বসানো লোকের বাসা থেকে পানি নিতে হয়। দ্রুত পানি সরবরাহ সহ সকল সমস্যার সমাধান চান স্থানীয়রা।
সচেতন মহল জানান, সাবেক মেয়র আইভীর কাছে একাধীকবার জানানোর পরও কোনো সমাধান করেনি বরং গালিগালাজ করেছে মেয়র। আর এখন তো মেয়র নাই। আবার সিটি কর্পোরশেনের ও কোন পানির লোক পাই না।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ওয়াকার্স পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান টিপু বলেন, নাসিক ১১ নং ওয়ার্ডের হাজীগঞ্জ, তল্লা, এসিআই পানির কল এলাকায় যে পানিটি আসে যেটা একদম ময়লা পানি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় পানি দিয়ে ময়লা-আবর্জনা, পোকামাকড় ও বেড়িয়ে আসে। আর পানির এমন অবস্থা আমরা গোসল-অযু কিছুই করতে পারি না। এছাড়া বিগত দিনে ওয়াসার লোকেরা কিছু কিছু সংস্কারের চেষ্টা করতো যাতে ঘিরে কিছূদিন ভালো চলতো আবার খারাপ হয়ে যেত। আর এর মূল কারণ হলো সকল পানির পাইপই ড্রেনের ভিতর দিয়ে আসছে। আবার অনেকে সময় শীতলক্ষ্যার পানি ও ছাড়া হয়। আমরা এই পানির সমস্যা থেকে নিস্তার চাই।