শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে : চিফ প্রসিকিউটর
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কথা বলছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হেট স্পিচ বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাই কেউ তা প্রচার করলে, প্রয়োজনে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। বুধবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা দেখছি শেখ হাসিনা ভারতে বসে হেট স্পিচ বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বিচার কাজকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তিনি এসব করছেন। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে ট্রাইব্যুনালের আদেশ রয়েছে শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার না করার। এর পরও দেখছি কিছু গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার করছে। আমরা অনুরোধ করব তার হেট স্পিচ প্রচার না করার। ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রভাবিত করে বা বাধাগ্রস্ত করে শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য যদি প্রচার অব্যাহত রাখা হয় তাহলে আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবব’, বলেন তিনি।
আদালত এ বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আইনের নিষেধাজ্ঞা তো আছেই। তবুও কেউ তা প্রচার করলে যদি তা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে তাহলে ঘটনাগুলো আমলে নিয়ে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিবো।’ পাশাপাশি, হাসিনার যে সমস্ত ঘৃণাসূচক ও বিদ্বেষমূলক বার্তা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, সেগুলোকে প্রচারের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা। এ সমস্ত হুমকি দেয়ার কারণে সাক্ষী ভয় পেতে পারেন বা সাক্ষ্য দেয়ার আগ্রহ হারাতে পারেন, যা সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার জন্য মোটেও কাম্য নয়।’
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার শিকার ও আহত ব্যক্তিদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে ও ন্যায় বিচার পাবার প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত রাখার জন্য এ সময় তিনি গণমাধ্যম ও দেশের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।
এর আগে, গত ৫ ডিসেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘৃণা, বিদ্বেষ ও উসকানিমূলক (হেট স্পিচ) সব ধরনের (লিখিত, অডিও-ভিডিও) বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার-প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যমসহ সব ধরনের মাধ্যম থেকে তার প্রচার-প্রকাশিত বক্তব্য-বিবৃতি অপসারণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) তাৎক্ষণিকভাবে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন আদালত। প্রসিকিউশনের আবেদনে চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।