Logo
Logo
×

স্বদেশ

সচিবালয়-পুলিশসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে দোসরদের সরানোর আল্টিমেটাম

Icon

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

সচিবালয়-পুলিশসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে দোসরদের সরানোর আল্টিমেটাম

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শীর্ষক সমাবেশের একাংশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ হতে সচিবালয় ও পুলিশ বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের সরানোর আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকালে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ শীর্ষক সমাবেশে বক্তারা এই আল্টিমেটাম দেন। এসব জায়গাগুলোতে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা ঘাপটি মেরে আছে বলে দাবি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। সমাবেশে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন নেতারা।



সমাবেশে বক্তারা বলেন, হাসিনার দোসররা এখনো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলোতে বসে পরিকল্পিতভাবে আমাদের অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে, অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা চুপচাপ শুধু দেখেই যাচ্ছেন। দেশের পরিস্থিতি এভাবে চলতে পারে না। আমরা অবিলম্বে সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলোকে হাসিনার দোসরমুক্ত দেখতে চাই।


এ সমাবেশ থেকেই ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপের মধ্যে গতকাল সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে শিগগিরই ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজকের এ কর্মসূচির নাম দেয় ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা)। এ কর্মসূচি উপলক্ষে সারা দেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা–কর্মীরা আজ শহীদ মিনারে সমবেত হন।



এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলোতে এখনো খুনির দোসররা ঘাপটি মেরে আছে। সচিবালয় হোক বা যেকোনো জায়গা থেকে ষড়যন্ত্র করলে আমরা তাদের উৎখাত করে ছাড়বো। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে এখনো কীভাবে আমাদের ভাইদের ওপর হামলা হয়? যদি আমাদের নিরাপত্তা না দিতে পারেন, তাহলে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারগুলোতে আপনাদের আর বসিয়ে রাখবো না। আমরা দেখছি ছাত্রলীগ যুবলীগ এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। তারা আমাদের আহতদের দেখে মুচকি হাসে। আমরা যদি বিচার করতে না পারি, তাহলে শহীদের আত্মাকে আমাদের জবাব দেওয়ার কিছু থাকবে না। তিনি বলেন, আমরা দেখছি দেশের প্রতিটি জায়গায় পূর্বের মতোই সিন্ডিকেট রয়ে গেছে। এগুলো আমাদেরকে ভাঙতে হবে। কেন এখনো শুনবো একহাত থেকে আরেক হাতে সিন্ডিকেট স্থানান্তর হচ্ছে। কেন সেই হাতগুলো ভেঙে দেওয়া হচ্ছে না?


এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিপক্ষে, মুজিববাদীদের বিপক্ষে, যারা এমন ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম করেছে, তাদের বিপক্ষে আমাদের এই লড়াই জারি থাকবে। এই ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা জেলায় জেলায়, পাড়া–মহল্লায় এই ঘোষণাপত্রের পক্ষে মানুষের কাছে যাবেন, মানুষের কথা শুনবেন। তারা কী বলতে চায়, সেই কথাগুলো উঠিয়ে নিয়ে আসবেন। আপনাদের সঙ্গে আবার দেখা হবে ১৫ জানুয়ারিতে আমাদের ঘোষণাপত্র নিয়ে।’



এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সচিবালয়ের ভেতরে দালালগুলো ঘাপটি মেরে আছে। পুলিশ প্রশাসনের অসংখ্য দালাল ঘাপটি মেরে আছে। এই জায়গাগুলো দ্রুত দালালমুক্ত করুন। হাসিনা সরকারের পতনের ৫ মাস পার হয়েছে। কিন্তু এখনো জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আমরা দেখতে পাইনি। এই বিপ্লবের স্বীকৃতি আমরা চাই। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দ্রুততম সময়ে আমরা দেখতে চাই।



সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমাদের আগামীর কাজ হবে শেখ হাসিনাকে বাংলার মাটিতে এনে বিচার নিশ্চিত করা। বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।’ তিনি বলেন, আগামীতে যে ঘোষণাপত্র আসবে, সেখানে প্রত্যেক শহীদের রক্তের ফোটার কথা উল্লেখ থাকতে হবে। যদি আমরা সে কথাগুলো না পাই, তাহলে বাংলার চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা, বাঘিনীরা তা মেনে নেবে না। ঘোষণাপত্রে ৫৩ বছরে যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়েছে, তা সংস্কারের ইঙ্গিত থাকতে হবে।নতুন বাংলাদেশে কোনো শহীদ বা আহতের ওপর চোখ রাঙানো চলবে না। টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি হবে না। আপনারা অতি দ্রুত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপে সক্রিয় হোন। সক্রিয় না হলে চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবে বলে সতর্ক করে দেন তিনি।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন